ব্রিটেনে কতজন মারা গেছে করোনাভাইরাসে?

মাহবুব আলী খানশূর | Apr 19, 2020 06:59 pm
ব্রিটেনে কতজন মারা গেছে করোনাভাইরাসে?

ব্রিটেনে কতজন মারা গেছে করোনাভাইরাসে? - সংগৃহীত

 

ব্র্রিটেনে মহামারী কোভিড-১৯ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় (শনিবার দুপুর পর্যন্ত) আরো ৮৮৮ জন মৃত্যুবরণ করেছেন বলে জানিয়েছে ডিপার্টমেন্ট অফ হেলথ এন্ড স্যোশাল কেয়ার। এতে মোট মৃতের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৪৬৪ জন। তবে এই সংখ্যা শুধু হাসপাতালে মৃতের সংখ্যা গণনা করে পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হচ্ছে। সরকারের তথ্য মতে, কেয়ার হোম ও বাসায় যেসব কোরানা আক্রান্ত রোগী মারা গেছে তাদের ওই পরিসংখ্যানে গণনা করা হয়নি। এদিকে আজ রোববার ন্যাশনাল কেয়ার ফোরামের (এনসিএফ) এক তথ্যে জানানো হয়েছে, গত ৩ এপ্রিল পর্যন্ত তাদের অধীনে থাকা কেয়ার ও নার্সিং হোমে প্রায় ৪ হাজারের বেশি করোনার রোগী মারা গেছে। আর ব্রিটেনে বিভিন্ন বাসায় অনেক করোনা রোগী মারা যাচ্ছে, যা সরকারী পরিসংখ্যানে গণনা করা হচ্ছে না। এই হিসেবে ধরা যায়, ব্রিটেনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ২০ সহস্রাধিক মানুষ মারা গেছে।

এদিকে করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৬১৮। মোট আক্রান্তের সংখ্যা হচ্ছে ১ লাখ ১৪ হাজার ২১৭ জন। ওই সংখ্যা শুধুমাত্র হাসপাতালের আক্রান্তের পরিসংখ্যান করা হয়েছে। কেয়ার হোম ও বাসায় আক্রান্তের সংখ্যা গণনা করলে আক্রান্তের সংখ্যা দেড় লাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারনা করছে ব্রিটেনের সাংবাদিক ও বিশ্লেষকরা।

ন্যাশনাল কেয়ার ফোরাম (এনসিএফ) ব্রিটেনের নন প্রফিট কেয়ার হোমগুলোর একটি ইউনিয়ন। আর কেয়ার ইংল্যান্ড নামে আরেকটি সংস্থাটি জানিয়েছে, কেয়ার হোমে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রায় সাড়ে সাত হাজার মারা গেছে। এসব ছাড়াও ব্রিটেনে আরো বাণিজ্যিক কেয়ার হোম রয়েছে। ওই পরিসংখ্যানে বাণিজ্যিক কেয়ার হোমে করোনায় মৃতের সংখ্যা গণনা করা হয়নি। তাই মনে হচ্ছে ব্রিটেনে করোনায় মৃতের সংখ্যা ২০ হাজারের বেশি। প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণে সরকারের আরো সময় লাগবে। আশা করা হচ্ছে করোনা প্রকোপ কেটে গেলে সরকার প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণে যথাযথ ব্যবস্থা নিবে।

এদিকে নভেল করোনাভাইরাস আক্রান্ত গর্ভবতী একজন নার্স সন্তান জন্ম দেওয়ার পর মারা গেছেন। রোববার ইংল্যান্ডের লুটন শহরের ডানস্টেবল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ম্যারি আগিএইওয়া আগিয়াপং (২৮)নামের এই নারী মারা যান। আইসোলেশনে থাকা তার স্বামীরও কোভিড-১৯ ধরা পড়েছে। হাসপাতাল ট্রাস্টের একজন মুখপাত্র আগিয়াপংয়ের ‘সন্তান খুব ভালো আছেন’ বলে জানিয়েছেন।

এদিকে আজ রোববার সোয়ানসি শহরে জনস্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত দুই জন কর্মী কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। তাদের একজন ব্রায়ান এমফুলা । তিনি সোয়ানসি ইউনিভার্সিডঁতে মেন্টাল হেল্থ বিভাগে নার্সিং লেকচারার হিসেবে কাজ করতো। আরেকজন জেনেলিন কার্টার। তিনি মরিসন হাসপাতালে হেলথ কেয়ার এসিস্টেন্ট হিসেবে কাজ করতো।

