কী হচ্ছে সৌদি আরবে?
কী হচ্ছে সৌদি আরবে? - ছবি : সংগ্রহ
সৌদি আরবে এখন চাঞ্চল্যকর সব ঘটনা ঘটছে। কেন এসব ঘটছে আর এর পরিণতিই বা কী- এসব নিয়ে নানা বিশ্লেষণ হচ্ছে। সামরিক কর্মকর্তাসহ আটক ২৯৮ জন সরকারি কর্মচারীকে দুর্নীতি দমন সংস্থা নাজাহা বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত করবে বলে জানিয়েছে। নাজাহা টুইট করেছে, সংস্থাটি এই ২৯৮ জনকে ১০১ মিলিয়ন ডলারের ঘুষ, আত্মসাৎ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অপরাধে অভিযুক্ত করছে।
গত ৬ মার্চ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা সৌদি রাজপরিবারের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের এবং বিপুলসংখ্যক সামরিক-বেসামরিক আমলাকে গ্রেফতারের কথা জানিয়েছে। এটি দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিকে আবার বৈশ্বিক এজেন্ডার সামনে ফিরিয়ে এনেছে।
২০১৭ সালে মোহাম্মদ বিন সালমানকে ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে নিয়োগের পরে, আমরা রাজপরিবারের অভ্যন্তরীণ প্রতিদ্বন্দ্বীদের ভয় দেখানোর বিষয়টি ধারাবাহিকভাবে প্রত্যক্ষ করেছি। এ সময় অনেক সিনিয়র প্রিন্সকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এই অভিযানে যারা গ্রেফতার হয়েছিলেন তাদের বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযানকে ‘আইনি ব্যবস্থা’ হিসেবে দেখানো হয়।
এ সময় সৌদি মন্ত্রী, প্রিন্স ও ব্যবসায়ীসহ আল ওয়ালিদ বিন তালালের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আটক করার কথা বলা হয় দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অংশ হিসেবে। তাদের কয়েক মাস ধরে রিয়াদের রিটজ-কার্লটন হোটেলে আটক রাখা হয়েছিল। আর তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারের পরোয়ানা দুর্নীতি দমন কমিশন জারি করেছিল।
অন্য দিকে, এবার গত শুক্রবারের অভিযানে গ্রেফতারকৃতদের পরিচয় এবং তাদের ওপর আরোপিত অভিযোগে দেশটির ঘরোয়া রাজনীতিতে মারাত্মক সঙ্কটের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে সৌদি রাজবংশের অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব, সাবেক বাদশাহ আবদুল আজিজের ছেলে আহমদ বিন আবদুল আজিজ এবং সাবেক ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন নায়েফও রয়েছেন। তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের (এমবিএস) প্রত্যক্ষ আদেশে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের চেষ্টা এবং বিশ্বাসঘাতকতার যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা অতীতে গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের চেয়ে একেবারে আলাদা।
এ দুই হাইপ্রোফাইল ব্যক্তি ছাড়াও স্থলবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান এবং আহমদ বিন আবদুল আজিজের ছেলে নায়েফ বিন আহমদকে গ্রেফতার করা হয়েছে; মোহাম্মদ বিন নায়েফের ভাই নওয়াওয়াফ এবং ২০ জনেরও বেশি উচ্চপদস্থ প্রিন্স এবং সেনাকর্মকর্তার গ্রেফতারের বিষয়টি একটি নতুন ‘আন্তঃরাজপরিবার শুদ্ধি অভিযান’ বলে মনে হয়।
সৌদি রাজনীতির দিকে গভীরভাবে তাকালে মনে হবে, গ্রেফতারের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো দেশের ঘরোয়া রাজনীতির সাথে এবং বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক পরিবর্তনের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত।
mrkmmb@gmail.com