করোনাভাইরাস নিয়ে ভারতীয় মুসলিমদের ওপর নতুন বিদ্বেষ
করোনাভাইরাস নিয়ে ভারতীয় মুসলিমদের ওপর নতুন বিদ্বেষ - সংগৃহীত
ভারতের মুসলিমরা আশঙ্কা করছে, দেশ ও বিদেশ থেকে হাজার হাজার লোকের উপস্থিতি সাম্প্রতিক একটি সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠানের সাথে কয়েক শ’ লোকের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্পর্ক আবিষ্কার করার প্রেক্ষাপটে তারা ক্রমবর্ধমান হারে ইসলাফোবিয়ার মুখে পড়বে।
কোভিড-১৯ বিস্তারে ওই সম্মেলনটির ভূমিকা নিয়ে অনেকে সামাজিক মাধ্যমে বিষোদগার করেছেন। এটি ইসলাফোবিকে পরিণত হতে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। এমনকি ‘#করোনাজিহাদ’ ও ‘#নিজামুদ্দিনইডিয়টস’ ইত্যাদি নামে হ্যাশট্যাগের প্রচলনও করা হচ্ছে।
নিউজউইকে পাঠানো এক বিবৃতিতে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দক্ষিণ এশিয়া পরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, কিছু সামাজিক মাধ্যম ও সরকারপন্থী টিভি নেটওয়ার্কে মুসলিমদের দায়ী করে প্রচারণা চলছে।
দিল্লিভিত্তিক ইতিহাসবিদ রানা সাফভি একমত হয়ে নিউজউইককে বলেন, এটা ঠিক যে মহামারিটির সময় এ ধরনের সম্মেলন আয়োজন করে আয়োজকেরা একেবারে দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন, কিন্তু তাই বলে এই সম্মেলনের ওপর বা মুসলিমদের ওপরই দায় চাপিয়ে দেয়া ঠিক হবে না।
তিনি বলেন, এটি একটি ভাইরাস এবং আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। আমরা কোনো সম্প্রদায়কে নিঃসঙ্গ বা কারো বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করা যাবে না।
সাফভি আরো বলেন, এই সম্মেলন যে হচ্ছে তা কর্তৃপক্ষ আগে থেকেই জানত। তারা শুরুতেই এর আয়োজন বন্ধ করে দিতে পারত।
ওই ইতিহাসবিদ বলেন, আন্তর্জাতিক মহামারিটির প্রাদর্ভাবের সময় কোভিড-১৯ বিস্তারের জন্য মুসলিমদের দায়ী করে সামাজিক মাধ্যমে পোস্টের সয়লাবে মুসলিম হিসেবে খুবই পীড়াদায়ক।
তিনি বলেন, এটি খুবই আশঙ্কাজনক ঘটনা। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন যে ইসলামফোবিয়া ইতোমধ্যেই বাড়ছে বলে মানবাধিকার গ্রুপগুলোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করার সময় এ ধরনের প্রচারণা মুসলিমদের মধ্যে নিরাপত্তার অনুভূতিতে আঘাত করতে পারে।
সাফভি বলেন, কোনো সম্প্রদায় বা বর্ণকে একবার দায়ী করা শুরু করলে তারা নাজুক হয়ে পড়ে।
তিনি বলেন, ভারতের বিভিন্ন স্থানের রাজ্য পর্যায়ের কোনো কোনো নেতা ইসলামফোবিক মন্তব্যের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখলেও কেন্দ্রীয় সরকারের কেউ এগিয়ে আসেনি। অথচ তা করাই তাদের উচিত ছিল।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মীনাক্ষীয় গাঙ্গুলি একমত হয়ে নিউজউইককে বলেন, ক্ষমতাসীন বিজেপির হিন্দু জাতীয়তাবাদী বাগাড়ম্বড়তা মুসলিমদের ওপর দাঙ্গাবাজদের হামলাসহ ইতোমধ্যেই মারাত্মক সাম্প্রদায়িক বিভাজন সৃষ্টি করেছে।
গাঙ্গুলি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন কর্তৃপক্ষের উচিত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলের বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের বৈষম্য, বিভাজন বা সহিংসতার বিরুদ্ধে জোরালোভাবে কথা বলা উচিত।
এ ব্যাপারে মন্তব্যের জন্য ভারত সরকারের সাথে যোগাযোগ করেছে নিউজউইক।
নিউজউইক