কোয়ারেন্টাইন ও সাবানের ব্যবহার নিয়ে যে উপদেশ গিয়েছিলেন মুসলিম বিজ্ঞানীরা
কোয়ারেন্টাইন ও সাবানের ব্যবহার নিয়ে যে উপদেশ গিয়েছিলেন মুসলিম বিজ্ঞানীরা - সংগৃহীত
ইসলামী স্বর্ণযুগের দুই আবিষ্কার আজ করোনা মোকাবিলায় সব থেকে জরুরি হয়ে দেখা দিয়েছে। সাবান ও কোয়ারেন্টাইন। এই দুই জগৎখ্যাত উদ্ভাবনে অভাবনীয় ভূমিকা পালন করেছেন মুসলিম বিজ্ঞানীরা। বলাই বাহুল্য, তাঁদের দেখা পথে হেঁটেই বর্তমান চিকিৎসাবিজ্ঞান আজ এতো উন্নত ও আধুনিক। কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ নেই, যা আছে তা নিত্যপ্রয়োজনীয় ও মানুষের দৈনন্দিন জীবনে সেগুলোর উপস্থিতি অনস্বীকার্য। করোনা থেকে বাঁচতে 'হু’-এর ওয়েবসাইটে বড় বড় করে লেখা, প্রাথমিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে আবশ্যক সাবান, স্যানিটাইজার ও কোয়ারেন্টাইন। বিশ্ববাসী আজ তা দেখেই শিখছে ও তা মেনে চলার চেষ্টায় লিপ্ত। অতীতে মুসলিমদের কাছে জ্ঞান ছিল ধনভাণ্ডারের মতো, যা তারা খুঁজে বেড়াত। চিকিৎসাবিজ্ঞান ও ওষুধ প্রস্তুতকরণেও তারা পিছিয়ে ছিল না। মুসলিম চিকিৎসকদের প্রাথমিক প্রচেষ্টা ছিল প্রাকৃতিক উপায়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষা করা যায়।
সাবানই আসল অস্ত্র
এবার আসা যাক ইতিহাসে। ২৮০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে প্রাচীন ব্যাবিলন সভ্যতায় প্রথম দেখা গিয়েছিল সাবানের ব্যবহার। তখন অবশ্য এরকম সুগন্ধিওয়ালা সাবান ছিল না। প্রাকৃতিক জড়ি বুটির নির্দিষ্ট ব্যবহারে একটি নিরেট পদার্থ তৈরি করে ব্যবহার করা হতো। ব্যবিলনের অত্যাশ্চর্য আবিষ্কার দেখে তা তৈরি করার চেষ্টা হয়েছিল মধ্যপ্রাচ্যে, দশম শতকের শেষ ভাগে। সেই তখন থেকে ইসলামি স্বর্ণযুগের সূচনাকাল বলে জানা যায়। পার্সি দার্শনিক, চিকিৎসাবিদ ও রসায়নবিদ আবু বাকর মুহাম্মদ ইবনে জাকারিয়া আল রাজি ৮৫৪-৯২৫ সালের মধ্যে সাবান তৈরির বিভিন্ন পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিলেন।
সবচেয়ে সেফ কোয়ারেন্টাইন
মার্চ মাস থেকে কোয়ারেন্টাইন শব্দটি শোনা যাচ্ছে মুখে মুখে। করোনা প্রতিরোধে যে কোয়ারেন্টাইনই সেরা দাওয়াই সে কথা স্বীকার করেছে আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানও। কিন্তু এই কোয়ারেন্টাইন ধারণা বা মডেল হাজার বছর প্রাচীন। ইতিহাসে কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশন নিয়ে খুব কম উল্লেখ রয়েছে। তবে যে কোনও ধরণের রোগ রুখে দিতে কোয়ারেন্টাইনই যে সেরা ওষুধ তা প্রথম বলা হয়েছিল ’দ্য ক্যানন অব মেডিসিনে’। পার্সি চিকিৎসাবিদ ও দিগ্বজ রসায়নবিদ ইবনে সিনার সেই বইয়ের কথা আজ স্মরণে আনতেই হচ্ছে। বহুবিদ্যাজ্ঞ ইবনে সিনা সেই প্রক্রিয়ার নাম রেখেছিলেন, ’আল-আরবা ইনিয়া’। তিনি রোগ প্রতিরোধে ৪০ দিন আইসোলেশনের কথা বলেছিলেন আজ থেকে ১১০০ বছর আগে।
সূত্র : পূবের কলম