১৬৭ জন করোনা রোগী উধাও!
১৬৭ জন করোনা রোগী উধাও! - সংগৃহীত
বিশ্বজুড়ে এখন করোনাভাইরাসের আতঙ্ক। দেশে দেশে চলতে এই রোগ প্রতিরোধের জোর প্রয়াস। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো এতে আক্রান্তদের আলাদা রেখে চিকিৎসা করা। কিন্তু এখানেই বিপত্তি বেধেছে। অনেক দেশেই করোনা ভাইরাসে আক্রান্তরা কোয়ারেন্টাইনে থাকতে চাচ্ছে না। সুযোগ পেলেই পালাচ্ছে। এটা বাংলাদেশে যেমন ঘটছে, প্রতিবেশী ভারতেও ঘটছে।
ভারতের একটি পত্রিকা জানাচ্ছে, সোমবার পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১৫১ জন। এদের মধ্যে ২৫ জন বিদেশি। এই অবস্থায় জরুরিকালীন তৎপরতায় সদ্য বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করছে দেশটির সব রাজ্য। পঞ্জাবের স্বাস্থ্যদফতরও সেই কাজই করছে। সেখানেই তালিকা মেলাতে গিয়ে দেখা গেছে সদ্য বিদেশে থেকে ফেরা ১৬৭ জনকে খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না। সন্দেহ করা হচ্ছে তারা প্রত্যেকেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার জন্যে পুলিশের দুটি বড় দলকে কাজেও লাগানো হয়েছে। তাদের মধ্যে মাত্র ২৯ জনের সন্ধান মিলেছে। শহরের সিভিল সার্জেন ডা. রাজেশ বাগ্গা এ কথা জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, বিদেশ থেকে ভারতে ফিরেছেন, এমন লোকজনদের একটি তালিকা পঞ্জাবের মেডিক্যাল কর্মকর্তারা পেয়েছিলেন। তাদের মধ্যে কোনো সংক্রমণ রয়েছে কিনা, তা যাচাই করতে ওই ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার কাজ করছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। বাগ্গা জানিয়েছেন, বিদেশ থেকে আসা লোকজনদের খোঁজ করার জন্য দুটি দলকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশকে ১১৯ জনের খোঁজ করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। তারা এখনও পর্যন্ত ১২ জনকে খুঁজে পেয়েছে। অন্য দল ছিল স্বাস্থ্য বিভাগের। তাদের ৭৭ জনকে খোঁজ করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। এই দল মাত্র ১৭ জনের সন্ধান পেয়েছে।
পত্রিকাটি জানায় যে তিনি বলেছেন, 'পাসপোর্টে ভুল ঠিকানা বা টেলিফোন নম্বর থাকার কারণেই তাদের সন্ধান করা যায়নি। আমাদের দল সক্রিয় রয়েছে এবং ওই ব্যক্তিদের খোঁজ চালাচ্ছে। খুব শিগগিরই খুঁজে বের করা যাবে।' মারণ-ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রুখতে লুধিয়ানা রেল স্টেশনে জীবানুমুক্তকরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
করোনাঝুঁকি : বিদেশফেরত ৩৮০০ জনকে খুঁজছে ফরিদপুরের স্বাস্থ্য বিভাগ
ফরিদপুর সংবাদদাতা
ফরিদপুরে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ৩ হাজার ৮৩৫ জন বিদেশফেরত যাত্রীর তালিকা নিয়ে মাঠে নেমেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। যাদের স্বউদ্যোগে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা থাকলেও তারা সে নির্দেশ মানছেন না। বরং করোনাভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা নিয়েই তারা ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
গত ১ মার্চ হতে ১৫ মার্চ পর্যন্ত এরা বিদেশ থেকে এসেছেন, যাদের বেশিরভাগই ভারত থেকে আসা। ইমিগ্রেশনের চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা চলে গেছেন নিজ নিজ গন্তব্যে। এসব বিদেশ ফেরত লোকদের খুঁজে খুঁজে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে। গত মঙ্গলবার রাতে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার জানান, ইমিগ্রেশন পুলিশের পক্ষ থেকে ফরিদপুরের স্বাস্থ্য অধিদফতরের কাছে এ তালিকা সরবরাহ করা হয়েছে। এদেরকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখার নির্দেশনা রয়েছে।
জেলা প্রশাসক জানান, ফরিদপুরে এখন পর্যন্ত ১১ জনকে বিদেশফেরতকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। তবে করোনা নিয়ে আতঙ্ক না ছড়িয়ে যার যার অবস্থান থেকে সবাইকে সচেতন থাকার পরামর্শ দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা: ছিদ্দিকুর রহমান, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা: সাইফুর রহমান, পুলিশ সুপার আলিমুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, বুধবার সকালে যোগাযোগ করা হলে সিভিল সার্জন ডা: ছিদ্দিকুর রহমান জানান, জেলায় এখন পর্যন্ত ২০ জন বিদেশফেরত যাত্রী স্বউদ্যোগী হয়ে তাদের সাথে যোগাযোগ করেছেন। যারা সকলেই নিজ উদ্যোগেই হোম কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। এদের মধ্যে শহরের ঝিলটুলীর তিনজন ইতিমধ্যে সংক্রমণ ঝুঁকির সময়সীমা অতিক্রম করায় তাদেরকে মুক্তভাবে চলাফেরার অনুমতি দেয়া হয়েছে। জেলা শহরের বাইরে এখন পর্যন্ত চরভদ্রাসনে ১০ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন বলে তিনি জানান।
এদিকে, করোনাভাইরাসসহ বিভিন্ন বিষয়ে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো: মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে আজ বুধবার সকালে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকারসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।