যেসব খাবারে পুরুষের সন্তান জন্মদানে সক্ষমতা কমে
যেসব খাবারে পুরুষের সন্তান জন্মদানে সক্ষমতা কমে - সংগৃহীত
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা "হু"-এর প্রকাশ করা একটি রিপোর্ট বলছে বর্তমানে সারা বিশ্বে ইনফার্টিলিটিতে আক্রান্ত দম্পতির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০-৮০ মিলিয়ানে। এক্ষেত্রে আমাদের দেশের অবস্থাও যে খুব একটা আশাপ্রদ, এমন নয়। বেশ কিছু পরিসংখ্যান অনুযায়ী এদেশেও ক্রমশ চিত্রটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। আর সবথেকে ভয়ের বিষয় হচ্ছে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত কারণ ছাড়াও কিছু খাবারের কারণেও এমন সমস্যা আরও বেশি মাত্রায় বৃদ্ধি পাচ্ছে, আর এ সম্পর্কে প্রায় বেশির ভাগেরই কোনো ধরণা নেই। ফলে অজান্তেই মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে।
একাধিক সমীক্ষায় দেখা গেছে ২৫-৩৫ বছর বয়সিরা তাদের কর্মজীবনের কারণে বেশিরভাগ সময়ই বাড়ির বাইরে খেয়ে থাকেন। আর সেক্ষেত্রে জাঙ্কফুডই হয় তাদের প্রথম পছন্দ। ফলে যা হওয়ার তাই হয়! একদিক যেমন নানাবিধ জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়, তেমনি স্পার্ম কাউন্ট কমে যাওয়ার কারণে বাচ্চা হওয়ার ক্ষেত্রেও নানাবিধ সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়। একাধিক গবেষণার পর কিছু খাবারকে এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তাদের মতে এই সব খাবার নিয়মিত খেলে পুরুষদের শরীরে এমন কিছু নেতিবাচক পরিবর্তন হয় যে ধীরে ধীরে বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। তাই বাবা হওয়ার ইচ্ছা থাকলে এইসব খাবার থেকে দূর থাকাই বাঞ্জনীয়। এক্ষেত্রে যে যে খাবারগুলি এড়িয়ে চলতে হবে, সেগুলি হল...
১. ঠান্ডা পানীয় : বেশ কিছু গবেষণা একথা প্রমাণ করেছে যে নিয়মিত কোল্ড ড্রিঙ্ক পান করলে স্পার্ম কাউন্ট চোখে পরার মতো কমে যেতে থাকে। ফলে এক সময় গিয়ে বাবা হওয়ার ক্ষমতাটাই চলে যায়। তাই এবার থেকে তেষ্টার সময় গলা ভেজাতে কোল্ড ড্রিঙ্কের পরিবর্তে জুস খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন ক্ষতি হবে কম, উপকার পাবেন বেশি।
২. প্রসেসড মিট : প্রক্রিয়াজাত মাংস খাওয়া তো প্রায় রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। ২০১৪ সালে হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক একটি পরীক্ষা চালিয়েছিলেন। তাতে দেখা গিয়েছিল প্রক্রিয়াজাত মাংস খেলে স্পার্ম কাউন্ট প্রায় ৩০ শতাংশ কমে যায়। আর এমনটা হলে যে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা যে আর দূর থাকে না, সে কথা তো বলাই বাহুল্য!
৩. সোডা : একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত সোডা ওয়াটার পান করলে শরীরের অন্দরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতাও কমতে থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই স্পার্ম কাউন্ট কমতে থাকে। তাই বাবা হওয়ার পরিকল্পনা যদি করে তাকেন, তাহলে এই ধরনের পানীয় থেকে দূরে থাকাই শ্রেয়।
৪. চিজ এবং ফুল ক্রিম দুধ : ২০১৩ সালে হিউমেন রিপ্রোডাকশনের উপর করা এক গবেষণা অনুসারে দীর্ঘ দিন ধরে চিজ এবং ফুল ফ্যাট মিল্ক খেলে স্পার্ম কাউন্ট চোখে পরার মতো কমে যায়। তবে তাই বলে দুধ খাওয়া বন্ধ করবেন না যেন! শুধু ফুল ফ্যাট মিল্কের বিকল্প কিছু একটা খুঁজে নিলেই চলবে।
৫. অ্যালকোহল : বেশি হলে তো কোনও সুযোগই নেই। কিন্তু অল্পতেও মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। কারণ অ্যালকোহল শরীরে প্রবেশ করা মাত্র নানাবিধ ক্ষতি সাধন করে থাকে। যার মধ্যে অন্যতম হল স্পার্ম কাউন্ট কমিয়ে দেওয়া। তাই এবার থেকে যখন পানীয়র গ্লাস হাতে আয়েশ করবেন, তখন একবার ভাববেন এমনটা করাতে আপনার ভবিষ্যত অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে না তো!
অবশ্য এই খাবারগুলোর পাশাপাশি আরো কয়েকটি বিষয় আছে, যা স্পার্মের স্বাস্থ্যের মারাত্মক অবনতি ঘটিয়ে থাকে। যেমন ধরুন...
১. টাইট জাঙ্গিয়া : একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে টাইট আন্ডারওয়্যার পরলে যৌন অঙ্গ এবং তার আশেপাশের অঞ্চলের তাপমাত্রা এতটা বেড়ে যায় যে স্পার্মের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বাবা হওয়ার ক্ষেত্রে নানাবিধ সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। চাই তো বলি বন্ধু জাঙ্গিয়ার পরিবর্তে বক্সার পরা শুরু করুন। দেখবেন আর কোনও ভয়ই থাকবে না।
২. মাত্রাতিরিক্ত হারে স্মোকিং : বিশেষজ্ঞদের মতে মাত্রাতিরিক্ত হারে ধূমপান করলে স্পার্ম উৎপাদনের ক্ষমতা কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে স্পার্ম কাউন্টও কমে। তাই তো বলি বন্ধু পরের প্রজন্মের মুখ যদি দেখতে হয়, তাহলে নেশায় নিয়ন্ত্রণ আনাটা জরুরি।
৩. কোলে ল্যাপটপ রাখলে : খেয়াল করে দেখবেন অনেকেই কোলে ল্যাপটপে রেখে কাজ করেন। কিন্তু এমনটা করা একেবারেই উচিত নয়। কারণ এমনটা করলে পেটের নিচের অংশের তাপমাত্রা এতটা বেড়ে যায় যে স্পার্মের উৎপাদন কমতে শুরু করে। তাই তো কাজ করার সময় ল্যাপটপ কোলে রাখতে মানা করা হয়।