বাংলাদেশে করোনা : রোগী ৫,৪১৬ মৃত্যু ১৪৫
বাংলাদেশে করোনা : রোগী ৫,৪১৬ মৃত্যু ১৪৫ - সংগৃহীত
বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্ত রোগী ৫ হাজার ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন ৪১৮ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। বর্তমানে আক্রান্ত ৫ হাজার ৪১৬ জন। গত ২৪ ঘন্টায় ৯ জন করোনামুক্ত হয়েছেন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছেন ১২২ জন।
রোববার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন হেলথ বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান।
গতকালের চেয়ে আজ আক্রান্ত ১০৯ জন বেশি। গতকাল আক্রান্ত হয়েছিলেন ৩০৯ জন। এ ছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় দেশে আরও ৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪৫ বলে তিনি জানান।
ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ৩ হাজার ৩৮০টি। গতকালের চেয়ে যা ৭ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ২৫টি পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৩ হাজার ৪৭৬টি। আগের দিন পরীক্ষা হয়েছিল ৩ হাজার ৩৩৭টি। গতকালের চেয়ে নমুনা পরীক্ষা ৪ শতাংশ বেশি। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৪৬ হাজার ৫৮৯টি।
তিনি জানান, নতুন করে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে ৩ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। ৪ জন রাজধানীর এবং ১ জন ঢাকার দোহারের বাসিন্দা। এদের মধ্যে ১০ বছরের কম বয়সী এক শিশুও রয়েছে। এ শিশুটি কিডনিজনিত সমস্যায় (নেফ্রোটিক সিনড্রোম) ভুগছিল। এরই মধ্যে তার করোনা পজিটিভ আসে। বাকিদের মধ্যে ষাটোর্ধ্ব ১ জন এবং পঞ্চাশোর্ধ্ব ৩ জন।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, ‘যারা গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন এরা হাসপাতালে ভর্তি থেকে সুস্থ হয়েছেন। বেশির ভাগ আক্রান্ত ব্যক্তি বাড়িতে অবস্থান করে সুস্থ হয়ে যান, সেই তথ্য আমরা এখানে দেই না।’
তিনি জানান, করোনা শনাক্তদের মধ্যে বেশিরভাগই স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত অর্থাৎ চিকিৎসক, নার্স, টেকনোলজিস্ট, স্বাস্থ্যকর্মী, পরিচ্ছন্নকর্মী, গাড়িচালক, ওয়ার্ডবয় ও আয়া। এখন পর্যন্ত একজন চিকিৎসক মারা গেছেন। এছাড়া শুধু চিকিৎসক নয়, বিভিন্ন সেবা সংস্থা যেমন পুলিশের অনেকেও সংক্রমিত হয়েছেন।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৭৫ জনকে, এখন পর্যন্ত মোট আইসোলেশনের সংখ্যা ১ হাজার ১৬৪ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৪৪ জন, এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৭০৯ জন।
এছাড়া কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড় পেয়েছেন ৩ হাজার ৯৬৩ জন, এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৯৭ হাজার ১৩২ জন। এখন পর্যন্ত মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ৭৯ হাজার ৮৯৯ জন।
ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, সারাদেশে ৬৪টি জেলা ও উপজেলায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য প্রস্তুত আছে ৬০১ টি প্রতিষ্ঠান। যেখানে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা প্রদান করা যাবে ৩০ হাজার ৬৩৫ জনকে।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘন্টায় কোনো ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) সংগ্রহ হয়েছে ১৭৮ হাজার ১২২টি। বিতরণ হয়েছে ২৭ হাজার ৮০৫টি। এ পর্যন্ত সংগ্রহ হয়েছে ১৫ লাখ ২৫ হাজার ৩২১টি। এ ছাড়া পরীক্ষার কিট ও নমুনা সংগ্রহের কিটের কোন স্বল্পতা নেই। পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুদ আছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী যথাসময়ে আমদানি ও সরবরাহ করা হচ্ছে।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, গত ২৪ ঘন্টায় হটলাইন নম্বরে ৭৭ হাজার ৯০১ জনকে এবং এ পর্যন্ত ৩৩ লাখ ৯১ হাজার ১১ জনকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এছাড়া মোবাইল ও ওয়েবসাইটে গত ২৪ ঘন্টায় ৩১ হাজার ৮৫৮ জন এবং এ পর্যন্ত ১৪ লাখ ৭৫ হাজার ৮২৮ জনকে স্বাস্থ্য পরামর্শ ও চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৫ হাজার ৪২৫ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। গত ২৪ ঘন্টায় প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ২৫ জন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২০২ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন।
ডা.নাসিমা সুলতানা জানান, দেশের বিমানবন্দর, স্থল, নৌ ও সমুদ্রবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৪১৪ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৬ লাখ ৭৪ হাজার ৯৪০ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকা, রমজানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, বেশি বেশি পানি ও তরল জাতীয় খাবার, ভিটামিন সি ও ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, টাটকা ফলমূল ও সবজি খাওয়াসহ শরীরকে ফিট রাখতে নিয়মিত হালকা ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়।
সূত্র : বাসস