আমাদের রাজনীতি চাঁদের দেশের মতো হয়ে পড়েছে
চাঁদের দেশ! - ছবি : সংগ্রহ
একটি দেশের রাজনীতি কখন ও কিভাবে সবার জন্য ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে তা যদি আপনি জানতে চান, তবে অবশ্যই আপনাকে চাঁদের প্রকৃতি ও পরিবেশ সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে হবে। শুধু চাঁদ হলেই চলবে না, আপনাকে মঙ্গলগ্রহ সম্পর্কেও জানতে হবে। এছাড়া পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি- মহাকর্ষণ শক্তি এবং সাগর-মসহাসাগরের ভরাকাটাল এবং মরাকাটালের কার্যকারণ সম্পর্কে টুকিটাকি জ্ঞানার্জন করতে হবে। হিমালয়ের শীর্ষদেশে বরফের আস্তরণ, প্রশান্ত মহাসাগরের অতলান্তে অবস্থিত পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পর্বতমালা অলিমপাসের পাদদেশে বসবাসরত মৎস্যকুল এবং সেখানকার বৃক্ষরাজি-শৈবাল ও শিলাখণ্ড সম্পর্কে যদি ধারণা লাভ করতে পারেন, তবে নেহায়েত মন্দ হয় না। এসব বিষয়াদির সাথে যদি সাহারা ও গোবি মরুভূমির সৃষ্ট ভয়ঙ্কর মরুঝড় এবং সাইবেরিয়ার বরফের টর্নেডো সম্পর্কে খানিকটা জেনে নিতে পারেন, তবে আমি নিশ্চিত যে, আপনি নাকে নস্যি-মাখা ছাড়াই যেকোনো দেশের রাজনীতির ১০ নম্বর মহাবিপদ সঙ্কেত নির্ভুলভাবে বলে দিতে পারবেন।
আলোচনার শুরুতেই চাঁদ নিয়ে কিছু বলা যাক। খুব ছোটকাল থেকে জেনে এসেছি যে, চাঁদের দেশে এক বুড়ি আছে, যে কি না সারাক্ষণ শুধু চরকা দিয়ে সুতা বানিয়ে চলে। এই বুড়ির কোনো খাওয়া লাগে না, দাওয়া লাগে না। ঘুম বা বিশ্রাম বলতে কোনো জিনিস চরকাকাটা বুড়ির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। বুড়ির কাজ হলো শুধু চরকাকাটা বা চরকা ঘোরানো। রূপকথার গল্প বলতে গিয়ে মা-চাচী বা দাদী-নানী যখন চাঁদের দেশের বুড়ির কাহিনী শোনাত তখন আমরা এতটাই অবাক হয়ে শুনতাম যে, সামান্য প্রশ্ন করার মতো অবস্থা থাকত না। বুড়ি সম্পর্কে শুধু আমি নই, আমার বিশ্বাস কোনো শিশুই কোনো কালে প্রশ্ন করেনি! অথচ যদি প্রশ্ন করা হতো- বুড়িকে চরকাকাটার জন্য কে নিয়োগ করেছে, সে চরকা দিয়ে কোন রঙের এবং কি ধরনের সুতা বানায় এবং সেই সুতা কার কাজে লাগে তবে মা-চাচীদের রূপকথার গল্প বলা হয়তো বন্ধ হয়ে যেত।
শিশুরা চাঁদের দেশের রূপকথার বুড়িকে নিয়ে শৈশবে কোনো প্রশ্ন করে না। কারণ প্রশ্ন করার জন্য যে জ্ঞান-বুদ্ধি-সাহস থাকা দরকার, তা তখন তাদের থাকে না। তা ছাড়া শিশুদের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো- তারা গালগল্প, বানোয়াট কাহিনী এবং মিথ্যা কথা শুনতে পছন্দ করে এবং প্রায়ই সেসব হাবিজাবি শুনে বিস্ময়ে নির্বাক হয়ে যায়। এসব শিশু যখন একটু বড় হয় তখনই বুঝতে পারে, চাঁদের দেশের বুড়ি-মুড়ি মূলত একটি ভুয়া-বানোয়াট এবং মিথ্যা রূপকাহিনী।
বাস্তব ঘটনা হলো, চাঁদে কোনো আলো নেই- বাতাস নেই এবং পানি নেই। ফলে সেখানে কোনো প্রাণের অস্তিত্ব নেই- অর্থাৎ মানুষজন, পশু-পাখি, বৃক্ষলতা-কীট পতঙ্গ নেই। সেখানে কোনো সমাজ নেই, রাষ্ট্র নেই, রাজনীতি নেই। আর এসব কিছু না থাকার কারণে সেখানে শয়তানও নেই। ফলে এরকম একটি ঊষর স্থানে ভুয়া বুড়ির অস্তিত্ব এবং সেই বুড়ির সারাক্ষণ চরকাকাটা নিয়ে কেউ কোনোদিন আপত্তি তোলেনি বা আপত্তি তোলার প্রয়োজন মনে করেনি।
