পানি পানেই মুক্তি মিলতে পারে পাইলস রোগের!
পানি পানেই মুক্তি মিলতে পারে পাইলস রোগের! - ছবি : সংগ্রহ
বাপ-দাদার আছে তাই আপনারও অর্শ বা পাইলস হবে, এই ধারণা ভুল। বরং মলত্যাগের প্রক্রিয়া মসৃণ হলেই অর্শর সমস্যায় ভুগতে হবে না। যন্ত্রণাদায়ক অর্শ আপনার গোটা দিন বরবাদ করে দিতে পারে। মূলত কোষ্ঠকাঠিন্যের রোগীদেরই পাইলসের সমস্যা দেখা দেয়। কারণ, যারা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন, তাদের মলত্যাগের সময়ে অকারণ বেগ প্রদানের বদভ্যাস রয়েছে। এটি ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাছাড়া এই রোগের নিরাময় নেই বললেই চলে।
পাইলস হলে রক্তক্ষরণ হবে, কিন্তু এক্ষেত্রে ব্যথা হবে না। এই সময়তেই ডাক্তারের পরামর্শ বা আগাম সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। যদি দেখেন যে একটি মাংসপিন্ড মলদ্বার থেকে বাইরে বেরিয়ে এসেছে, তাহলে বুঝবেন আপনি সেকেন্ড ডিগ্রি পাইলসে ভুগছেন। এই সমস্যা বাড়তে থাকলে ব্যথার মাত্রাও বাড়তে থাকে।
আগাম সাবধান হতে কী করবেন? মেডিসিনের ডাঃ পূর্ণব্রত গুঁই জানিয়েছেন, এই রোগ শুধুমাত্র মানুষেরই হয়ে থাকে। পাইলসের ভয় থেকে মুক্ত থাকার জন্য খেয়াল রাখা উচিত, মল যেন কিছুতেই শক্ত না হয়। এর জন্য ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। প্রচুর জল খাওয়া উচিত। এই রোগ একেবারেই জেনেটিক নয়। যেহেতু যে কোনো বাড়িতে খাদ্যাভ্যাস একইরকম থাকে, মূলত সেই কারণেই বংশের পরবর্তী প্রজন্মেরও পাইলস হয়ে থাকে।
ডাঃ গুঁই বলেন, “মলদ্বারের শিরা ফুলে থাকাই পাইলস। শিরা ফুলে থাকলে মলত্যাগের সময় সেখানে ঘষা খায়। কেটে যেতে পারে, একই সঙ্গে ব্যথা হয়। কাজেই, মল যদি নরম হয় তাহলে এই সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে না।”
আপনি যদি কোষ্ঠকাঠিন্যের রুগী হন, তাহলে সেই রোগ দ্রুত সারিয়ে তোলার প্রয়োজন রয়েছে। ডাঃ গুঁইয়ের মতে, অনেক সময়ে অতিরিক্ত মেদবৃদ্ধি, ভারী জিনিস তোলা বা গর্ভাবস্থার কারণেও পাইলসের শিকার হতে পারেন। মনে রাখবেন,অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতার লক্ষণও দেখা দিতে পারে। তাই রক্তের অতিরিক্ত ক্ষরণ হতে থাকলে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তার দেখান। অসুখের মাত্রা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে গেলে অবশ্য শল্যচিকিৎসা ছাড়া উপায় নেই।
তবে ডাঃ গুঁই জানিয়েছেন, লাইফস্টাইল বদলে ফেললে এই রোগের মুখোমুখি হতে হবে না। অনিয়ম একেবারেই করা চলবে না। মলকে নরম রাখতে পানিই একমাত্র সমাধান। এছাড়াও ফাইবারযুক্ত ফল, সবুজ শাক-সবজি, তুষযুক্ত দানাশস্য, কলা বেশি খাবেন। রাতে রুটি খেতে পারেন। শুকনো মরিচ একেবারেই খাবেন না। এছাড়া কফি ও তেল-ঝালের রান্না বাতিল করুন। ইসবগুলের ভুষি, ল্যাক্টলোজ খেতে পারেন।
এছাড়া কিছু ওষুধ আছে যা সাময়িকভাবে আরাম দেবে, তবে রোগ নির্মূল করবে না। তাই বেশি করে পানি খান ও ফাইবার জাতীয় খাবার খান। যা আপনার মলকে অনেকটা নরম করবে। একইসঙ্গে সহজে মলত্যাগের বেগ আসবে। উল্লেখ্য, অবশ্যই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত।
সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস