বিশ্বে ঘোর মন্দা, ভারতের প্রবৃদ্ধি নামবে তলানিতে
-
এই ২০২১ আর্থিক বছরে ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার একেবারে তলানিতে পৌঁছবে। জিডিপি বৃদ্ধির হার দাঁড়াবে মাত্র ১.৬ শতাংশ। মন্দার কবলে পড়বে গোটা বিশ্বের অর্থনীতি। এই আশঙ্কার কথা শুনিয়েছে ব্যাংকিং গ্রুপ গোল্ডম্যান স্যাক্স। এই গ্রুপের বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতে লকডাউনের জেরে অর্থনৈতিক কার্যকলাপ দারুণভাবে সঙ্কুচিত হবে। চলতি অর্থবর্ষের দ্বিতীয়ার্ধে ভালোভাবে ঘুরে দাঁড়াবে ভারত। এখন দেশজোড়া যে লকডাউন চলছে, তা ধাপে ধাপে প্রত্যাহার করা হলে পরবর্তী ৪ থেকে ৬ সপ্তাহে সংক্রমণের হার কমবে। দ্বিতীয়ত, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলি অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে বেশ কিছু প্যাকেজ ঘোষণা করবে। তৃতীয়ত, রিজার্ভ ব্যাংকও নগদের জোগান সংক্রান্ত নীতি সম্ভবত আরো শিথিল করবে। পাশাপাশি অর্থনীতিতে নগদের জোগান আরো বাড়ানোর ব্যবস্থা করা হবে। গোল্ডম্যান স্যাক্স বলছে, ‘২০২০ সালে গোটা বিশ্বের জিডিপি–র হার দাঁড়াবে মাইনাস ১.৮ শতাংশ। আমেরিকার বৃদ্ধির হার আরো নিচে নেমে দাঁড়াবে মাইনাস ৬.২ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার মানিটারি পলিসি রিপোর্টে রিজার্ভ ব্যাংক বলেছে, ২০১৯ সালের শেষ ত্রৈমাসিকে ভারতের অর্থনীতির বিকাশের গতি ছিল খুবই ধীর। গত ছ’বছরের মধ্যে কখনও এত ধীর গতিতে বিকাশ হয়নি। মনে করা হচ্ছিল, এইভাবে চললে এক বছরে বিকাশের হার দাঁড়াবে ৫ শতাংশ। যা এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম।
অতিমারির ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ব্যাপক হারে কমেছে। ফলে তেল কিনতে ভারতের খরচ হবে কম। কিন্তু লকডাউনের ফলে দেশের অর্থনীতির ক্ষতি হচ্ছে বিপুল। তা ছাড়া বিদেশে ভারতীয় পণ্যের চাহিদাও কমছে। তাই অর্থনীতির ক্ষতিপূরণ হবে না।
ভারতের রিজার্ভ ব্যাংক বা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতে, অতিমারীর ফলে সামগ্রিকভাবে দক্ষিণ এশিয়ার বিকাশেই বড় ধরনের প্রভাব পড়বে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘কোভিড–১৯ মহামারী ছড়িয়ে পড়ার আগে মনে হয়েছিল ২০২০–২১ আর্থিক বছরে বৃদ্ধি হবে সন্তোষজনক। কিন্তু অতিমারীর ফলে সবকিছু ব্যাপক বদলে গেল। আন্তর্জাতিক অর্থনীতিই সম্ভবত আর কিছুদিনের মধ্যে মন্দার যুগে প্রবেশ করতে চলেছে।
অর্থনীতিতে করোনা ধস ঠেকাতে কিছু দিন আগেই ১ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে খবর, শিগগিরই আর এক দফা প্যাকেজ ঘোষণা করা হতে পারে। মূলত ছোট ও মাঝারি ব্যবসাকে বাঁচাতেই ওই প্যাকেজ। পাশাপাশি বড় কোম্পানিগুলোর জন্যও প্যাকেজের কথা ভাবছে অর্থমন্ত্রক। তবে তার আগে দেখে নেয়া হবে, করোনা সঙ্কটে তাদের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে। তার ভিত্তিতেই স্থির হবে প্যাকেজের অঙ্ক। ভারতের অর্থনীতির আয়তন ২,৯০০ কোটি ডলার। অর্থাৎ ২২ লাখ কোটি রুপির বেশি। তাতে ৫০ কোটির বেশি শ্রমিক কাজ করেন।
সূত্র : আজকাল ও সংবাদ সংস্থা