চাঁদের দেশের আবহাওয়ার কারণে সেখানে কোনো প্রাণের অস্তিত্ব গড়ে উঠতে পারে না। আবার ভিনগ্রহ থেকে কোনো প্রাণীকে সেখানে পাঠানো হলে সেগুলোও চাঁদে এক মিনিটও বাঁচতে পারবে না। পৃথিবী থেকে যে অভিযাত্রী দলকে চাঁদে পাঠানো হয়েছিল তারা বিশেষ নভোযানে করে সেখানে গিয়েছিলেন এবং বিশেষ পোশাক ও অক্সিজেনে-আবৃত বিশেষ হেলমেট মাথায় দিয়ে নভোযান থেকে চাঁদের মাটিতে পা রেখেছিলেন। তারা চাঁদে অবতরণ করার পর লক্ষ করলেন, নিজেদের শরীরের ওপর তাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। সামান্য একটু লাফ দিলে তারা ত্রিশ-চল্লিশ ফুট ওপরে উঠে যান এবং ওপর থেকে ধীরে সুস্থে ফুলানো বেলুনের মতো ডিগবাজি দিতে দিতে জমিনে পতিত হন। তারা বুঝতে পারেন, বাতাস না থাকার কারণে তাদের শরীরের ওপর কোনো চাপ থাকে না। আবার পৃথিবীর মতো মহাকর্ষণ এবং মাধ্যাকর্ষণ শক্তি না থাকার দরুন তারা বেলুন বা তুলার মতো হালকা পদার্থ বনে যান এবং ক্ষণিকের তরে এলোমেলোভাবে শূন্যে ভাসতে থাকেন এবং আবার পরক্ষণে হেলেদুলে জমিনে পতিত হয়ে গড়াগড়ি যেতে থাকেন।
চাঁদের দেশে বাতাস না থাকার দরুন প্রাণের অস্তিত্ব যেমন অসম্ভব, তেমনি সেখানে যদি ভিন্নগ্রহ থেকে প্রাণী রফতানি করে সমাজ-সংসার-রাজনীতি চালু করার চেষ্টা কেউ করেন, তবে তা কোনো মতেই সম্ভব হবে না। কারণ সেখানকার আবহাওয়াতে কেউ কারো কথা শুনতে পাবেন না। কাজেই পৃথিবীর মাটিতে কেউ যদি চাঁদের দেশের মতো প্রকৃতি ও পরিবেশ সৃষ্টি করে রাজনীতি করতে চান তবে তা যে শেষাবধি কতটা ভয়ঙ্কর এবং বুমেরাং হতে পারে তা বোঝার জন্য আপনি পৃথিবীর প্রকৃতি পরিবেশ সম্পর্কে একটু চিন্তা করে দেখতে পারেন।
আমাদের পৃথিবীর প্রধানতম নেয়ামত হলো- বাতাস এবং শব্দ। শব্দ না হলে বাতাসের মূল্য নেই, আবার বাতস না থাকলে শব্দ সৃষ্টি অসম্ভব। সুতরাং কেউ যদি রাজনীতির সুবাতাস বন্ধ করে দিয়ে সারাক্ষণ চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকেন তবে তার সেই শব্দবোমা দুনিয়ার কোনো মানুষ তো দূরের কথা, তিনি নিজেও শুনতে পাবেন না। আবার কেউ যদি রাজনীতির বাতাস চালু রেখে মানুষের জবানে তালা মেরে রাখেন তবে মানুষের কলিজা ফেটে যাবে এবং মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়ে ঘিলুমিলু সব নাক দিয়ে বের হয়ে আসবে। যাদের বুদ্ধিশুদ্ধি, বিবেকবোধ এবং হৃদয়ের অনুভূতি কম, তাদের ক্ষেত্রে অবশ্য ভিন্ন প্রতিক্রিয়া হবে। এ ধরনের লোকজনের পেটের ময়লা, নাক-কান এবং কণ্ঠনালীর ময়লা সংশ্লিষ্ট ছিদ্রপথ দিয়ে বের হয়ে পরিবেশের বারোটা বাজিয়ে দেবে।
পৃথিবীর বাতাস কেবল শব্দ নিয়ন্ত্রণ, শব্দ পরিবহন এবং প্রাণীকুলের নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের নিয়ামক নয়। বাতাস এই পৃথিবীর প্রতিটি সৃষ্টির ওপর চারদিক থেকে তাপ ও চাপ প্রয়োগ করে সবাইকে প্রথমত ভারসাম্যপূর্ণ রাখে এবং দ্বিতীয়ত সুস্থ রাখে। বাতাসের তাপমাত্রা বেড়ে বা কমে গেলে কী হয় তা আমরা কমবেশি জানি। তাপমাত্রা খুব বেশি বেড়ে গেলে কালবৈশাখী, টর্নেডো বা সাইক্লোনের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ অনিবার্য হয়ে পড়ে। অন্যদিকে