বিরোধ মিটিয়ে ফেলছেন গনি-আশরাফ!
গনি-আশরাফ - সংগৃহীত
আফগানিস্তানে প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি ও আবদুল্লাহ আবদুল্লাহর মধ্যে আরেকটি ক্ষমতা ভাগাভাগি চুক্তি হতে পারে। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি চুক্তিতে সরকারি পদগুলো ৫০ ভাগ দুজনের মধ্যে বণ্টন করার বিষয়টি দেখা যাচ্ছে। তালেবানের সাথে একটি সমঝোতা প্রতিষ্ঠার আগে কাবুল সরকারের নিজস্ব বিরোধ দূর করা আগে প্রয়োজন।
সম্ভাব্য যে খসড়া চুক্তিটি সামাজিক মাধ্যমে ঘুরছে, তাতে তিনটি অংশ রয়েছে : শান্তি, সরকার পরিচালনা ও সংস্কার।
এতে আবদুল্লাহর অনেক দাবি মেনে নেয়া হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। বিশেষ করে একটি সুপ্রিম ন্যাশনাল রিকনসিলিয়েশন কাউন্সিল (এসএনআরসি) গঠনের কথা বলা হয়েছে। এর প্রধান হবেন আবদুল্লাহ। এই কাউন্সিলই শান্তি আলোচনা এগিয়ে নিতে প্রতিনিধিদল নির্বাচন করবে। কাউন্সিলের সদস্যদের নিয়োগ করা হবে রাজনৈতিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের থেকে।
অধিকন্তু, সদ্য গঠিত স্টেট মিনিস্ট্রি ফর পিস (এসএমপি) আসবে এই কাউন্সিলের অধীনে। এটি কাউন্সিলের একটি সচিবালয় হিসেবে কাজ করবে। আবদুল্লাহর নির্দেশনাতেই এসএমপি পরিচালিত হবে।
এসএনআরসির চেয়ারম্যান হবেন প্রেসিডেন্টের পর দেশের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড। তিনি এর মাধ্যমে সরকারি অনুষ্ঠানদিতে প্রাপ্য প্রটোকল পাবেন।
সবার অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আবদুল্লাহর টিমই ডেপুটি চিফ অব আর্মি স্টাফ নিয়োগ করবে। তিনিও ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের (এনএসসি) সদস্য হবেন। আবদুল্লাহ ও দেশ গঠন দলের মধ্যে সমানভাবে এনএসসি পদগুলো বণ্টন করা হবে।
এছাড়া মন্ত্রী, স্বাধীন সংস্থার পরিচালক, ডেপুটি, রাষ্ট্রদূত, মনোনীত সিনেটর, সুপ্রিম কোর্টের হাই কাউন্সিল ইত্যাদি সরকারি পদগুলোর অর্ধেক নিয়োগ করবে পার্টনারশিপ অ্যান্ড স্ট্যাবিলিটি টিম।
একইভাবে প্রাদেশিক গভর্নরদের গত বছরের প্রেসিডেন্ট নিবৃাচনের প্রতিটি ইলেক্টরাল টিমের প্রাপ্ত ভোটের আলোকে নিয়োগ করা হবে।
জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ করা হবে দুই পক্ষের সমান প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে।
খসড়া চুক্তিতে বলা হয়, সংস্কারের লক্ষ্যে গভর্নরদের ক্ষমতা আরো বাড়ানো হবে। জাতিগত অবস্থানের বিষয়টিও বিবেচনায় রাখা হবে।
এতে সংবিধান সংশোধনের জন্য একটি কমিশন গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। লয়া জিরগা আহ্বানের মাধ্যমে তা করা হতে পারে।
আফগানিস্তানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ঘিরে আশরাফ গনি ও আবদুল্লাহ আবদুল্লাহর মধ্যে যে নতুন করে বিরোধের সৃষ্টি হয়েছিল, তা অবসানের প্রয়াসে এই চেষ্টা করা হচ্ছে। উভয়েই নির্বাচনে জয়ী হওয়ার দাবি করে একই দিন শপথ গ্রহণ করেছেন।
এই উত্তেজনার প্রেক্ষাপ ওয়াশিংটন গত মাসে ঘোষণা করে যে তারা আফগানিস্তানের ১ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা হ্রাস করছে। আর তারপরও যদি উত্তেজনার প্রশমন না ঘটে, তবে আরো এক বিলিয়ন সহায়তা কমানো হবে।
বিবদমান দুই নেতার মধ্যে বিরোধ নিরসনের চেষ্টা করছেন কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা। আগের ৫০-৫০ জাতীয় ঐক্য সরকারের মতো এবারো এই সমঝোতার মাধ্যমে আরো ৫ বছর ক্ষমতায় থাকা নিশ্চিত করতে চান তারা।
আফগানিস্তান টাইমস