করোনায় বন্ধ উত্তর-পূর্ব ভারত
করোনায় বন্ধ উত্তর-পূর্ব ভারত - সংগৃহীত
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে প্রতিবেশী দেশগুলো সাথে থাকা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
প্রতিবেশী ভুটানে এক পর্যটক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে শনাক্ত হওয়ার পর ওই অঞ্চলের আটটি রাজ্যের সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভুটানে যাওয়া ওই পর্যটকের দেহে কোভিড-১৯ ভাইরাস পাওয়া যায়। আসাম থেকে ভুটানে যাওয়ার পর ৭৬ বছর বয়স্ক ওই মার্কিন পর্যটকের দেহে ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে।
ওই পর্যটক ভুটান যাওয়ার আগে এক সপ্তাহ আসামে ছিলেন। সেখানে তিনি ব্রহ্মপুত্র নদীতে কয়েক দিন অবকাশ যাপন করেন। তারপর তিনি ভুটান যান।
আসামের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছেন, ওই পর্যটকের সংস্পর্শে এসেছিল অন্তত ৪০০ লোক। তাদেরকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। ওই পর্যটক গৌহাটির যে হোটেলের সেকেন্ড ফ্লোরে ছিলেন, সেটিকেও বন্ধ করে পরীক্ষা চালানো হচ্ছে।
আসাম সরকার ভুটান ও বাংলাদেশ সীমান্তের সব স্থলবন্দরে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে যাওয়া লোকজনকে পরীক্ষা করতে সেখানে চিকিৎসক দলও গঠন করেছে।
মিয়ানমারের সাথে সীমান্ত থাকা মিজোরাম ও মনিপুর রাজ্যে আন্তর্জাতিক সীমান্ত বন্ধ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের সাথে থাকা মিজোরাম সীমান্তও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
ভারতে এখন পর্যন্ত ৩০ জনের বেশি ভাইরাসবাহী লোককে শনাক্ত করা হয়েছে। আর ২৯ হাজার লোককে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
ভারতের উত্তর-পূর্ব এলাকাকে নাজুক মনে করা হয। এর ৯৮ ভাগ সীমান্ত চারটি দেশের সাথে। বেশির ভাগ সীমান্ত পাহাড়ি ও প্রবেশসাধ্য। এখান দিয়ে লোকজন ও নিষিদ্ধ পণ্য পারাপার হয়ে থাকে। ‘ফ্রি মুভমেন্ট রেজিম’ ভারত ও মিয়ানমারের নাগরিকদেরকে সীমান্তের অপর পাড়ের ১৬ কিলোমিটার পর্যন্ত প্রবেশের সুযোগ দিয়েছে। সোয়াইন ফ্লুর মতো অনেক ঘটনা ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে দেখা গিয়েছিল। ধারণা করা হয়, সেগুলো এসেছিল মিয়ানমার থেকে।
মিয়ানমারের সাথে থাকা ৩৯৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তও বন্ধ করে দিয়েছে মনিপুর। রাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক নির্দেশে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস বিস্তারের আশঙ্কায় সরকার আন্তর্জাতিক সীমান্ত দিয়ে লোকজনের চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
চীন, মিয়ানমার ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো থেকে খাদ্য সামগ্রী আমদানিও বন্ধ করে দিয়েছে মনিপুর।
সিকিম ও অরুনাচল প্রদেশের সাথে রয়েছে চীন সীমান্ত। করোনাভাইরাস ঠেকাতে এখান দিয়ে বিদেশীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। চীনের সাথে বাণিজ্য হতো নাথু লা সীমান্ত দিয়ে। এটিও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এদিকে ভারতের উত্তর-পূর্ব এলাকার সব বিমানবন্দরে পরীক্ষার সরঞ্জাম বসানো হয়েছে।
দি ডিপ্লোম্যাট