ইতালির চেয়ে বেশি লোক মারা যাবে যুক্তরাষ্ট্রে!
ইতালির চেয়ে বেশি লোক মারা যাবে যুক্তরাষ্ট্রে! - সংগৃহীত
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এবং মৃত্যু চলছে অবিরাম। যতই দিন যাচ্ছে, মৃত্যুর হার বাড়ছে। ইতোমধ্যেই বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ১৬ লাখ। আর মৃত্যুর সংখ্যা যেকোনো সময় এক লাখে হয়ে যেতে পারে।
রোগটি চীনে সৃষ্টি হলেও সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত করেছে ইউরোপ ও আমেরিকাকে। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ইতালিতে। আর দ্বিতীয় স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্র। অবশ্য আক্রান্তের সংখ্যার দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রই আছে শীর্ষে।
শুক্রবার সকালের হিসাব অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের মারা গেছে ১৬ হাজার ৬৯১ জন। আর ইতালিতে ১৮ হাজার ২৭৯ জন।
কিন্তু আমেরিকার পরিস্থিতি যে–রকম বেহাল, ইতালিকে ছাড়িয়ে যেতে খুব বেশি সময় লাগবে না। যুক্তরাষ্ট্রের মৃত্যুর মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি, ৮১০০ (বুধবার পর্যন্ত) মৃত্যু ঘটেছে নিউ ইয়র্ক রাজ্য এবং সংলগ্ন নিউ জার্সি ও কানেক্টিকাটে। জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্য–পরিসংখ্যান থেকে জানাচ্ছে আমেরিকার সংবাদমাধ্যম।
আর বুধবার পর্যন্ত কেবল নিউ ইয়র্ক শহরেই মারা গেছেন ৪,৫৭১ জন। এ ছাড়া ৯৫৯ জন মারা গেছেন মিশিগানে, লুইজিয়ানায় ৬৫২, ক্যালিফোর্নিয়ায় ৫০৫, ইলিনয়ে ৪৬২, ম্যাসাচুসেট্সে ৪৩৩ এবং ওয়াশিংটনে ৪৩১ জন করোনায় মারা গেছেন। সব মিলিয়ে আমেরিকাই বিশ্বের সবচেয়ে করোনা–আক্রান্ত দেশ এখন, সংক্রামিতের সংখ্যা ৪ লক্ষ ৩২ হাজার ১৩২ জন। তার মধ্যে শেষ ২৪ ঘণ্টায় ৩২,০০০ নতুন সংক্রমণের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। অর্থাৎ সামগ্রিক সংক্রমণের হিসেবে স্পেন (১,৪৮,২২০) ও ইতালির (১,৩৯,৪২২) তিন গুণ। এবং বলাই বাহুল্য যে, নিউ ইয়র্কই এখনও আমেরিকার সংক্রমণের মূল কেন্দ্র। সংখ্যাটা দু’লক্ষেরও বেশি।
আমেরিকায় যত লোক এখনো আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি যেতে পেরেছেন মাত্র ২২,৯০০ জন। যদিও দেরিতে টনক নড়লেও, এখন চেষ্টার কসুর হচ্ছে না। দিনে এক লক্ষেরও বেশি নাগরিকের করোনা পরীক্ষা হচ্ছে এখন। এদের ৯০ শতাংশই সেই সব এলাকায় থাকেন, যা লকডাউনে চলে গেছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সরকার জানিয়েছে, আপাতত ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন বহাল থাকবে। এর সুফল অবশ্য পাওয়া যাচ্ছে। সংক্রমণ কমতে শুরু না করলেও আর বাড়েনি। একটা উচ্চতায় পৌঁছে এখন মোটামুটি সরলরৈখিক পথে যাচ্ছে। ৪০% পরীক্ষার ফলাফল যদিও এখনো পজিটিভ আসছে এবং বেড়ে চলেছে মৃত্যুর হার।
যে–কারণে আমেরিকার সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের প্রধান ডাঃ অ্যান্টনি ফৌচি সতর্ক করে দিয়েছেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সংক্রমণের হার কমানো গেলেও, এখনই নিশ্চিন্ত বোধ করার কোনও কারণ নেই। কারণ সামাজিক দূরত্বই এখন একমাত্র অস্ত্র করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের, যতক্ষণ না করোনার কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কৃত হচ্ছে। আর তা হলেও, মানবদেহে প্রয়োগের জন্য অন্তত ১২ থেকে ১৮ মাস অপেক্ষা করতে হবে।
সূত্র : সংবাদ সংস্থা