সাধারণ ফ্লুর সাথে করোনার মিল-অমিল
সাধারণ ফ্লুর সাথে করোনার মিল-অমিল - সংগৃহীত
করোনা ভাইরাসের থাবায় অস্থির বিশ্ব। কোনোই কূল-কিনারা পাওয়া যাচ্ছে না। করোনাভাইরাসের প্রাথমিক উপসর্গগুলো একদম ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো। হালকা জ্বর, সর্দি, কাশি, একটু শ্বাসকষ্ট বা বুকে চাপ লাগা ইত্যাদি। ঠাণ্ডা লাগা, সর্দি-কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট, মাথা যন্ত্রণা। সাধারণ সময়ে এ সব উপসর্গ মানে খুব বেশি হলে ভাইরাল ফ্লুয়ের কথাই ভাবা হতো কিছু দিন আগে পর্যন্ত। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলেছে। এই সব উপসর্গ দেখা দিলেই করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) থাবা বসাল কি না নিয়ে তা নিয়ে শুরু হচ্ছে নতুন চিন্তা।
জাতীয় বক্ষব্যাধি ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসক ড. কাজী সাইফুদ্দিন বেননুর বলছেন, “কোভিড-১৯ ভাইরাসটির কারণে উপসর্গ দেখা দিচ্ছে কিনা সেটা বুঝতে গলার ভিতরে, নাকের গোড়ার কাছ থেকে তুলা দিয়ে লালা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়। আর যে পরীক্ষাটি করা হয় সেটির নাম হল ‘রিয়াল টাইম পিসিআর’ বা রিয়াল টাইম পলিমারেস চেইন রিঅ্যাকশন।”
তিনি বলছেন, লালা ছাড়া শরীর থেকে আর কোনো নমুনায় এই ভাইরাস ধরা পরে না এবং জ্বর বা কাশির জন্য সেসব চিকিৎসা দেয়া হয় সেটাই দেয়া হয়। সমস্যা হল এই রোগের অ্যান্টিবায়োটিক এখনো নেই।
এই দুই ধরনের জ্বরের উপসর্গে এতটাই মিল যে চিকিৎসকরাও হিমশিম খাচ্ছেন রোগ নির্ণয়ে। অনেক সময়ই দেরি হচ্ছে অসুখ ধরা পড়তে। তাই রোগ নির্ণয়ের সুবিধার জন্যই জেনে রাখা ভালো, এই দুই জ্বরের ধরন কেমন। মিল কোথায়। অমিলই বা কী।
সাধারণ ফ্লু ও করোনার মধ্যে মিল
• দুই ধরনের ফ্লু-ই ভাইরাসবাহিত।
• দুই রোগই সংক্রমণজনিত।
• মানবশরীর থেকেই ছড়িয়ে পড়তে সক্ষম।
• দুই ধরনের ফ্লু-ই সময় মতো সচেতন না হলে বা বাড়াবাড়ি আকার ধারণ করলে নিউমোনিয়ার দিকে বাঁক নিতে পারে।
পার্থক্য কোথায়
• সাধারণ ফ্লু ও করোনা দুই-ই ভাইরাসঘটিত অসুখ হলেও দুই অসুখের ভাইরাস সমগোত্রীয় নয়। সাধারণ ফ্লু ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের প্রকোপে হয় আর কোভিড-১৯ হয় করোনা গ্রুপের ভাইরাসের কারণে।
• করোনা ভাইরাস ছড়ায়ও অনেক দ্রুত। তুলনায় ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস ছড়ায় অনেক ধীরে।
• সাধারণ ফ্লুয়ের বেলায় ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার ২-৩ দিনের মধ্যে অসুখ দেখা দেয়। করোনার বেলায় ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার ৭-১৪ দিনের মধ্যে অসুখ দেখা দেয়।
• সাধারণ ফ্লুয়ের বেলায় জ্বর ১০৩-১০৪ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠে যেতে পারে, তবে ওষুধের কাজ শুরু হলে তা নামতেও শুরু করে। করোনার বেলায় জ্বর প্রবল হলেও নামতে চায় না সহজে। ওষুধও কাজ করে না।
• সাধারণ ফ্লু বোঝার জন্য কোনো আলাদা করে পরীক্ষার দরকার পড়ে না। কিন্তু করোনা কি না জানতে গেলে পলিমারেস চেন রিঅ্যাকশন বা পিসিআর পরীক্ষা করা হয়।
• সাধারণ ফ্লুয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ভ্যাক্সিন রয়েছে। কিন্তু করোনা রোধে তেমন কোনো ভ্যাকসিনের সন্ধান এখনও পাননি গবেষকরা।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা