ভারতের সাথে সীমান্ত বিরোধ : নেপালি জরিপ দলে সেনা সদস্য
ভারতের সাথে সীমান্ত বিরোধ - সংগৃহীত
ভারত কালাপানিকে তার সীমান্তের অভ্যন্তরে দেখিয়ে নতুন রাজনৈতিক মানচিত্র প্রকাশ করার পর থেকে নেপাল সরকার মানচিত্র আগ্রাসন প্রশ্নে ভারতের ওপর ফলপ্রসূ চাপ প্রয়োগ করতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য নেপাল সরকারকে প্রচুর সমালোচনা শুনতে হয়েছে।
কে পি শর্মা অলির সরকার প্রকাশ্যে হয়তো তেমন কিছু বলেনি, তবে কাঠমান্ডু পোস্ট জানতে পেরেছে যে বিরোধপূর্ণ এলাকা নিয়ে বিশেষ নজর দিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও নেপাল সেনাবাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে দুটি দল নীরবে নেপাল সীমান্ত জরির করছে।
এক বছর আগে সীমান্তজুড়ে তৎপরতা নজরদারি করতে নেপাল সেনাবাহিনীর সদরদফতরে আলাদা প্রতিষ্ঠান গঠন করেছে। তবে নভেম্বরে ভারতের নতুন রাজনৈতিক মানচিত্র প্রকাশ করার পর ভারত ও চীন সীমান্ত পরীক্ষার জন্য দুটি স্বতন্ত্র দল গঠন করে বলে নেপাল সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ভারত সীমান্তে যে দলটিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, তার নেতৃত্ব দিচ্ছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব যজ্ঞ বাহাদুর হামাল। দলটি ইতোমধ্যেই চার দফা দক্ষিণ সীমান্ত পরিদর্শন করেছৈ এবং বুধবার সুদূরপশ্চিম প্রদেশে যাচ্ছে চূড়ান্ত অনুসন্ধানের জন্য। এ তথ্য জানিয়েছেন সার্ভে ডিপার্টামেন্টের মহাপরিচালক প্রকাশ যোশি। তিনিও আছেন এই দলে।
কারিগরি দলের দক্ষিণ সীমান্ত পরিদর্শনের পর আরেকটি দল মে মাসে চীনের সাথে থাকা উত্তর সীমান্ত পরিদর্শনে যাবে। এই দলের নেতৃত্বে থাকবেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চীনা বিভঅগের দায়িত্বে থাকা যুগ্ম সচিব।
চীনের সাথে সীমান্ত নিয়ে তেমন বিরোধ না থাকলেও ভারতের সাথে সীমান্ত নিয়ে অনেকবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নেপাল। বেশ কয়েক দফা বৈঠক ও আলোচনার সত্ত্বেও দুই দেশ এখন পর্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ কোনো সমাধান পায়নি।
নেপাল ও ভারত যৌথভাবে তাদের সীমান্ত নিয়ে স্ট্রিপ মানচিত্রের ১৮২টি শিট তৈরী করেছ। এতে সুস্তা ও কালাপানির মতো বিরোধীপূর্ণ এলাকাগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। গত বছর নরেন্দ্র মোদি সরকার জম্মু ও কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল করার পর নতুন যে রাজনৈতিক মানচিত্র প্রকাশ করে তাতে কালাপানিকে ভারতের অন্তর্ভুক্ত দেখানোর পর নতুন করে বিরোধের সৃষ্টি হয়।
প্রায় ৪০ বছর পর সীমান্ত নজরদারিতে নেপাল সেনাবাহিনলি ভূমিকা পুনর্বহাল করা হলো। গত বছরের আগস্টে সার্ভে অ্যান্ড বাউন্ডারি মনিটরিং ডিরেক্টরেট গঠনের সময় সেনাসদস্যদের এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পঞ্চায়েত আমলে সীমান্ত-সম্পর্কিত ইস্যুতে নেপাল সেনাবাহিনীর ভূমিকা থাকত। ১৯৯০ সালে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পর তাদের ভূমিকা প্রত্যাহার করা হয়।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সান্ত বাহাদুর সুনার সীমান্ত-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে নজরদারি করার জন্য নেপাল সেনাবাহিনীতে নিজস্ব প্রতিষ্ঠান গঠনের কথা স্বীকার করেছেন।
নেপাল সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বিজ্ঞান দেব পান্ডে বলেন, সরকারের সিদ্ধান্তে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিবের নেতৃত্বাধীন দলে আমাদের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এছাড়া আমরা আলাদাভাবে নিয়মিতি ভিত্তিতে সীমান্তে নজরদারি চালানোর জন্য একটি দল গঠন করেছি।
সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, নেপাল সেনাবাহিনী কেবল সীমান্ত পরিদর্শন ও পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছে। তারা দক্ষিণ ও উত্তর সীমান্ত পাহারায় নিয়োজিত নয়। সীমান্ত পাহারার দায়িত্ব এখনো সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর ওপর ন্যস্ত।
কাঠমান্ডু পোস্ট