ফাইভজি নিয়ে কেন বিশ্বজুড়ে বিতর্ক

জি. মুনীর | Feb 23, 2020 03:13 pm
ফাইভজি নিয়ে কেন বিশ্বজুড়ে বিতর্ক

ফাইভজি নিয়ে কেন বিশ্বজুড়ে বিতর্ক - ছবি : সংগ্রহ

 

বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) গত বছর ১৬ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়, ২০২১ সালের মধ্যে দেশে ফাইভ-জি ইন্টারনেট সার্ভিস চালু করার বিষয়ে প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সে লক্ষে বিটিআরসি মোবাইল অপারেটরদেরকে শর্তাধীনে লাইসেন্সও দিয়েছে। শর্ত হচ্ছে, লাইসেন্সধারী মোবাইল অপারেটরদেরকে ২০২৩ সালের মধ্যে সব জেলা সদরে এবং ২০২৬ সালের মধ্যে সারাদেশে ফাইভজি সেবা চালু করতে হবে। বিটিআরসি জানিয়েছে, এরই মধ্যে কমিশনের গঠিত একটি কমিটি ফাইভজি গাইড তৈরির ব্যপারে কাজ করে চলেছে। কমিশন ওই দিনে ঢাকায় আয়োজিত ‘বাংলাদেশে ফাইভজি’ শীর্ষক সেমিনারে এই তথ্য প্রকাশ করে। সেমিনারে উপস্থিত থেকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ‘ফাইভ-জি ও চতুর্থ শিল্প বিপ্লব পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। ফাইভ-জি শুধু টেলিযোগাযোগের সাথেই সম্পর্কযুক্ত নয়, এটি সব খাতের ডিজিটালাইজেশন ও অটোমেশনকে সম্প্রসারিত করবে।’

এদিকে গত ১৬-১৮ জানুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠিত তিন দিনব্যাপী ডিজিটাল মেলায় অনেক দর্শনার্থী ফাইভ-জি ই্টারনেট সেবার অভিজ্ঞতাও অর্জন করেছেন। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে থ্রিজি চালু করা হয় ২০১৩ সালে এবং ফোরজি চালু হয় ২০১৮ সালে।

ধরে নেয়া যায়, বাংলাদেশের মানুষ খুব শিগগিরই ফাইভজি ইন্টারনেট সেবা পেতে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা যখন এই সম্ভাবনার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে, তখন চারদিকে এই ফাইভজি নিয়ে চলছে তুমুল বিতর্ক। বলা হচ্ছে, এই ফাইভজি আমাদের জন্য নানা ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করে। ফাইভজি বেইস স্টেশনগুলো থেকে যে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির বিকিরণ ঘটে, তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
ফাইভজি নিয়ে একটি বিতর্ক বরাবরই ছিল বিশ্বের বিভিন্ন নাগরিক গোষ্ঠী ও বিজ্ঞানীদের মধ্যে।

স্ট্রোনসে দ্বীপের সেই বিতর্ক
আমরা দেখেছি গ্রেট ব্রিটেনের উপকূলীয় দ্বীপ ট্রোনসেতে এ ধরনের বিতর্ক সৃষ্টি হতে। গত বছর বিবিসি যুক্তরাজ্যে প্রথমবারের মতো এই দ্বীপে একটি ফাইভজি সেলুলার সিস্টেম চালু করে। উদ্দেশ্য, এমন একটি এলাকায় প্রথমবারের মতো সরাসরি রেডিও অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা, যেখানে এর আগে কখনোই ডিজিটাল রেডিও কভারেজ ও এমনকি ধীরগতির ব্রডব্যান্ড কভারেজও ছিল না।

এই ফাইভজি সেলুলার সিস্টেমের অংশ হিসেবে বিবিসি একটি অ্যান্টেনা বসায় স্ট্রোনসে জুনিয়র হাইস্কুল ভবনের উপর। এ নিয়ে শুরু হয় হই-চই। একটি পরিবার ফাইভজি’র ক্ষতিকর প্রভাবের অভিযোগ তুলে তার সন্তানদের এ স্কুল থেকে সরিয়ে নিয়ে যায়। ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয় একটি পিটিশন। আজ পর্যন্ত ৯০০ জন এই পিটিশনে স্বাক্ষর করেন এবং তারা সরকারের প্রতি ফাইভজি বন্ধের দাবি জানান। অথচ এই ফাইভজি ইন্টারনেট সেবাকে বলা হচ্ছে সেলুলার টেকনোলজির সর্বাধুনিক প্রযুক্তি। এর মাধ্যমে আজকের দিনে থ্রিজি বা ফোরজি টেকােলজির তুলনায় অনেক বেশি গতিতে ডাটা ট্র্রান্সফার করা যায়।

বিতর্কটা কোথায়?
বিশ্বের নানা স্থানের নাগরিক গোষ্ঠী ও বিজ্ঞানীরা ফাইভজি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন এর বেইস স্টেশন থেকে রেডিও ফি ফ্রিকোয়েন্সি বিকিরণ নিয়ে। তাদের মতে- এটি শুধু মানবদেহ নয়, এমনকি উদ্ভিদ ও অন্যান্য প্রাণীর জন্যও এর তেজষ্ক্রিয় বিকিরণ ক্ষতিকর। এই প্রযুক্তির দুটি বৈশিষ্ট্যসূচক বিষয় নিয়ে মূলত এই বিতর্কের সূচনা।

প্রথমটি হচ্ছে, ‘স্মল সেল’-এর ব্যবহার। বিপুলসংখ্যক স্মল অ্যন্টিনা (আধামিটার কিংবা তার চেয়েও কম) একটি একক খুঁটির কিংবা অন্যান্য নিচু কাঠামোর উপর স্থাপন করা হয়। কিন্তু এর বিপরীতে বিদ্যমান সেলুলার নেটওয়ার্কে শহর এলাকায় ভবনের উপর স্থাপন করা এক মিটার দৈর্ঘের অ্যান্টেনা। বিদ্যমান সেলুলার নেটওয়ার্ক ক্রমবর্ধমান হারে ডাটা সঞ্চালনের জন্য এগিয়ে যাচ্ছে আরো অনেক ছোট অ্যান্টেনা স্থাপনের দিকে। আর এটি বিশেষ করে শুধূ ফাইভজির জন্যই নয়। তা সত্ত্বেও ফাইভজি নেটওয়ার্ক নির্ভরশীল হবে শহরজুড়ে ছড়িয়ে থাকা হাজার হাজার স্মল সেলের ওপর। ইউটিলিটি পুলের মতো পরিচিত কাঠামোর ওপর বিপুল সংখ্যক ট্র্রান্সমিটিং অ্যান্টেনা নিঃসন্দেহে নাগরিক সাধারণকে উদ্বিগ্ন করবে, কারণ এ ধরণের সুবিধা সৃষ্টির জন্য নগরগুলোর সক্ষমতা সীমিত।

দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে, পরিকল্পিত কিছু ফাইভজি নেটওয়ার্কে সত্যিকারের রেডিও সিগন্যালের ব্যবহার মিলিমিটার ওয়েব ব্যান্ডের কাছাকাছি (যা বাড়তে পারে ৩০-৩০০ গিগাহার্র্টজ পর্যন্ত)। সে তুলনায় বর্তমান সেলুলার ব্যান্ড হচ্ছে ০.৭ থেকে ২.৬ গিগাহার্টজের মধ্যে। মিলিমিটার ওয়েবগুলো ব্যবহার হয়ে আসছে বিভিন্ন প্রয়োগক্ষেত্রে। যার মধ্যে আছে আজকের দিনের সেলুলার বে স্টেশন ও এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি স্ক্যানার এবং গাড়ির অ্যান্টি-কলিশন তথা সংঘর্ষবিরোধী রাডারের সাথে সংযোগ গড়ে তোলার কাজে, এর আগে তা ব্যবহার হতো সেলুলার যোগাযোগের কাজে। কিন্তু এর সমর্থকেরা সাধারণভাবে ফাইভজিকে একটি প্রতিষ্ঠিত বিষয় মনে করেন। এরা আশা করছেন ফাইভজি সংযোগ যাবে মানবদেহে, বাসাবাড়ি ও অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যবহারের অনেক ডিভাইসে। এর ব্যাপক ব্যবহার চলবে সেলফোনে ও চালকবিহীন গাড়িতে। কিন্তু রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি সম্পর্কিত নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না এই ফাইভজির।

