এবার বিশ্বরেকর্ড গড়ার দাবি ট্রাম্পের
ট্রাম্প - সংগৃহীত
আমেরিকায় করোনার প্রকোপ খুব ধীরে হলেও কমছে। সংক্রমণের যে–চূড়ান্ত পর্যায়, সেটা সম্ভবত পেরিয়ে আসা গেল বলে মনে করছে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত রাজ্য নিউ ইয়র্ক। কিন্তু এখনই নিশ্চিন্ত হওয়ার সময় আসেনি। এটা সবে ‘হাফ টাইম’! বললেন নিউ ইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো। গত ২৪ ঘণ্টায় নিউ ইয়র্কে নতুন সংক্রমণের হার থেকে মৃত্যু, সবই আগের তুলনায় কমেছে। এবং এই হার ক্রমশ কমতে থাকছে। সেই থেকেই প্রশাসনের আশা, সবচেয়ে খারাপ সময়টা বোধ হয় পার হয়ে গেল। ‘কিন্তু এর পর কী হবে, সেটা নির্ভর করছে এর পর আমরা কী করছি তার ওপর।’ সতর্ক করেছেন গভর্নর কুয়োমো।
সারা আমেরিকার ছবিটা যদিও এখনও যথেষ্ট ভয়–ধরানো। ৭ লক্ষ ৪২ হাজার ৪৪২ জন করোনায় আক্রান্ত। মৃতের সংখ্যা ৪০,৫৮৫। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি নিউ ইয়র্ক রাজ্যের। ২ লক্ষ ৪২ হাজার ৫৭০টি সংক্রমণ। মৃত ১৮,৯২১ জন। তার মধ্যে ১৪,৪৫১ জনই নিউ ইয়র্ক শহরের। বাকি আক্রান্ত রাজ্যগুলির মধ্যে নিউ ইয়র্ক লাগোয়া নিউ জার্সিতে মারা গেছেন ৪৩৬৪ জন, মিশিগানে ২৩০৮ জন এবং ম্যাসাচুসেট্সে ১৫৬০ জনের প্রাণ গেছে করোনায়। তথ্য জন্স হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্যকেন্দ্রের।
একজন অবশ্য এর মধ্যেই নিরন্তর ভাষণ দিয়ে চলেছেন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রবিবার তিনি বেশ জঁাক করেই বলেছেন, ‘ভারতের থেকে বেশি করোনা পরীক্ষা করেছে আমেরিকা। কার্যত ফ্রান্স, ব্রিটেন, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, সিঙ্গাপুর, ভারত, অস্ট্রিয়া, অস্ট্রেলিয়া, সুইডেন ও কানাডা মিলিয়ে যত করোনা পরীক্ষা হয়েছে, তার থেকে বেশি হয়েছে আমেরিকায়। ৪১.৮ লক্ষ লোকের পরীক্ষা হয়েছে। এটা একটা বিশ্বরেকর্ড! কাজেই করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমেরিকা দৃঢ় পায়ে এগিয়ে চলেছে।’ মার্কিন প্রেসিডেন্টের এত কথা বলার একটাই কারণ, তিনি এখন যত দ্রুত সম্ভব দেশে বাণিজ্যিক কাজকর্ম শুরু করতে মরিয়া। নিউ ইয়র্ক এবং অন্যত্র সংক্রমণ আর মৃত্যুর হার ক্রমশ কমতে থাকায় তিনি আরও জোর পেয়েছেন। বলেছেন, সমস্যার চূড়োয় পৌঁছোনোর পর নামতে থাকাটা এক ‘ওয়ান্ডারফুল ফিলিং’! ইতালি ও স্পেন সংক্রমণের শুরুতেই আমেরিকার মতো বুদ্ধি করে সারা দেশ লকডাউন করে দিতে চায়নি বলেই ওদের এত লোক মারা গেল! হ্যাঁ এ–কথাও বলেছেন প্রেসিডেন্ট!
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের সর্বশেষ পরিসংখ্যান জানার অন্যতম ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বিশ্বের ২৪ লাখ ৮১ হাজার ২৫৩ জন। এদের মধ্যে বর্তমানে ১৬ লাখ ৬৩ হাজার ৯৭০ জন চিকিৎসাধীন এবং ৫৬ হাজার ৭৬৬ জন (৩ শতাংশ) আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন।
এ পর্যন্ত করোনাভাইরাস আক্রান্তদের মধ্যে ৬ লাখ ৪৬ হাজার ৮৪৮ জন (৭৯ শতাংশ) সুস্থ হয়ে উঠেছেন এবং ১ লাখ ৭০ হাজার ৪৩৫ জন (২১ শতাংশ) রোগী মারা গেছেন।
করোনাভাইরাস বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২১০টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। গত ১১ মার্চ করোনাভাইরাস সংকটকে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।