যে কারণে নারায়ণগঞ্জ এখন করোনার আঁতুর ঘর

কামাল উদ্দিন সুমন নারায়ণগঞ্জ | Apr 11, 2020 02:59 pm
যে কারণে নারায়ণগঞ্জ এখন করোনার আঁতুর ঘর

যে কারণে নারায়ণগঞ্জ এখন করোনার আঁতুর ঘর - সংগৃহীত

 

বলা হচ্ছে, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ক্লাষ্টার নগরী হলো নারায়ণগঞ্জ। প্রতিদিনই বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। সবশেষ হিসাব অনুযায়ী, এখানে করোনাভাইরাসে মারা গেছে ৯ জন, আক্রান্ত হয়েছে ৭৫ জন। প্রতিমুহূর্তে আসছে আতঙ্কের খবর। ইতোমধ্যে পুরো জেলাকে লকডাউন করা হয়েছে। সব পেশার মানুষ রয়েছে আতঙ্কে। বিশেষ করে গার্মেন্টস অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক বেশি।

তবে কেন নারায়ণগঞ্জ করোনার ক্লাস্টার নগরী হলো এমন প্রশ্নে নিট গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিকেএমইএর সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ক্রোনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এএইচ আসলাম সানি নয়াদিগন্তকে জানান, কিছু অসচেতনতা আর ভুল নীতির কারণে নারায়ণগঞ্জ আজ আতঙ্কের নগরী। নারায়ণগঞ্জ আজ করোনার নগরী হিসেবে সারা দেশে আতঙ্ক। তবে এপর্যন্ত বেশির ভাগই যারা আক্রান্ত হচ্ছেন তারা বিদেশ ফেরত কিংবা তাদের আত্মীয় নন এমনটাই দাবি করেন এ গার্মেন্টস ব্যবসায়ী।

নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে আসলাম সানি জানান, আমি মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে একটি ব্যাংকের মিটিংয়ে গিয়েছিলাম। ঢুকতে দেখি অনেক ভিড়। দিনটি ছিল বৃহস্পতিবার। ভিড়ের মধ্যে এক বন্ধু অনেক দিন পর আমাকে দেখে এগিয়ে এসে কুশল বিনিময় করলো। সে বন্ধু দু’তিন দিন পর ভীষণ অসুস্থ হয়ে পরলো। দেখা দিল জ্বর কাশি। করোনো আতঙ্কে আইইডিসিআর ফোন করলো। তারা প্রথমে জানতে চাইলো আমার বন্ধুটি বিদেশ ফেরত কিংবা বিদেশি কারো সংস্পর্শে এসেছিলো কিনা?

কোনো কিছু না ভেবে উত্তর না বলাতেই তারা বললো, আপনার টেস্টের দরকার নেই। বাসায় কোয়ারেন্টাইনে থাকুন। তখনো আমার মাথায় বিন্দু মাত্র আসেনি যে সেদিন ব্যাংকে বিরাট লাইনে যারা দাঁড়িয়ে ছিল, কিংবা ইতিমধ্যে যাদের সঙ্গে আমার বন্ধুর দেখা হয়েছে। কিংবা কুশল বিনিময় করা হয়েছে। সবাই কোথা থেকে এসেছে তা আমি কেমন করে জানবো?

তিনি বলেন,পাঁচ সাত-দিন পর আমার ওই বন্ধুর অবস্থা আরো খারাপ হয়। অনেক যোগাযোগ ও চেষ্টা তদবির করে নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জনের মাধ্যমে তার নমুন পরীক্ষা আইইডিসিআরএ প্রেরন করলে, করোনো পজেটিভ ধরা পরে।
তিনি বলেন, প্রথমে পরীক্ষা না করার কারণে আমার বন্ধু এই দশ-পনের দিনে কতজনের সঙ্গে দেখা করেছে, কতজনকে সংক্রমণ করেছে? আমরা এই হিসাব না জানলেও, এই হিসাব দিতে পারবেন কেবল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি মহোদয়ই।

তবে আমি এতুটুকই বলবো, নারায়ণগঞ্জ আজ করোনোর নগরী হিসেবে সারা বাংলাদেশের আতঙ্ক। এই পর্যন্ত যারা আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের বেশির ভাগই বিদেশ ফেরত বা তাদের আত্মীয় নয়।

আসলাম সানি প্রশ্ন রাখেন, তাহলে কেন এই ‘পোড়ামাটির নীতি’ নিয়েছিলেন ডিজি স্বাস্থ্য?পরীক্ষা না করে ঘরে থাকুন। বিদেশ ফেরত কিংবা তাদের সংস্পর্শে না এলে করোনো হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। তখন যদি আমার ঐ বন্ধুর করেনা পরীক্ষাটা তাৎক্ষণিক করা হতো তাহলে অনেকে সংক্রমণ থেকে বেঁচে যেতো।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, এমন ঘটনার জবাবে ডিজি হেলথ হয়তো এখনো বলবেন এখনো আমরা উন্নত বিশ্বের চেয়ে ভালো আছি। মৃত্যুর সংখ্যায় ও আক্রান্তের দিক দিয়ে। এরপর যখন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে টেস্ট বৃদ্ধি পাচ্ছে দুই সপ্তাহ পরে ডিজি হয়তো বা বলবেন আমাদের মানুষ অশিক্ষিত। তারা স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ে চলে না এবং আমাদের ওয়েব সাইডের স্বাস্থ্য উপদেশ তারা মানে নাই। তাইতো আউট অফ কন্ট্রোল (আল্লাহ না করুক)। সবাই নিজ নিজ দায়িত্বে ঘরে থাকবেন। সচেতন থাকবেন এমন প্রত্যাশা তার।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us