ভারতের তেজাস জঙ্গিবিমান : খরচে পোষাবে না!
ভারতের তেজাস জঙ্গিবিমান - সংগৃহীত
ভারতীয় বিমান বাহিনী ৮৩টি তেজাস এমকে১ইএ লাইটওয়েট সিঙ্গেল ইঞ্জিনের জঙ্গিবিমান কেনার চুক্তি চূড়ান্ত করছে। এর আগে ৪০টি এ ধরনের বিমানের অর্ডার দিয়েছিল ভারত। ভারতের তেজাস নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল সেই ১৯৮০-এর দশকে। ভারতীয় বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অপারেশনাল ক্লিয়ারেন্স পেতে (এফওসি) তাদের প্রায় ৪০ বছর লেগে গেছে। এই বিমানটিরে ওজন সুইডেনের গ্রিপেন ও পাকিস্তানের জেএফ-১৭ জঙ্গি বিমানের সমান বলে জানা গেছে। তবে আমেরিকার এফ-১৬ জঙ্গি বিমান ও চনিা জে-১০ ফায়ারবার্ডের চেয়ে হালকা। বলা হচ্ছে তেজাস হলো ভারতের নিজস্ব বিমান। কিন্তু আসলে এর অনেক কিছুই দেশের বাইরে থেকে আনা হয়েছে। এতে সংযোজন করা হয়েছে আমেরিকার এফ৪০৪ ইঞ্জিন। যুক্তরাষ্ট্র ১৯৭০-এ রদশকে এফ-২০ টাইগার শার্ক লাইট বিমানের জন্য এই ইঞ্জিন তৈরী শুরু করেছিল। এছাড়া তেজাতে ইসরাইলি সেন্সর স্যুট ও ইলেকট্রনিক্স ও রাশিয়ার এয়ার টু এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র সংযোজন করা হচ্ছে।
নানা কারণে সুইডেন থেকে তাইওয়ান পর্যন্ত অনেক দেশ দেশে তৈরী হালকা ও স্বল্প মূল্যের বিমান চাচ্ছে। তারা মনে করছে, নিজেরাই বিমান তৈরী করতে পারলে তারা তাদের সশস্ত্র বাহিনীর চাহিদা পূরণ করতে পারবে, নিজেদের মতো করে পরিকল্পনা সাজাতে পারবে। কিন্তু নিজ দেশে বিমান তৈরী করাট খুবই কঠিন কাজ। ভারতের তেজাসের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, এটি নির্মাণ করা খুবই ব্যয়বহুল হয়ে পড়ছে। এর অন্যতম কারণ হলো বিদেশী প্রযুক্তির ওপর তাদের ব্যাপকভাবে নির্ভরশীলতা। ফলে এটি আর স্বল্প ব্যয়ের বিমান থাকছে না। সম্প্রতি যে অর্ডার দিয়েছে ভারতীয় বিমান বাহিনী, তাতে প্রতিটি এয়ারফ্রেমের দাম পড়ছে ৬২.৭ মিলিয়ন ডলার করে।
এই বিমানের সবচেয়ে দামি অংশ হলো এফ৪০৪ ও ইসরাইলি সেন্সর ও ইলেকট্রনিক্স। এগুলো ক্রয় করতে হয় রফতানি মূল্যে। এ দুটি যন্ত্রের কারণে পাকিস্তানের জেএফ-১৭-এর মতো সস্তায় বিমান তৈরীর করতে পারছে না ভারত।
রফতানি মূল্য ও নিজ দেশে ব্যবহারের দামের মধ্যে পার্থক্য থাকে আকাশ-পাতাল। বিষয়টি আমেরিকান এফ-৩৫এ বিমানের উদাহরণ দিয়ে বোঝানো যায়। মার্কিন বিমান বাহিনী এই বিমান ক্রয় করে ৮০ মিলিয়ন ডলার করে। অথচ এই বিমানই যুক্তরাষ্ট্র বিক্রি করে প্রতিটি ২০০ মিলিয়ন ডলার করে। একইভাবে রাশিয়ার সু-৫৭ হলো সবচেয়ে দামি অ-পাশ্চাত্য জঙ্গি বিমান। রুশ বিমান বাহিনী এ ধরনের বিমান কেনে মাত্র ৩৫ মিলিয়ন ডলার করে। অথচ এগুলোর রফতানি মূল্য প্রায় ১১০ মিলিয়ন ডলার করে। সু-৫৭ ও এফ-৩৫এ উভয়টিই পঞ্চম প্রজন্মের অত্যাধুনিক বিমান। অথচ ভারতীয় বিমান বাহিনীকে তাদের দেশে তৈরী বিমান কিনতে হচ্ছে অনেক বেশি দামে। ফলে ভারতীয় বিমান নিজ দেশেই হয়ে পড়ছে ব্যয়বহুল।
মিলিটারি ওয়াচ