এবারের তারাবি হতে পারে যেভাবে

ফয়েজ উল্লাহ ভূঁইয়া | Apr 23, 2020 06:10 am
তারাবির জামাত

তারাবির জামাত - সংগৃহীত

 

রমজানে মসজিদে তারাবির জামাতের অনুমতি দিতে রাজি রয়েছে সরকার। সুস্থ ব্যক্তিদের জন্য শর্তসাপেক্ষে মসজিদ খুলে দিতে আলেমরা যে মতামত দিয়েছেন তা নিয়ে উচ্চপর্যায়ে চিন্তাভাবনা চলছে। ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে এ ব্যাপারে আজ নতুন ঘোষণা আসতে পারে।

কাওমি মাদরাসাগুলোর শীর্ষ সংস্থা আল হাইয়াতুল উলাআর প্রতিনিধিদলের সাথে গতকাল বুধবার ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো: আব্দুল্লাহ বৈঠক করেছেন। বৈঠক থেকে আলেমদেন সাথে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ প্রশাসনের শীর্ষ কয়েকজন কর্মকর্তা ফোনে মতবিনিময় করেছেন। সেই আলোচনায় মক্কা-মদিনায় মসজিদুল হারামাইনের আদলে রমজানে তারাবি-সহ অন্যান্য নামাজের জামাতের অনুমতি দেয়ার বিষয়ে সরকারের তরফে ইতিবাচক মনোভাব দেখানো হয়েছে।

এ বিষয়ে ধর্ম সচিব মো: নুরুল ইসলাম নয়া দিগন্তকে বলেন, আমরা শীর্ষ পর্যায়ের আলেমদের পক্ষ থেকে আহ্বান আনুষ্ঠানিকভাবে আজ (বুধবার) পেয়েছি। বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।
আলেমদের মতামতের আলোকে মসজিদ ও নামাজের ব্যাপারে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত আসতে পারে কি নাÑ জানতে চাইলে তিনি এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

হাইয়াতুল উলাআর অন্যতম প্রতিনিধি বারিধারা শেখ যাকারিয়া ইসলামী রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ এই প্রতিবেদককে বলেন, হাইয়াতুল উলাআর পক্ষ থেকে শীর্ষ আলেমদের বিবৃতিটি আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারের কাছে দিয়েছি। আমাদের প্রতিনিধিদলের সাথে ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর বাসায় বৈঠকও হয়েছে, সেখান থেকে ফোনে সরকারের অন্যান্য শীর্ষ মন্ত্রী ও কর্মকর্তারা আলেমদের সাথে কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, এতটুকু বোঝা যায়, সরকার বর্তমানে যেভাবে ওয়াক্তিয়া ও জুমার জামাত চালু আছে তার সাথে তারারির জামাতেরও অনুমতি দিতে রাজি আছে। কিন্তু আলেমদের দাবি হচ্ছেÑ ৫-১০ জনের যে শর্ত দেয়া হয়েছে সেটি উঠিয়ে দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যারা একেবারে সুস্থ তারা মসজিদে যাতে যেতে পারেন সেই অনুমতি দেয়া। এই দাবির ব্যাপারে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সাথে কথা বলেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানোর কথা বলা হয়েছে।

কওমি মাদারাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাক ও হাইয়াতুল উলাআর শীর্ষস্থানীয় নেতা মাওলানা মাহফুজুল হক বলেন, আমরা তো আশা করছি সরকার মাঝামাঝি পর্যায়ের কোনো একটা সিদ্ধান্ত দেবে। কারণ মক্কা-মদিনায় যেখানে জামাতই বন্ধ ছিল সেখানে রমজানে জামাত ও অন্যান্য জামাত চালু রাখার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। কোনো কোনো মুসলিম দেশে ফাঁক করে দাঁড়িয়ে জামাতের অনুমতি দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আলেমরা প্রথমে নিজেরা বিভিন্নভাবে আলোচনা করে সর্বশেষ হায়াতুল উলাআর নেতৃত্বে সরকারের কাছে দাবি পেশ করেছে। আশা করি, সরকার তা বিবেচনায় নিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য সিদ্ধান্ত দেবে। এ ব্যাপারে হাইয়াতুল উলাআর ভারপ্রাপ্ত কো-চেয়ারম্যান মুফতি আবদুল কুদ্দুসের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল সরকারের সাথে যোগাযোগ করছে বলেও জানান এই শীর্ষস্থানীয় আলেম।

ধর্ম মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন সূত্র জানিয়েছে, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবনে গতকাল সকাল থেকেই আলেমদের নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানে ধর্ম মন্ত্রাণলয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছিলেন। বৈঠক থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অংশ নেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, মুখ্যসচিবসহ প্রশাসনের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তারা আলেমদের বক্তব্য শোনেন এবং নিজেদের মতামতও ব্যক্ত করেন। তারা অন্যান্য জামাতের মতোই ইমাম-মুয়াজ্জিন-খাদেমদের অংশগ্রহণে তারাবির ব্যাপারেও অনুমতি দিতে রাজি হন। অন্যান্য মুসল্লির জন্যও মসজিদ খুলে দিতে আলেমদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আজ জানানো যাবে বলে আলেমদের আশ্বস্ত করা হয়।

প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে গত ৬ এপ্রিল ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে দেশের মসজিদগুলোকে সাধারণ মুসল্লিদের নামাজে আসতে বারণ করা হয়। মসজিদে ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেমদের সমন্বয়ে পাঁচ ওয়াক্তের জামাতে সর্বোচ্চ পাঁচজন করে এবং জুমার জামাতে ১০ জন করে অংশ নেয়ার অনুমতি দেয়া হয়। প্রথমে আলেমরা সরকারের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করলেও পরবর্তী সময়ে মসজিদে উন্মুক্ত করে দিয়ে জামাত চালুর দাবি উঠতে থাকে।

সর্বশেষ গত মঙ্গলবার আল্লামা শফীসহ শীর্ষ আলেমরা আল হাইয়াতুল উলাআর প্যাডে এক বিবৃতিতে রমজানে সুস্থ ব্যক্তিদের জুমা, পাঁচ ওয়াক্তের জামাত ও তারাবির জন্য সব মসজিদ খোলা রাখার আহ্বান জানান। মুসল্লিদের দু’জনের মধ্যে অন্তত দুই ফুট পরিমাণ জায়গা ফাঁক রেখে দাঁড়ানোসহ ১৪টি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়ে মসজিদ উন্মুক্ত করে দেয়ার মতামত দিয়েছেন তারা।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us