আরব নারীদের সম্পর্কে কটূক্তি : বিজেপির এমপির চপেটাঘাত আমিরাত রাজকন্যার
হিনদ আল কাসেমি - সংগৃহীত
কটূক্তি ও উপহাস কখনো নজর এড়ায় না। বেঙ্গালুরু দক্ষিণের বিজেপি এমপি তেজস্বী সূর্যকে হুঁশিয়ারি দিয়ে এই মন্তব্য করলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতেরর এক রাজকন্যা। শারজা রাজপরিবারের ওই সদস্যের নাম হিনদ আল কাসেমি।
সোমবার ভারতের সবচেয়ে কম বয়সী ওই ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির ওই এমপিকে চপেটাঘাত করে তিনি টুইট করেন, ‘আমি ভারতে গান্ধীর দেশ হিসেবে চিনি। জানি এই দেশ অনেক আত্মত্যাগ করেছে। এখন গোটা বিশ্ব কোভিড-১৯ (COVID-19)-এর বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এই সময়ে ঘৃণা ছড়ানো বন্ধ রাখা উচিত।’
কয়েকদিন আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইট করেছিলেন, ‘কোভিড-১৯ (Covid-19) কোনো ধর্ম, রং, সম্প্রদায়, ভাষা বা সীমান্ত দেখে না।’ এরপরই বেঙ্গালুরু দক্ষিণের বিজেপি সাংসদ তেজস্বী সূর্যের পাঁচ বছর আগে করা একটি টুইটের স্কিনশট সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়াতে শুরু করে। ২০১৫ সালের ২৩ মার্চ করা ওই টুইটে সূর্য লিখেছিলেন, আরবের ৯৫ শতাংশ নারীই শেষ কয়েক শ' বছরে অর্গাজম কী তা জানেননি! প্রত্যেক মা-ই সন্তানের জন্ম দিয়েছেন যৌনতার অংশ হিসেবে, ভালোবাসা থেকে নয়। এই টুইটের সঙ্গে তিনি ট্যাগ করেন সাংবাদিক তারেক ফতেহকে।
সম্প্রতি বিষয়টি ফের সামনে আসার পর তেজস্বী সূর্যকে সংসদ সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করার দাবি ওঠে। তাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে বলেও মন্তব্য করেন অনেকে। যদিও বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক শুরু হওয়ার পরেই ওই টুইটটি ডিলিট করে দেন তেজস্বী। তারপরও অবশ্য বিতর্ক থামেনি। ওই বিজেপি সাংসদের টুইটার অ্যাকাউন্টটি ডিলিট করার দাবি জানিয়ে টুইটার কর্তৃপক্ষ টুইটও করেন অনেকে। এবার সরাসরি এমপিকে হুঁশিয়ারি দিলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজ্যকন্যা।
সংবাদ প্রতিদিন
‘মুসলমানদের দমন বাড়াতে করোনাকে ব্যবহার করছে ভারত’
রাজনৈতিক অ্যাক্টিভিস্ট অরুন্ধতী রায় শুক্রবার অভিযোগ করেছেন যে, করোনাভাইরাস মহামারিকে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়াতে কাজে লাগাচ্ছে ভারত সরকার৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ভারতের জাতীয়তাবাদী সরকার এই কৌশল ব্যবহার করে ‘‘অসৎ উদ্দেশ্যে নিখুঁতভাবে এমন কিছু করতে যাচ্ছে যার প্রতি বিশ্বের নজর রাখা উচিত৷’’ হিন্দুপ্রধান দেশটির বর্তমান পরিস্থিতি ‘গণহত্যার দিকে ধাবিত হচ্ছে’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি৷
রাজনৈতিক অ্যাক্টিভিস্ট অরুন্ধতী রায় শুক্রবার অভিযোগ করেছেন যে, করোনাভাইরাস মহামারিকে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়াতে কাজে লাগাচ্ছে ভারত সরকার৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ভারতের জাতীয়তাবাদী সরকার এই কৌশল ব্যবহার করে ‘‘অসৎ উদ্দেশ্যে নিখুঁতভাবে এমন কিছু করতে যাচ্ছে যার প্রতি বিশ্বের নজর রাখা উচিত৷’’ হিন্দুপ্রধান দেশটির বর্তমান পরিস্থিতি ‘গণহত্যার দিকে ধাবিত হচ্ছে’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি৷
তিনি বলেন, ‘‘আমি মনে করি কোভিড-১৯ ভারতের এমন কিছু বিষয় ফুটিয়ে তুলেছে যা আমরা সবাই আগে থেকেই জানতাম৷ আমরা ভুগছি, তবে শুধু কোভিডে নয়, ঘৃণা থেকে সৃষ্ট সংকট, ক্ষুধা থেকে সৃষ্ট সংকটেও৷’’
ভারতের ১৩০ কোটি মানুষ বর্তমানে ছয় সপ্তাহের লকডাউনে রয়েছে৷ বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জনবহুল দেশটিতে জন হপকিন্স ইন্সটিটিউটের হিসেবে সোমবার অবধি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৩,৮৩৫ জন, আর মারা গেছেন ৪৫২ জন৷
ভারত সরকারের সমালোচক হিসেবে পরিচিত অরুন্ধতী রায় বলেন, ‘‘মুসলমানদের প্রতি বিদ্বেষ সংক্রান্ত সংকটের পেছনে রয়েছে দিল্লিতে এক নির্বিচারে হত্যার ঘটনা, যা দেশটিতে মুসলিমবিরোধী নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদের সময় ঘটেছিল৷ কোভিড-১৯-এর আড়ালে ভারত সরকার আইনজীবী, জ্যেষ্ঠ সম্পাদক, অ্যাক্টিভিস্ট এবং বুদ্ধিজীবীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা লড়ায় তরুণ শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করছে৷’’
রায় দাবি করেছেন যে, ভারত সরকার এমন এক কৌশলের জন্য ভাইরাসটির অপব্যবহার করছে যা গণহত্যার সময় নাৎসিদের ব্যবহৃত কৌশলগুলোর একটির কথা মনে করিয়ে দেয়৷ তিনি বলেন, ‘‘রাষ্ট্রীয় সেবক সংঘ (আরএসএস) হচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) মাদারশিপ, যেটি দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে যে, ভারতের হিন্দু রাষ্ট্র হওয়া উচিত৷ এটির ভাবাদর্শে ভারতের মুসলমানদের সঙ্গে জার্মানির ইহুদিদের তুলনা করা হয়৷ আপনি যদি তারা কিভাবে কোভিডকে ব্যবহার করছে সেদিকে তাকান, তাহলে দেখবেন এটা অনেকটা ইহুদিদের যেভাবে আলাদা করতে, কলঙ্কিত করতে টাইফুসকে ব্যবহার করা হয়েছিল, সেরকম৷’’
বিজেপির তরফ থেকে অবশ্য অরুন্ধতী রায়ের এই বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে৷ দলটির মুখপাত্র নালিন কোহলি বলেছেন, অরুন্ধতী রায়ের বক্তব্য ‘‘বিভ্রান্তিকর, মিথ্যা এবং পুরোপুরি বর্ণবাদী৷’’
ডয়চে ভেলে