দুধ না খেলে দেখা দিতে পারে যেসব সমস্যা
দুধ - সংগৃহীত
দুধকে বলা হয় আদর্শ পানীয়। মানুষের প্রয়োজনীয় সব উপাদান এতে রয়েছে। আর এনিয়ে গবেষণারও অন্ত নেই। বিশেষ কোনো সমস্যা না হলে দুধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন গবেষক ও বিজ্ঞানীরা।
মানবদেহের হাড় বিষয়ে গবেষণা করে এমন একটি ব্রিটিশ সংস্থা বলছে, তরুণ বয়সে যারা দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবার পরিহার করে তাদের জন্য ভবিষ্যতে বিপদ আছে।
জরিপে দেখা গেছে যাদের বয়স ২৫ বছরের কম তাদের মধ্যে পাঁচ ভাগের এক ভাগ তাদের খাদ্য তালিকা থেকে দুধ অথবা ।
এর ফলে অনেক তরুণ তাদের স্বাস্থ্যকে ঝুঁকির দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে সতর্ক করা হয়েছে।
সংস্থাটি বলছে কেউ যদি দুধ খেতে না চায় তাহলে দুধের পুষ্টিগুণ সম্পন্ন বিকল্প খাবার খাওয়া উচিত। দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবার যেমন পনির এবং দই ক্যালসিয়ামের একটি বড় উৎস যেটি শক্ত হাঁড় গঠনের জন্য বেশ প্রয়োজনীয়।
তবে তরুণরা খাদ্য তালিকা থেকে দুধ কেন বাদ দিচ্ছে তার পরিষ্কার কোন উত্তর পাওয়া যাচ্ছে না ।
মানবদেহের হাঁড় নিয়ে গবেষণাকারী সংস্থাটি বলছে, অনেক তরুণ তাদের খাদ্য তালিকার জন্য বিভিন্ন ধরনের ইন্টারনেট ব্লগ থেকে পাওয়া তথ্যের উপর নির্ভর করে।
ব্লগ থেকে নেয়া তথ্য অনেক সময় বেশ ভালো। তবে অনেকে তাদের খাদ্য তালিকা নিয়ে বেশি সতর্ক থাকেন। কোনটি খাবেন আর কোনটি খাবেন না সে বিষয়ে তারা অতিমাত্রায় সতর্ক থাকেন।
ব্রিটেনে খাদ্যের মান নিয়ে গবেষণা করে এমন একটি সংস্থা বলছে ১৬ থেকে ২৪ বছর বয়সী প্রায় অর্ধেক উত্তরদাতা জানিয়েছেন গরুর দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবার তাদের জন্য সহনীয় নয়।
গবেষণায় দেখা গেছে গরুর দুধ হচ্ছে ক্যালসিয়ামের সবচেয়ে ভালো উৎস।
একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির জন্য প্রতিদিন ৭০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন হয়। তবে ১১ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের জন্য প্রতিদিন এক হাজার মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম দরকার।
কিন্তু ব্রিটেনে এ বয়সীদের মধ্যে এক চতুর্থাংশ দিনে ৪০০ মিলিগ্রামের নিচে ক্যালসিয়াম গ্রহণ করে।
তরুণ বয়সে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি থাকলে তার প্রভাব পড়ে বৃদ্ধ বয়সে। বিশেষ করে ৫০ বছরের পর থেকে বেশ দ্রুত হাঁড় ক্ষয়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়।
তবে এ প্রবণতা নারীদের ক্ষেত্রে আরো বেশি তৈরি হয় বলে গবেষণা থেকে জানা যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন শরীরের ক্যালসিয়ামের চাহিদা যে শুধু দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবার থেকেই গ্রহণ করতে হবে বিষয়টি সে রকম নয়। অন্য উৎস থেকে ক্যালসিয়াম পাওয়া গেলেও সেটি শরীরের জন্য ভালো।
দুধ ও দুগ্ধজাত খাবারে থাকা ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস দাঁতের গঠন ও বিকাশে উপকারী। দুধে প্রচুর পরিমাণে থাকা আমিষ ‘ক্যাসিন’ দাঁতের এনামেলের উপর প্রতিরোধী পাতলা স্তর গড়ে তোলে। মুখের ভেতর দাঁত এসিডের সংস্পর্শে আসলে এটি তখন দাঁত থেকে ক্যালসিয়াম ও ফসফেটের ক্ষয় রোধ করে।
দন্তবিশেষজ্ঞরা বলেন যে, প্রতি বেলা আহারের মধ্যবর্তী সময়ে পানি বাদে দুধই হচ্ছে আরেকটি নিরাপদ পানীয়। কারণ দেখা গিয়েছে দুধ দাঁত ক্ষয়ের সবচে’ নাজুক অবস্থাতেও দাঁতের ক্ষয়সাধন করে না।
দুধ ও দুগ্ধজাত খাবারে থাকা ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও ম্যাগনেসিয়াম হাড়ের গঠন ও বিকাশে দরকারি। ছোটবেলা থেকে শুরু করে সারা জীবন দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণ হাড়কে করে মজবুত আর
রক্ষা করে ‘ওসটিওপোরোসিস’ নামের হাড়ক্ষয়কারী রোগ থেকে। যদি দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার প্রতিদিনের আহারে না থাকে, তবে ক্যালসিয়ামের অভাব দেখা দিতে পারে যা বিশেষ করে মহিলাদের আর বয়স্কদের চিন্তার বিষয়। ক্যালসিয়ামের অভাবের কারণে ‘ওসটিও আর্থাইটিস’ নামক হাড়ক্ষয়কারী রোগ হতে পারে।