পাপিয়া : তোলপাড় করা যেসব তথ্য পাওয়া যাচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক | Feb 25, 2020 06:21 am
পাপিয়া

পাপিয়া - সংগৃহীত

 

যুব মহিলা লীগের বিতর্কিত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া ওরফে পিউ র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছেন। এই দম্পতি ঢাকা ও নরসিংদীতে অবৈধ কাজ-কারবারের বিশাল নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেন। তাদের এই অবৈধ কাজ-কারবারের পরিধি থাইল্যান্ড পর্যন্ত বিস্তৃত। জানা গেছে, ওয়েস্টিনে সরকারের এক উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তার যোগসাজশে বিভিন্ন মন্ত্রী, কর্তাব্যক্তিদের মনোরঞ্জন

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পাপিয়া ওরফে পিউ র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছেন। জানা গেছে, ওই শীর্ষ কর্মকর্তার নিয়মিত যাতায়াত ছিল ওয়েস্টিনে। নিয়মিত সকালের নাশতা ও মধ্য রাত পর্যন্ত তিনি থাকতেন ওয়েস্টিনে। পাপিয়া বেশ কিছু দিন আগে রাশিয়া থেকে ১২ নারীকে ঢাকায় এনেছিলেন। যাদের বিমানবন্দরে আটকে দেয়া হয়। কিন্তু ওই শীর্ষ কর্মকর্তা তাদের ছেড়ে দেন। তিনি নিয়মিত পাপিয়ার মাধ্যমে বেশ কয়েকজন সরকারদলীয় নেতা, কয়েকজন মন্ত্রীকে নারী সরবরাহ করতেন।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র আরো বলছে, রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত হোটেলে অবস্থান করে সুন্দরী যুবতীদের দিয়ে পাপিয়া পরিচালনা করতেন অবৈধ দেহব্যবসা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাপিয়া ও তার স্বামী অনেক অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন। কারো মাধ্যমে কোনো কাজ হাসিল করতে চাইলে সুন্দরী যুবতীদের মাধ্যমে ওই ব্যক্তিকে পাপিয়া কৌশলে তার ডেরায় নিয়ে আসতেন। পরে গোপন ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিও ক্লিপসের ভয় দেখিয়ে টার্গেট পূরণ করতেন তিনি। মানসম্মানের ভয়ে ওই ব্যক্তিরাও পাপিয়ার নির্দেশের বাইরে যাওয়ার সাহস দেখাতেন না। এরই মধ্যে পাপিয়া-সুমন দম্পতি তাদের ব্যবসার নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছেন দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও। উদ্ধার করা হয়েছে শতাধিক ভিডিও ক্লিপসের একটি টিকটক ভিডিও। ওই ক্লিপসে দেখা যায়, পিস্তল হাতে পাপিয়া এক যুবককে টার্গেটে রেখে গুলি করার অভিনয় করছেন। এ ছাড়া তার অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির ভিডিও রয়েছে, যা তদন্ত কর্মকর্তারা খতিয়ে দেখছেন। অভিজাত হোটেলের সুইমিংপুলে ৫-৬ যুবতী নিয়ে পাপিয়ার নাচ দেখা গেছে একটি ভিডিও ক্লিপে। এসব কিছুই খতিয়ে দেখছেন তদন্ত কর্মকর্তারা।

এ দিকে এ দম্পতি গ্রেফতারের পরপরই নরসিংদীজুড়ে আলোচনার ঝড় উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ভাইরাল বাইজি সর্দারনী বেশে পাপিয়ার ভিডিও। বেরিয়ে আসছে নারী নেত্রীর বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডের কথা। মুখ খুলতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষ। পাপিয়া ও সুমনের নেপথ্যের কাহিনী গণমাধ্যমে প্রকাশের পর এই সন্ত্রাসী দম্পতি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। জানা গেছে, পাপিয়ার বাবা সাইফুল বারী একজন সাধারণ লোক। তার স্বামী সুমনের বাবা মতিউর রহমান চৌধুরী গানের শিক্ষক। সুমনের উত্থান শুরু ২০০০ সালে, কৈশোর থেকেই যার প্রধান পেশা ছিল চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও ব্ল্যাকমেইল। একপর্যায়ে সুমন রাজনীতিবিদদের সাথে সখ্য গড়ে তোলেন। ২০১১ সালের ২৬ এপ্রিল প্রেমের সম্পর্কের পর বিয়ে করেন পাপিয়াকে। তাদের ঘরে মাদহাত চৌধুরী ইসাব নামে আট বছরের একটি সন্তান আছে। বিয়ের পরপরই পাপিয়াকে রাজনীতিতে ব্যবহার শুরু করেন সুমন। ২০১২ সালের অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে নরসিংদী শহরের বাসাইল এলাকায় ভাড়া বাসার সামনে শহর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক থাকা অবস্থায় সুমনের ওপর হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এ সময় সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত হন পাপিয়া। পরে তারা নরসিংদী ছেড়ে ঢাকায় চলে যান। ২০১৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর জেলা যুব মহিলা লীগের সম্মেলনে তৌহিদা সরকার রুনা সভাপতি ও পাপিয়া সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এলাকায় তাদের বিশাল ‘কর্মী বাহিনী’ রয়েছে। শত শত লোকজন নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রতিটি মিছিল, সভায় তারা যোগ দেন। তাদের অনুসারীরা ‘কিউ অ্যান্ড সি’ ট্যাটু ব্যবহার করেন।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us