ভারতীয় সামরিক বাহিনীতে যৌথ প্রশিক্ষণ কমান্ড!

অমৃতা নায়েক দত্ত | Mar 20, 2020 09:27 am
জেনারেল বিপিন রাওয়াত

জেনারেল বিপিন রাওয়াত - সংগৃহীত

 

ভারতীয় সামরিক বাহিনী নতুন একটি যৌথ প্রশিক্ষণ কমান্ড প্রতিষ্ঠায় দ্রুততার সাথে কাজ করছে। সামরিক বাহিনীর তিনটি শাখা- সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ চাহিদা পূরণের জন্য এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

তিন বাহিনীর জন্য কোথায় কমান্ড সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হবে তা চূড়ান্ত না হলেও নাগপুরকে বিকল্প বিবেচনা করে আলোচনা চলছে বলে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিরক্ষা সূত্র জানিয়েছে। এই কমান্ডের কাঠামোও এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
তাছাড়া প্রশিক্ষণ কমান্ড আর্টরাক শিমলা থেকে মিরাটে সরিয়ে নেয়ার প্রস্তাবও স্থগিত করা হয়েছে।
এক সিনিয়র প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেন, তিন বাহিনীর জন্য একটি যৌথ প্রশিক্ষণ কমান্ডের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে। এই পর্যায়ে আর্টরাকের স্থান বদল সম্ভবত প্রাসঙ্গিক হবে না।
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, বিদ্যমান প্রশিক্ষণ কমান্ড কিভাবে নতুন কাঠামোতে একীভূত করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা চলছে।

সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ কমান্ডের অবস্থান শিমলায়, বিমানবাহিনীরটি বেঙ্গালুরুতে। নৌবাহিনীর আলাদা কোনো প্রশিক্ষণ কমান্ড নেই। নৌবাহিনীর প্রশিক্ষণ-সম্পর্কিত সব ব্যবস্থা রয়েছে সাদার্ন নেভাল কমান্ডের আওতায়।
যৌথ প্রশিক্ষণ কমান্ড প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ ২০১৮ সাল থেকে চলছে। ওই সময় সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত ও বিমানবাহিনী প্রধান বি এস ধানোয়ার উপস্থিতিতে চিফস অব স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান (সিওএসসি) অ্যাডমিরাল সুনীল লান্বা তিন বাহিনীর জন্য ‘জয়েন্ট ডকট্রিনের’ প্রস্তাব দেন।
তিন বাহিনীর আধুনিকায়নের জন্য একটি ‘ট্রাই-সার্ভিস’ দৃষ্টিভঙ্গির পাশাপাশি জয়েন্ট ডকট্রিনে সদস্যদের জন্য যৌথ প্রশিক্ষণ, ঐক্যবদ্ধ কমান্ড ও কন্ট্রোল স্ট্রাকচারের প্রস্তাব করা হয়।

এক সিনিয়র নৌ অফিসার বলেন, যৌথ প্রশিক্ষণ কমান্ডে সব প্রশিক্ষণ নীতি থাকবে। এমনকি এতে বিদেশে প্রশিক্ষণও একই অফিসের আওতায় থাকবে। বর্তমানে এগুলো আলাদা আলাদাভাবে করা হয়ে থাকে।
ওই অফিসার বলেন, যৌথ প্রশিক্ষণ কমান্ড সম্ভবত তিন বাহিনীর জন্য অভিন্ন নীতি প্রণয়নে সহায়তা করবে, কর্মসম্পাদন দক্ষতা বাড়াবে, অর্থের সাশ্রয় ঘটাবে, আন্তঃসার্ভিস প্রশাসনিক পরিবেশ উন্নত করবে।
বর্তমানে ট্রাই-সার্ভিস ইনস্টিটিউটে- ন্যাশনাল ডিফেন্স একাডেমি (এনডিএ)- মৌলিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার পর নির্বাচিত অফিসারেরা ১০-১২ বছর পর ডিফেন্স সার্ভিসেস স্টাফ কলেজে ট্রাই-সার্ভিস কোর্স করেন। তারপর অফিসারেরা উচ্চতর কমান্ড কোর্স সম্পন্ন করেন। এটি বাহিনী-নির্দিষ্ট হলেও তাতে অন্য দুই বাহিনীর প্রতিনিধিরাও থাকেন।

অনেক অফিসার হায়দরাবাদের কলেজ অব ডিফেন্স ম্যানেজমেন্টে ট্রাই-সার্ভিস কোর্সের জন্যও মনোনীত হন। এখানে উচ্চতর কমান্ডের জন্য সমান্তরাল কোর্স করা হয়। ২৮-৩০ বছর চাকরি করার পর অল্প কয়েকজন নির্বাচিত অফিসারকে দিল্লির ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের ট্রাই-সার্ভিস কোর্সের জন্য মনোনীত করা হয়।
এছাড়া বিভিন্ন বন্ধুপ্রতীম দেশে বিভিন্ন কোর্সেও অনেকে অংশ নেন।
এক নৌ কর্মকর্তা বলেন, ডিফেন্স সার্ভিসেস স্টাফ কলেজ কোর্স সম্পূর্ণ করার পর যেকোনো বাহিনরি অফিসারই তার নিজের বাহিনীর বাইরেও তার দিগন্ত প্রসারিত করতে পারেন।
দি প্রিন্টকে এক সিনিয়র সেনা অফিসার বলেন, যৌথ প্রশিক্ষণ কমান্ড তিন বাহিনীর সব সদস্যের প্রশিক্ষণ একীভূত করতে সহায়ক হবে।

তিনি বলেন, এতে করে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউসও সমন্বিত হবে।
তিনি বলেন, উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে একই বিমান পরিচালনার জন্য বর্তমানে বিমানবাহিনী ও সেনাবাহিনী আলাদা আলাদা নিয়ম অনুসরণ করে। যৌথ প্রশিক্ষণ কমান্ড প্রতিষ্ঠিত হলে তারা নিজ নিজ বাহিনীর মানসিকতা ছেড়ে ফেলে অভিন্ন স্বার্থের দিকে মনোনিবেশন করতে পারবে।
আরেক সেনা অফিসার বলেন, প্রথম থিয়েটার কমান্ডের সাফল্যের ওপর নির্ভর করছে যৌথ কমান্ড টিকে থাকা।

দি প্রিন্ট


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us