অজু বা গোসল করার পরেও মনে হয় প্রস্রাব নির্গত হয়। এই সন্দেহ নিয়ে নামাজ পড়লে কি নামাজ হবে?
অজু বা গোসল করার পরেও মনে হয় প্রস্রাব নির্গত হয়। এই সন্দেহ নিয়ে নামাজ পড়লে কি নামাজ হবে? - সংগৃহীত
প্রশ্ন : অজু বা গোসল করার পরেও মনে হয় প্রস্রাব নির্গত হয়। এই সন্দেহ নিয়ে নামাজ পড়লে কি নামাজ হবে?
মুফতি কাজী ইব্রাহিম : নবীজী সা: বলেছেন, ‘অজু করার পর যদি মনে হয় প্রস্রাব নির্গত হচ্ছে তাহলে হাতে একটু পানি নিয়ে লুঙ্গি বা পায়জামাতে ছিটিয়ে দাও।’ এতে মনের অছঅছা বা সংশয় দূর হয়ে যাবে। মাঝে মাঝে শয়তান মনে সন্দেহ জাগাবে যে, মনে হয় প্রস্রাব বের হচ্ছে। তাই পানি দিয়ে মনকে বুঝিয়ে দিন যে, পায়জামা বা লুঙ্গিতে আমি নিজেই পানি ছিটিয়েছি। সন্দেহ নিয়ে কিছু করা যাবে না। আবার অনেক সময় অজু ভঙ্গ হয়েছে কি না, তা মনে করতে পারি না। এমতাবস্থায় যদি অজু ভাঙার কোনো কারণ স্মরণে না আসে তাহলে আপনার অজু আছে বলেই ধরে নিতে হবে। আর অজু আছে বলে মনের মধ্যে পূর্ণ আস্থা নিয়ে নামাজ আদায় করতে হবে। কোনো সন্দেহ রাখা যাবে না।
প্রশ্ন : মা-বাবা জীবিত বা মৃত থাকলে, তাদের জন্য সহিহ দোয়া কী কী আছে, যা সালাতে বা যেকোনো সময় ব্যবহার করে তাদের জন্য দোয়া করা যায়। অর্থাৎ একটি ওজিফা, যা দিয়ে প্রতিদিন মা-বাবার জন্য রুটিন করে দোয়া করব।
ড. খোন্দকার আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর : রব্বির হাম হুমা-কামা-রব্বাইনি- সগী-র-। এটাই পিতামাতার জন্য সবচেয়ে উত্তম দোয়া। সালাত এবং সালাতের বাইরে এই দোয়া আপনি সর্বদা করতে পারেন।
প্রশ্ন : শিরক কাকে বলে? রোগমুক্তির জন্য তাবিজ ব্যবহার করা এবং মাজারে বা পীরের দরবারে মান্নত করা কি শিরক?
ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর : শিরক অর্থ কারো সাথে কাউকে মিলানো। আল্লাহর সাথে আমাদের দু’টি সম্পর্ক। একটা হলো আল্লাহ আমাদের রব। খাওয়ান, পরান, রিজিক দেন, ভালো করেন, মন্দ করেন তিনি। আরেকটি হলো আল্লাহ আমাদের মা’বুদ। অর্থাৎ আমরা একমাত্র ইবাদত করব আল্লাহর। বান্দার এই ইবাদতে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো অংশ দেয়া হলো শিরক। আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ ভালো-মন্দ করতে পারে অথবা আল্লাহ কাউকে ভালো-মন্দ করার ক্ষমতা দিয়েছেন অথবা পৃথিবীতে এমন কেউ আছেন যিনি নেক নজর দিলে বিপদ কেটে যায়Ñ এসব বিশ্বাস ও চিন্তা শিরক। পীর সাহেব বা কেউ একজন দোয়া করলে আল্লাহ কবুল করতে বাধ্য বা আল্লাহ কারো দোয়া ফেরাতে পারেন না; এসব ধারণা শিরক।
এবার আসুন, তাবিজ ব্যবহার করা শিরক কি না? হাদিস শরিফে তাবিজ ব্যবহারকে শিরক বলা হয়েছে। সাহাবিরা তাবিজকে শিরক বলেছেন, ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছেন। পরবর্তী সময়ে কোনো কোনো আলেম বলেছেন, শুধু কুরআনের আয়াত বা হাদিস দিয়ে তাবিজ দিলে শিরক হবে না। তবে রাসূল সা: ও সাহাবিগণ কুরআনের আয়াত পড়ে ফুঁ দিতেন। কুরআনের আয়াত দিয়ে পানিপড়া বা তেলপড়া এগুলো সুন্নত সমর্থন করে। তবে রাসূল সা: ও সাহাবিগণ তাবিজ ব্যবহার করেননি। পরের আলেমরা তাবিজকে দুই ভাগ করেছেন, একটা হলো যে তাবিজে দাগ দেয়া বা সংখ্যা লিখা এটা শিরক। অন্যটি হলো, যে তাবিজে কোনো দাগ নেই; স্পষ্ট কুরআনের আয়াত বা হাদিস লেখা এটাকে শিরক বলেননি।
আর রোগ মুক্তির জন্য পীরের দরবারে মানত করা বা পীরের কাছে যাওয়াই শিরক পীরের কাছে যেতে হলে আমল শেখার জন্য বা দোয়া-কালাম শেখার জন্য যেতে হবে। আর বিপদ-আপদে আল্লাহর কাছে মুক্তি চাইতে হবে, পীর বা মাজারে নয়।
সূত্র : আস্ সুন্নাহ ট্রাস্ট
প্রশ্ন: আমি পর্দা করি, নামাজ পড়ি, চেষ্টা করি ইসলামকে মেনে চলার জন্য। কিন্তু আমার শাশুড়ি খারাপ আচরণ করে আমার সাথে। তার সাথে কথা বললে কথা কাটাকাটি হয়। তাই আমি শাশুড়ির সাথে কথা বলি না ঝগড়া এড়িয়ে চলার জন্য। এতে কি আমার পাপ হবে?
শায়খ আহমাদুল্লাহ : তার সাথে কথা বলতে গেলেই আমল নষ্ট হয় বা তিনি আপনাকে খারাপ ভাষায় কথা বলতে বাধ্য করেন। তাহলে আপনি কথা না বলেও থাকতে পারেন। তবে সে ক্ষেত্রেও আপনার উচিত একবারে কথা বন্ধ না করে সালাম এবং মৌলিক কথা বা আচরণ চালু রাখা। কারণ রাসূল সা: বলেছেন, ‘কোনো মুসলিম অন্য মুসলিমের সাথে তিন দিনের বেশি কথা না বলে তাকে বর্জন করা জায়েজ নেই।’ তবে তার সাথে সালাম বা মৌলিক কথা বললেও যদি ফিতনা সৃষ্টি হয়, তাহলে ফিতনা থেকে বেঁচে থাকার জন্য কথা বন্ধ রাখতে পারেন। তবে সুযোগ পেলেই তাকে সালাম এবং মৌলিক কথা চালু রাখতে হবে।