আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার জয়
আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার জয় - ছবি : ইএসপিএনক্রিকইনফো
প্রায় ছয় শ' রান। মুশফিকের হার না মানা ডাবল সেঞ্চুরি, অধিনায়ক মুমিনুলের সেঞ্চুরি, দুই ব্যাটসম্যানের হাফ সেঞ্চুরি, চারটি বড় জুটি, নবাগত নাঈমের ৯ উইকেট, তাইজুলের ৮ উইকেট- সবগুলোই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রাপ্তি। আর এই প্রাপ্তিতেই ভবিষ্যতে আত্মবিশ্বাসের জ্বালানি পেলো বাংলাদেশ দল।
দুই দল বাংলাদেশের মাটিতে ম্যাচ খেলেছে ৫৯টি ম্যাচ। যার ৪১টিতে জয় টাইগারদের, হার ১৬টি, ড্র দুটি। জিম্বাবুয়ের মাটিতে খেলেছে ৩৭ ম্যাচ। ১৫টি জয় বাংলাদেশের, জিম্বাবুয়ের ২১টি ও ড্র একটি। প্রথম দিকের কয়েকটি বছর বাদ দিলে এই বাংলাদেশই আতঙ্ক হয়ে দাঁড়ায় জিম্বাবুয়ের কাছে। তাদের বিপক্ষে ম্যাচ খেলে খেলে ভয়ডরহীন হয়ে গেছে টাইগাররা। একটা সময় র্যাংকিংয়ে উপরে থাকা জিম্বাবুয়েকে টপকে যায় বাংলাদেশ।
যখন বাংলাদেশের পরাজয়ের মাত্রা বেড়ে যায়, জয়ের ধারা থেকে বিচ্ছিন্ন হতে থাকে তখনি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ খেলে নিজেদের সতেজ করে নেয় বাংলাদেশ। ক্রীড়াপ্রেমিরা মনে করছেন আগামী এপ্রিলে পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে জয়ের যে বিশ্বাস তৈরি হয়েছে সেটি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই টেস্ট থেকেই।
ওয়ানডেতে বাংলাদেশ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ৭২টি ম্যাচ খেলেছে, জয় ৪৪টি। অন্য কোনো দলের বিপক্ষে ১৫টির বেশি ওয়ানডে ম্যাচে জয় পায়নি বাংলাদেশ।
মুখোমুখি দেখায় টেস্টে অবশ্য জিম্বাবুয়ের চেয়ে শ্রীলঙ্কা এগিয়ে। শ্রীলঙ্কার সাথে বাংলাদেশ ২০টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে। কিছুদিন টেস্ট ফরম্যাট থেকে নির্বাসনে থাকা জিম্বাবুয়ের সাথে বাংলাদেশ টেস্ট খেলেছে ১৬টি। টি-২০ ক্রিকেটেও বাংলাদেশ যাদের বিপক্ষে বেশি ম্যাচ খেলেছে তার মধ্যে যৌথভাবে তিনে জিম্বাবুয়ে। পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১২টি করে টি-২০ ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ে, ভারত ও শ্রীলঙ্কার সাথে খেলেছে ১১টি করে ম্যাচ। জিম্বাবুয়ের সাথে জয়ও সবচেয়ে বেশি, সাত ম্যাচে।
ইতিহাসের ১৪তম জয়
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের একমাত্র টেস্টে টেস্টে সোমবার জিম্বাবুয়েকে ইনিংস ও ১০৬ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে ১১৯ টেস্টে ১৪তম জয়ের স্বাদ পেল টাইগাররা।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি জয় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে, সাতটি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪টি ম্যাচ জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। বাকী তিন জয় এসেছে- ইংল্যান্ড, শ্রীলংকা ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে।
এই ১৪টি ম্যাচ জয়ের মধ্যে দু’বার ইনিংস ব্যবধানে প্রতিপক্ষকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। ২০০০ সালে টেস্ট অভিষেকের পর ২০১৮তে প্রথম ইনিংস ব্যবধানে জয় পায় টাইগাররা। ২০১৮ সালের নভেম্বরে এই মিরপুুরেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ইনিংস ও ১৮৪ রানে জিতেছিলো বাংলাদেশ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের পর আজ নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মত ইনিংস ব্যবধানে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। সেটি র্যাংকিং-এর ১১তম দল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।
মুমিনুলের স্বস্তি
মনে হচ্ছে বিরাট বোঝা নেমে গেল টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হকের মাথা থেকে। বার বার পরাজয়ের প্রশ্নে অধিনায়কত্ব যেন বোঝা হয়ে দাড়িয়েছিল। অবশেষে স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেন জিম্বাবুয়েকে ইনিংস ও ১০৬ রানে হারিয়ে। নিজে করলেন সেঞ্চুরি, সতীর্থ মুশফিক করলেন ডাবল, নাঈম নিলেন ৯ উইকেট, তাইজুল নিলেন ৮ উইকেট। একটা দল হিসেবে সবাই অবদান রাখায় তাই তৃপ্ত অধিনায়ক। সেগুলোই ফুটে উঠলো গতকাল ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তার কথায়।
অধিনায়কত্ব নিয়ে স্বস্তি
পেস বোলার থেকে শুরু করে স্পিনার এমনকি ব্যাটসম্যানরা পর্যন্ত দলের জন্য যা দরকার সেভাবে করেছে। এই কারণে ফলাফলটি এসেছে। অধিনায়ক হিসেবে এবং দলের একজন সদস্য হিসেবে সবসময় সবার কাছে এটা কাম্য যদি আপনি কিছু করতে পারেন। মনে হয় দলের জন্য কিছু অবদান রাখতে পেরেছি।