সিপিইসির লাভ-ক্ষতি

ইকরাম সেহগাল | Feb 25, 2020 09:25 pm
সিপিইসির লাভ-ক্ষতি

সিপিইসির লাভ-ক্ষতি - সংগৃহীত

 

চীন পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (সিপিইসি) হলো পাকিস্তানের জন্য একগুচ্ছ অবকাঠামো প্রকল্প (এগুলোর বর্তমান আকার ৪৫ বিলিয়ন ডলার, প্রত্যাশিত আকার ৬২ বিলিয়ন ডলার)। গোয়াদর বন্দরকে এই কানেকটিভিটি পরিকল্পনার কেন্দ্রবিন্দু করা হয়েছে। ২০১৬ সালের নভেম্বরে শুরু হওয়া এই পরিকল্পনা অনুযায়ী চীনা পণ্য স্থলপথে এনে এখান থেকে জাহাজে করে আফ্রিকা ও পশ্চিম এশিয়ায় পরিহন করা হবে।

এছাড়া গোয়াদর বন্দরকে মধ্য এশিয়া ও পূর্ব দিকে চীনা বন্দরগুলোর সাথে সংযুক্ত করে কাশগড়ের সাথে যুক্ত করতে ১১ বিলিয়ন ডলারের পরিবহন প্রকল্প রয়েছে। ইস্টার্ন এলাইনমেন্টের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে বিদ্যমান ১১৫২ কিলোমিটারের করাচি-লাহোর মহাসড়কটি আধুনিকায়ন করে একে আধুনিকায়ন করা কারাকোরাম হাইওয়ের সাথে যুক্ত করা হবে। এটিই খুনজিরাব পাসে চীনে প্রবেশ করবে। অন্য দিকে ওয়েস্টার্ন অ্যালাইনমেন্ট গোয়াদরকে যুক্ত করবে ডিআই খঅন, হাসান আবদাল ও কেকেএইচের সাথে।

জ্বালানি অবকাঠামোর মধ্যে রয়েছে ৩৩ বিলিয়ন ডলারের বিদ্যুৎ প্রকল্প ও ট্রান্সমিশন লাইন। বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে মূলত জীবস্ম জ্বালানি থেকে। তবে পানি, সৌর ও বায়ু বিদ্যুতের ব্যবস্থা থাকবে। প্রথম দিকে গ্রহণ করা প্রকল্পগুলো থেকে ৪ হাজার ও ৬ হাজার মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ ২০১৮-১৯ সময়কালেই শুরু হয়েছে। পাকিস্তানের বিভিন্ন অংশে ১০টি বিশেষ অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠা করা হবে। প্রথম দফায় প্রতিষ্ঠা করা হবে ফয়সালাবাদ, হাত্তার ও ধাবেজিতে। চীনা বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোকে কর সুবিধা দেয়া হবে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. আবদুল হাফিজ শেখ বলেন, চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) ও সিপিইসির উদ্দেশ্য হচ্ছে ১. চীনের উদ্বৃত্ত সামর্থ্য ও প্রভাব এশিয়া ও ইউরোপের অংশবিশেষে সম্প্রসারিত করা। ২. পশ্চিম চীনকে উন্নত করা, একে চীনা মূল ভূখণ্ডের সমান অবস্থানে নিয়ে যাওয়া এবং জিনজিয়াং, তিব্বত ও কিনগাইয়ের জন্য পরিপূরক ওয়েস্টার্ন ডেভেলপমেন্ট প্লান বাস্তবায়ন করা। ৩. মালাক্কা প্রণালি ও দক্ষিণ চীন সাগরের বর্তমান জাহাজ চলাচল রুটের একটি বিকল্প সৃষ্টি করা।

চীনা তেলের ৬০ ভাগ আসে মধ্যপ্রাচ্য থেকে। এগুলোর বেশির ভাগই দেশে প্রবেশ করে তিয়ানজিন ও সাংহাইায়ের মতো পূর্বাঞ্চলীয় বন্দর হয়ে। এই রুটের বর্তমান দূরত্ব হলো ১১ হাজার কিলোমিটার। আর গোয়াদর থেকে কাশগড়ের দূরত্ব মাত্র তিন হাজার কিলোমিটার এবং সেখান থেকে তিয়ানজিনের দূরত্ব চার হাজার কিলোমিটার। ফলে মোট দূরত্বও বর্তমান রুটের মোট পথ থেকে কম। এতে জাহাজ ভাড়া কমবে, আবার মাত্র একটি রুটের ওপর নির্ভর করে থাকার ঝুঁকিও থাকবে না।

সিপিইসির সাথে জড়িত আছে ব্যয়। এর সাথে যোগ হবে ভূমি, সরঞ্জাম, সুদ ও কর্মী ব্যয়। এর ফলে যে সুবিধা পাওয়া যাবে তা সামান্য না হয়ে বিশাল হবে, তা কিভাবে নিশ্চিত করা যাবে? প্রকল্প যদি হয় ব্যয়বহুল, সেগুলো বাস্তবায়ন যদি হয় অদক্ষ, তাদের সামর্থ যদি পুরোপুরি ব্যবহার করা না হয়, অবশিষ্ট অর্থনীতির সাথে তাদের সম্পর্ক যদি ন্যূনতম হয়, এবং সেগুলো যদি রাজনৈতিক মতানৈক্য সৃষ্টি করে, তবে নিট লাভ হয় অতি সামান্য কিংবা এমনকি নেতিবাচকও হতে পারে।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us