করোনা : স্পেনে কেন এমন বিপর্যয়?
করোনা : স্পেনে কেন এমন বিপর্যয়? - সংগৃহীত
করোনাভা্ইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুতে ইউরোপে দ্বিতীয় স্পেন। ইতালির পরই তার স্থান। আক্রান্ত দু’লাখ ছুঁতে চলেছে আর মৃত্যু ২১ হাজার পেরিয়েছে। জানুয়ারির শেষ দিকে নাকি প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল স্পেনে। ১৪ মার্চ জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী পেড্রো স্যানচেজ। চলবে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত।
অনেক দেশেই চীন থেকে কেউ সংক্রমণ নিয়ে এসেছিল প্রথম, আমাদের দেশে কিন্তু ইউরোপের অন্যান্য দেশ থেকে এসেছে। জার্মানি, ইতালিফেরত লোকেরা বয়ে এনেছিল ভাইরাস। অনেকে বলছেন, স্পেনে বয়স্ক লোকের সংখ্যা বেশি, সেজন্যই নাকি এত মৃত্যু। কোনো কোনো শহরে রিটায়ারমেন্ট হোমে বৃদ্ধ মানুষকে উদ্ধার করতে গিয়ে সেনারা নাকি দেখেছে, বেশির ভাগ জায়গাতেই দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন যারা, করোনার ভয়ে তারা পালিয়েছেন, আর অসহায় প্রবীণেরা অসুস্থ হয়ে পড়ে আছেন। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এভাবে হয়তো কিছু মৃত্যু ঘটেছে।
ছিমছাম শহর ভ্যালাদোলিদ। এই শহরকে বলা হয় সিটি অফ ক্যাসলস। গথিক স্থাপত্যের চার্চ আছে অনেকগুলো, আছে রাজপ্রাসাদ। আমি ঐতিহ্যশালী ইউনিভার্সিটি অফ ভ্যালাদোলিদের ভাইস চ্যান্সেলর। আমি আন্তর্জাতিক বিভাগের দায়িত্বে। এই মুহূর্তে ব্যস্ততা তুঙ্গে। পৃথিবীর কোন দেশে স্টুডেন্ট এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে গিয়ে আটকে গেছে আমাদের কোন ছাত্র কিংবা কোন বিদেশি ছাত্র আমার এখানে পড়তে এসে বাধ্য হল থেকে যেতে, সব দেখা আমার দায়িত্ব। আমাদের সবচেয়ে বেশি ছাত্রছাত্রী আছে ইতালিতে। সেখানকার পরিস্থিতি বিপজ্জনক। দূতাবাস আর বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কাজটা করতে হচ্ছে। যারা ফিরতে চায়নি বা পারেনি, তাদের চিকিৎসা বিমার তথ্য জানাচ্ছি, যাতে প্রয়োজনে তারা সেগুলো ব্যবহার করতে পারে। অনেকেই অবশ্য ফেরত এসেছে নিজের বাড়িতে। তারা অনলাইনে পড়ছে। ইউনিভার্সিটির ভার্চুয়াল লার্নিং সেন্টার অধ্যাপকদের অনলাইন পড়ানোর রসদ ও পরামর্শ যোগাচ্ছে। আমাদের ক্যাম্পাসে থেকে যাওয়া বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা কম নয়। আমরা তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছি, করোনা সম্পর্কে তথ্য তাদের জানাচ্ছি, কী করণীয়, সেই পরামর্শ দিচ্ছি, যাতে তারা সুস্থ থাকে, নিরাপদে থাকে। তাদের বাবা–মায়েরা খুবই উদ্বিগ্ন। মাঝেসাঝে ইউনিভার্সিটি যেতে হচ্ছে সরকারি টিমের সঙ্গে মিটিং করতে। লকডাউনে কী কী ব্যবস্থা নিতে হবে ক্যাম্পাসে, সেই বিষয়ে এখন থেকেই পরিকল্পনা করছি।
শুধু দরকারি জিনিস বা ওষুধ কেনা, কাজের জায়গায় একান্ত প্রয়োজনে যাওয়া, হাসপাতাল, ব্যাঙ্কের কাজ, বাচ্চা বা প্রবীণ কাউকে দেখাশোনা, পোষ্যকে নিয়ে কাছাকাছি হাঁটা, এ রকম কয়েকটা ব্যাপারে বেরোনোর অনুমতি আছে। গাড়িতে একবারে একজনের বেশি বেরোনো যাবে না। বাইকে বেরোনো পুরোপুরি নিষিদ্ধ। পুলিশ খুব কড়া। ১০০ থেকে ৩০,০০০ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। বহু জায়গায় রাস্তা বন্ধ করেছে পুলিশ। তবে ধীরে ধীরে কয়েকটা কাজের ক্ষেত্র খুলছে। কিন্তু ডিউটির দিন বা সময় ভাগ করে দেয়া হচ্ছে। সর্বত্র সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং আর মাস্ক বাধ্যতামূলক।
সূত্র : আজকাল