শিগগিরই খুলছে না স্কুল : পার্ক ও কবরস্থানে লকডাউন শিথিল
এদিকে বৃহস্পতিবার ব্রিটেনে লকডাউনের সময় আরো তিন সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে আগামী ৭ মে পর্যন্ত । সরকারের হেলথ সেক্রেটারি ম্যাট হ্যানকক জানিয়েছেন। তবে সরকারের কেবিনেট অফিস মিনিস্টার রোববার জানিয়েছেন, ৭ মে’র পর কবে লকডাউন শিথিল করা হবে তা এখনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। সানডে টাইমসে প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়, আগামী ১১ মে আগাম লকডাউন উঠানো প্রেক্ষিতে স্কুলগুলো খুলে দেয়া হতে পারে। ওই রিপোর্টের প্রেক্ষিতে কেবিনেট অফিস মিনিস্টার মাইকেল গভ জানিয়েছেন, সানডে টাইমসের ওই রিপোর্ট সত্য নয়। ৭ মে‘র পর অবস্থা পর্যাবেক্ষন করে ভারসম্যপূর্ন একটি সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

এদিকে সরকারের হেলথ সেক্রেটারি ম্যাট হ্যানকক জানিয়েছেন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এখনো বাড়ছে । লকডাউন তুলে নেয়া বা সামাজিক দূরত্বের বিধিনিষেধ শিথিল করার সময় এখনো আসেনি। তিনি বলেন নতুন করে সংক্রমণ বা মৃত্যুর হার যদিও কিছুটা সমান মাত্রায় পৌঁছেছে কিন্তু তা এখনও কমতে শুরু করেনি। বিধিনিষেধ শিথিল করা হলে ভাইরাস আবার ব্যাপক মাত্রায় সংক্রমণ ঘটাবে বলে মনে করছে দেশের বিজ্ঞানীরা।

এদিকে ব্রিটেনের বিরোধী লেবার পার্টি বলেছে , তারা লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধি সমর্থন করে। তবে কবে এবং কিভাবে এই লকডাউনের মেয়াদ শেষ হবে তার বিস্তারিত জাতির কাছে উত্থাপন করার আহবান জানান লেবার লিডার কেয়ার স্টারমার। সরকার এপ্রিলের শেষে একদিনে ১০ লক্ষ মানুষকে করোনা পরীক্ষা করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এ বিষয়ে কেয়ার স্টারমার বলেছেন, আমি আশা করি সরকার তার লক্ষ্য পূরনে সফল হবে।

এদিকে ব্রিটিশ সরকারের লোকাল গর্ভমেন্ট সেক্রেটারী রবার্ট জেনরিক বলেছেন, পার্ক এবং কবরস্থান অবশ্যই উন্মুক্ত থাকবে এবং পরিবার প্রিয়জনদের জানাজায় অংশ নিতে পারবে। শনিবার সরকারের নিয়মিত প্রেসব্রিফিংয়ে তিনি জানিয়েছেন, জনগনের পার্কের দরকার আছে তবে তাদের অবশ্যই সামাজিক দূরত্ব পালন করা উচিত, দলে দলে ভিড় করে নয়।

জেনরিক কাউন্সিলদের কাছে আরো বলেছেন, সম্প্রতি করোনার কারনে কিছু কাউন্সিল তাদের পার্কের গেট বন্ধ করে দিয়েছিল। তবে তা আবারো অবশ্যই উন্মুক্ত থাকতে হবে বলে ঘোষণা দেন তিনি। তিনি বলেন, যাদের বাড়ীর সামনে খোলা জায়গা নেই, তাদেরও অক্সিজেন দরকার রয়েছে। তাদের কথা চিন্তা করে পার্কে বেড়ানো শিথিল করা। তিনি বলেন, যাদের নিকট আত্মীয় মারা যাচ্ছেন তারা যেন শেষ বিদায়ে পরিবারের সদস্যদের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা পায়।

সম্প্রতি ১৩ বছর বয়সী ইসমাইল মোহাম্মদ আব্দুলওয়াহাবের মৃত্যুর পর তার পরিবারের কোন সদস্য অংশ নিতে পারেনি। তিনি এই মৃত্যুর দিকে ইঙ্গিত করে জানাজায় পরিবারের সদস্যদের জন্য উন্মুক্ত করার কথা বলেন।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us