আজ নতুন নয়, বেশ কয়েক বছর ধরেই ফাইভজির তেজষ্ক্রিয় ফ্রিকোয়েন্সির ক্ষতিকর দিক নিয়ে চলছে এ বিতর্ক। ২০১৭ সালে ইউরোপীয় কয়েকটি দেশের ২৪৫০ জন নাগরিকের ওপর পরিচালিত এক জরিপে অস্ট্রেলিয়ার উলংগং বিশ্ববিদ্যালয়ের পিটার উইডমেন জানতে পারেনÑ জরিপে অংশ নেয়া ৪০ শতাংশের মধ্যেই রয়েছে এ নিয়ে কোনো না কোনে ধরনের উদ্বেগ। এর মধ্যে ১২ শতাংশ এটিকে ‘সহনীয় পর্যায়ের উদ্বেগ’ মনে করে। তাদের উদ্বেগ সাধারণত ক্ষতিকর রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির বিকিরণ নিয়ে।

ফাইভজি বন্ধে আন্তর্জাতিক আবেদন
এদিকে ফাইভজি বিরোধটি মনে হয় ক্রমেই সময়ের সাথে জোরদার হয়ে চলেছে। গত ১৯ জানুয়ারি ২০৫টি দেশের ১,৯০,২৪০ জনের স্বাক্ষরে একটি আন্তর্জাতিক আপিল বা আহবান অনলাইনে প্রকাশ করা হয়েছে। এর দাবি পৃথিবীতে ও মহাকাশে ফাইভজি নেটওয়ার্ক বন্ধ করতে হবে। ‘ঝঃড়ঢ় ৫এ ড়হ ঊধৎঃয ধহফ রহ ঝঢ়ধপব’- শীর্ষক এই আন্তর্জাতিক আবেদনটি জানানো হয়েছে জাতিসঙ্ঘ, বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা, ইইউ, ইউরোপীয় কাউন্সিল ও বিশ্বের সব দেশের সরকারের উদ্দেশে।
এই আপিলে বলা হয়, আমরা নিম্ন স্বাক্ষরকারী বিজ্ঞানী, চিকিৎসক, পরিবেশ সংগঠন, ও নাগরিক ২০৫টি দেশ থেকে জরুরি আহ্বান রাখছি ফাইভজি তথা ফিফথ জোরেশন টেকনোজি বন্ধ রাখতে। ফাইভজি চালু বন্ধ রাখতে হবে মহাকাশ উপগ্রহেও। কারণ, ফাইভজি ব্যাপকভাবে ক্রমবর্ধমান হারে রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি বিকিরণ করবে যা বিদ্যমান টুজি, থ্রিজি ও ফোরজি নেটওয়ার্কে তুলনায় বেশি। তাদের দাবি, রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি যে মানুষ ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর তা নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত। আর তাই ফাইভজি চালু করা হবে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।

