সেনাবাহিনীর শক্তি : চীন-ভারতের অবস্থান
সেনাবাহিনীর শক্তি : চীন-ভারতের অবস্থান - সংগৃহীত
প্রায় ১৪ লাখ সদস্য নিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনী এখন বিশ্বের বৃহত্তম স্থল বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। চীন তার নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী ও প্রযুক্তির ওপর জোর দিয়ে সেনাবাহিনীর শক্তি অর্ধেক কমিয়ে আনার ফলে দেশটিকে পেছনে ফেলে শীর্ষে চলে এসেছে ভারত।
ডিফেন্স অব জাপান ২০১৯ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চীন এখন বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম স্থল বাহিনীর অধিকারী। প্রথম দুটি স্থানে রয়েছে যথাক্রমে ভারত ও উত্তর কোরিয়া। উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনীর সদস্য প্রায় ৯ লাখ ৮০ হাজার।
পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) সবসময়ই বিশ্বের বৃহত্তম সেনাবাহিনী হিসেবে গণ্য হতো। তাদের বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ছিল প্রায় ২০ লাখ।
চীনা আধুনিকায়নের দিকে নজর রেখে ভারতও ওই পথ ধরার কথা ভাবছে। তবে তারা রয়েছে এই পথের প্রারম্ভিক পর্যায়ে।
চীন যখন তার বাহিনীকে ব্যাপকভাবে আধুনিকায়ন করার পদক্ষেপ গ্রহণ করছে, তখন বিরাট সংখ্যার বাহিনীকে আধুনিকায়নের প্রক্রিয়াটি আর্থিক সঙ্কট ও অব্যাহতভাবে পেনশন বাড়ার কারণে স্থবির হয়ে রয়েছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনী চারটি পরিবর্তনবিষয়ক সমীক্ষা চালিয়েছে। তারা তার বাহিনীকে ছোট করে ১৫ লাখে নামিয়ে আনতে চাচ্ছে। এই পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন করতে ৫ বছর লাগবে।
চীনের প্রতিশ্রুতিশীল সূচনা
চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ২০১৫ সালে তাদের সেনাবাহিনীকে আধুনিক যুদ্ধকৌশলে পারদর্শী করে গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করেন।
ওই বছরের নভেম্বরেই নজিরবিহীন কার্যকম শুরু করে। তারা নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর ওপর গুরুত্বারোপ করার পাশাপাশি সাইবার, মহাকাশ, ভবিষ্যতের অস্ত্রশস্রসহ প্রযুক্তির ওপর জোর দেয়।
জাপানি সামরিক নথিতে বলা হয়, ১৯৮৫ সাল থেকে চীন অব্যাহতভাবে তার সামরিক বাহিনীকে আধুনিকায়ন করতে চাচ্ছে নানা ধরনের সংস্কার কার্যক্রমের মাধ্যমে। তারা তাদের অপারেশনাল সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দিচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন তার ক্ষেপণাস্ত্র বাহিনীকে দ্রুততার সাথে আধুনিকায়ন করছে।
অর্ধেক কমিয়ে ফেলা হয়েছে চীনা সেনাবাহিনীর আকার
২০২০ সালের জানুয়ারিতে রাষ্ট্রায়ত্ত সিনহুয়া বার্তা সংস্থা খবর প্রকাশ করে যে চীন তার স্থলভিত্তিক পিএলএর আকার অর্ধেক কমিয়ে এনে তার নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীকে শক্তিশালী করবে। সামরিক বাহিনীকে ব্যাপকভিত্তিক আধুনিক বাহিনীতে পরিণত করতে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেয়া হয় যে পিএলএ-এ ঐতিহ্যগতভাবেই সেনাবাহিনীর আধিপত্য থাকলেও তা হ্রাস করে নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, রকেট বাহিনী ও কৌশলগত সাপোর্ট বাহিনী (সাইবার যুদ্ধের মতো ক্ষেত্র) গড়ে তোলার ওপর জোর দেয়া হবে।
সাংহাইভিত্তিক সামরিক বিশ্লেষক নি লেক্সিঙের উদ্ধৃতি দিয়ে পত্রিকাটিতে বলা হয়, এত দিন চীনা বাহিনী মূলত দেশে আত্মরক্ষামূলক কাজে নিয়োজিত থাকার জন্য গড়ে তোলা হচ্ছিল। এখন চীনা বাহিনীকে বিমান, মহাকাশ ও সাইবার স্পেসে শক্তিমান হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এতে করে স্থল বাহিনীর গুরুত্ব হ্রাস পাচ্ছে।
ভারতীয় সামরিক বাহিনী কয়েক বছর ধরে সাইবার ও মহাকাশ কমান্ড পরিচালনার কাজ করছে। ভবিষ্যতের প্রয়োজন মেটানোর মতো অস্ত্র হাতে পাওয়ার ক্ষেত্রে ভারত অনেক পিছিয়ে আছে। আর চীন ও যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়ার মতো দেশগুলো অনেকটাই এগিয়ে আছে।
দি প্রিন্ট