বিশ্বব্যাপী টেলিযোগাযোগ কোম্পানিগুলো চাইছে বিভিন্ন দেশের সহায়তায় আগামী ২ বছরের মধ্যে গোটা বিশ্বে ফাইভজি নেটওয়ার্ক চালু করতে। বলা হচ্ছে, এর মাধ্যমে সারা দুনিয়ায় সমাজে এক অভূতপূর্ব পরিবর্তন আনা হবে। তখন আমাদের থাকবে ‘স্মার্ট’ হোম, ‘স্মার্ট’ বিজনেস, ‘স্মার্ট’ হাইওয়েজ, ‘স্মার্ট’ সিটি ও চালকবিহীন গাড়ি। কার্যত, আমাদের যা কিছু থাকবে এবং যা কিছু আমরা কিনবো- রেফ্রিজারেটর থেকে শুরু করে ওয়াশিং মেশিন, দুধের কার্টুন, চুলের ব্রাশ ও এমনকি শিশুদের ডায়াপার পর্যন্ত সবকিছুতেই থাকবে অ্যান্টেনা আর চিপ এবং দূর থেকে পরিচালনযোগ্য তারবিহীন ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত। পৃথিবীর সব মানুষ যে কোনো স্থান থেকে তাৎক্ষণিকভাবে সংযুক্ত হবে সুপার-হাই-স্পিড লো-ল্যাটেন্সি ওয়্যারলেস যোগাযাগের সাথে- এমনকি কেউ যদি থাকেন আটলান্টিক মহাসাগরের মাঝখানে কিংবা কোনো বিশাল বনভূমির মাঝে, তার জন্যও থাকবে এই সুযোগ।

তবে যে বিষয়টি ব্যাপকভাবে স্বীকার করা হয় না. এসব সুযোগ সুবিধার পাশাপাশি এটি আনবে বৈশ্বিক পর্যায়ে অভাবনীয় মাত্রার বিপ্রতীপ পরিবেশিক পরিবর্তন। পরিকল্পিত রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ট্র্যান্সমিটারের ঘনত্ব কেমন হবে তা অনুমান করাও কঠিন। এর ঘনত্বের ওপর নির্ভর করবে এর ক্ষতিকর প্রভাবের মাত্রা। পৃথিবীতে লাখ লাখ নতুন ফাইভজি বেইস স্টেশন ও মহাকাশে ২০ হাজার নতুন উপগ্রহ ছাড়াও অনুমিত হিসাব মতে ২০ হাজার কোটি ট্র্যান্সমিটিং অবজেক্ট হবে ২০২০ সালের মধ্যে ইন্টারনেট অব থিংসের অন্তর্ভুক্ত। কয়েক বছরে তা পৌঁছুবে এক ট্রিলিয়ন (এক লাখ কোটি) অবজেক্টে। ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে কম গতির ও কম ফ্রিকোয়েন্সির কমার্শিয়াল ফাইভজি চালু করা হয়েছিল কাতার, ফিনল্যান্ড ও এস্তোনিয়ায়। এসব দেশে সে বছরের শেষ দিকে সারাদেশে উচ্চ (মিলিমিটার ওয়েব) ফ্রিকোয়েন্সির ফাইভজি চালুর পরিকল্পনা করা হয়েছিল।

ব্যাপকভাবে অস্বীকার করার পরও প্রমাণ পাওয়া যায়, রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ইতোমধ্যেই এসব দেশে প্রবল ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেছে। রোগগ্রস্ত ও আহত মানুষের ওপর স্বাস্থ্যগত পরীক্ষায় প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে দাবি করা হয় উল্লিখিত আন্তর্জাতিক আবেদনে। তাদের দাবি রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির প্রভাবে বিভিন্ন প্রাণী ও উদ্ভিদের ডিএনএ সেল ও অরগ্যান সিস্টেম ধ্বংস হতে দেখা গেছে। আর রোগতাত্ত্বিক পরীক্ষায় প্রমাণ পাওয়া গেছে, আজকের আধুনিক সভ্যতার যুগের অনেক রোগ- ক্যান্সার, হৃদরোগ ও ডায়াবেটিস- প্রধানত ঘটছে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক দূষণের কারণে। এমন প্রমাণ রয়েছে ১০ হাজার মানুষের ওপর পরিচালিত পর্যবেক্ষণে। আবেদনে আরো দাবি করা হয়, টেলিযোগাযোগ কোম্পানিগুলোর ফাইভজি চালুর পরিকল্পনা ফলপ্রসু হলে এই পৃথিবীর কোনো মানুষ, প্রাণী, পাখি, পোকামাকড় ও গাছ-গাছড়া এই রেডিও ফ্যিকুয়েন্সির প্রভাব থেকে রক্ষা পাবে না। বছরে ৩৬৫ দিন ২৪ ঘণ্টাই এরা এর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকবে। আজকের টুজি, থ্রিজি ও ফোরজি’র তুলনায় ফাইভজি’র প্রভাব হবে শতগুণে বেশি।

এর প্রভাব থেকে বেঁচে থাকার কোনো সম্ভাবনা কারো জন্য নেই। ফাইভজি মানব জাতি ও এই পৃথিবীর পরিবেশ-প্রতিবেশের ওপর যে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে, সে ক্ষতিপূরণের কোনো প্রক্রিয়া বর্তমানে আমাদের জানা নেই। এমনটি দাবি করে উল্লিখিত আবেদনে বিশ্বসমাজের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে, এই মাটির পৃথিবীতে ও মহাকাশে ফাইভজি চালুর প্রক্রিয়া অবিলম্বে বন্ধ করার। তাদের ভাষায়: ‘স্টপ ফাইভজি অন আর্থ অ্যান্ড ইন স্পেস’। এই আবেনপত্রটি সুদীর্ঘ। এতে ভূমিভিত্তিক ও মহাকাশভিত্তিক ফাইভজির ক্ষতিকর নানা দিকের বিষয়টি বিস্তারিত তুলে ধরে দাবি করা হয়েছে, ফাইভজি নিশ্চিতভাবেই মানবজাতির জন্যএব বিপর্যয়কর পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে। তারা জোরালোভা বলছেন, রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির ক্ষতিকর প্রভাবের বিষয়টি ইতোমধ্যেই প্রমাণিত সত্য। ফাইভজি প্রস্তাবিত হওয়ার আগে থেকেই আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞনিকদের পক্ষ থেকে ডজন-ডজন পিটিশন ও আপিল করা হয়েছে এটি বন্ধ করার দাবি জানিয়ে। এর মধ্যে রয়েছে ঋৎবরনঁৎমবৎ অঢ়ঢ়বধষ-টিও, যাতে স্বাক্ষর করেছেন তিন হাজার পদার্থবিজ্ঞানী। এই আপিলে তারা নতুন বেইস স্টেশনগুলোতে ওয়্যারলেস টেকনোলজির সম্প্রসারণ বন্ধের দবি জানিয়েছেন। ২০১৫ সালে ৪১টি দেশের ২১৫ জন বিজ্ঞানী এ ব্যাপারে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন জাতিসঙ্ঘ ও বিশ্বসংস্থার কাছে। ২০১১ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার (আইএআরসি) সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে- ৩০ কিলোহার্টজ থেকে ৩০০ গিগাহার্টজ ফ্রিকোয়েন্সির রেডিও ফ্রিকুয়েন্সির বিকিরণ মানুষের জন্য কারসিনোজেনিক অর্থাৎ ক্যান্সার (গ্রুপ টুবি) উৎপাদক। তা সত্ত্বেও হালনাগাদ জরিপসহ সাম্প্রতিক তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে, সেলফোনের ব্যবহার মস্তিষ্কে ক্যান্সারের ঝুঁকি সৃষ্টি করে। এ থেকেও সুস্পষ্ট ইঙ্গিত মেলে, রেডিও ফ্রিকোয়েনিাসর বিকিরণ মানব দেহে ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ের অসংখ্য বৈজ্ঞানিক প্রকাশনায় দেখানো হয়েছে, ইএমএফ তথা ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে প্রাণীকুলের ওপর। এসবের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা একটি মাত্র লেখায় মাধ্যমে একেবারেই অসম্ভব।

শেষকথা
এমনই প্রেক্ষাপেটে দাঁড়িয়ে আমরা বাংলাদেশে ফাইভজি ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক চালু করতে যাচ্ছি। তাই এটি চালু করার আগে ফাইভজি সম্পর্কিত চলমান বিতর্কের একটা সুরাহা হওয়া দরকার। বৈজ্ঞানিক ও প্রাযুক্তিক পরীক্ষার মাধ্যমে এর ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখার পরই বালাদেশে ফাইভজি চালুর ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়া প্রয়োজন।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us