তাপমাত্রা কমে গেলে বরফঝড়, তুষারপাত থেকে শুরু করে জীবনহানির শীতলতম প্রাকৃতিক দুর্যোগ হানা দিতে থাকে। বাতাসের তাপমাত্রার পাশাপাশি বাতাসের মধ্যে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কমলে বা বাড়লে প্রাণীকুুলের জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়ে। শুষ্ক বাতাস যেমন ভয়ঙ্কর রোগ-বালাইয়ের জন্ম দেয়, তেমনি স্যাঁতসেঁতে বা অধিক আর্দ্র বাতাস জীবনকে ম্যাজমেজে, কুৎসিৎ ও নোংরা বানিয়ে ফেলে। কাজেই সুস্থ প্রকৃতি ও পরিবেশের জন্য কেবল মঙ্গলগ্রহের মতো বাতাস থাকলে চলবে না- কিংবা সূর্যের মতো বাতাস হলেও কাজে আসবে না। আমাদের দরকার পৃথিবীর মতো ভারসাম্যপূর্ণ বাতাস।
প্রকৃতির বাতাসের মতো রাজনীতির বাতাসের জন্য ভারসাম্য খুব বেশি দরকার। রাজনীতির মাঠের বাতাস যদি উত্তপ্ত হয়, তবে কী পরিণতি হতে পারে তা চেঙ্গিস খান, হালাকু খান কিংবা হিটলার গংরা দেখিয়ে গেছেন। পৃথিবীর কোনো কালের কোনো টর্নেডো-ঘূর্ণিঝড়, বালু হাওয়া ততটা প্রাণহানি ঘটাতে পারেনি, যতটা উত্তপ্ত রাজনীতির কারণে যুগে যুগে ঘটেছে। একইভাবে দুর্বল-অযোগ্য-নীতিহীন-অলস ও নেশাগ্রস্ত শাসক বা রাজনীতিবিদদের কারণে রাজনীতির বাতাস যেভাবে আর্দ্র, স্যাঁতসেঁতে ও শ্যাওলাযুক্ত হয়ে পড়ে, তাতে পুরো দেশ-জাতি-কাল জীবাণুযুক্ত এবং ভূতুড়ে আকার ধারণ করে। রাজনীতির বাতাসের তাপের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো সুষম চাপ। প্রকৃতির বাতাস আমাদের শরীরের ওপর সমভাবে চারিদিক থেকে চাপ প্রয়োগ করে। মানবশরীরসহ প্রকৃতি ও পরিবেশের প্রতিটি প্রাণী, বৃক্ষলতা-বৃক্ষরাজি, পাহাড়-সমুদ্র, নদ-নদী প্রভৃতি সব সৃষ্টিকুলের ওপর মহান আল্লাহ প্রদত্ত বাতাস সমভাবে এবং একই নিয়মে চারিদিক থেকে চাপ প্রয়োগ করে। ফলে প্রকৃতিতে ভারসাম্য রক্ষা হয় এবং প্রতিটি বস্তু নিজ নিজ স্থানে থেকে নিজের রূপ-রস-গন্ধ বিতরণ করতে পারে। কেউ স্থানচ্যুত হয় না- কেউ বঞ্চিত হয় না এবং কেউ বাতাসের অভাবে মারা পড়ে না।
আপনি যদি প্রকৃতির বাতাসের চাপের সাথে রাজনীতির বাতাসের চাপের তুলনা করেন তবে দেখতে পাবেন যে, এখানে রাজনৈতিক চাপের কারণে পৃথিবীতে মহাপ্রলয় ঘটে যায়। রাজনৈতিক চাপের অনৈতিক এবং বেআইনি তৎপরতার কারণে বড় বড় নগরী-মহানগরী শ্মশানে পরিণত হয়- শস্য শ্যামলা জনবসতি বিরানভূমিতে পরিণত হয়। নদীবিধৌত শষ্যময় ফসলি জমি উষর মরুভূমি হয়ে যায় এবং বনভূমি বিলীন হয়ে বন্যপ্রাণীর জীবননাশ ঘটায়। অন্যদিকে, নদী-খাল বিল প্রভৃতি পানির আধারগুলো ভরাট হয়ে ভূ-প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়। রাজনীতির মন্দ চাপের কারণে মানুষকে পশুর পর্যায়ে নামিয়ে আনা হয় এবং পশুকে মানুষের মাথার ওপর কর্তা বা কর্তী বানিয়ে দেয়া হয়। এই চাপের কারণে কিছু মানুষের পেট রাক্ষসের মতো স্ফীত হয়, আবার কিছু মানুষের পেট এমনভাবে সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে, যা কি না তাদের অকাল মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। রাজনৈতিক চাপ কিছু মানুষের বিবেক বুদ্ধি নাশ করে ফেলে, কারো কারো বুদ্ধির দুর্বৃত্তপনাকে ইবলিশের চেয়েও অধিক উচ্চতায় নিয়ে যায় এবং কারো কারো বিবেক বুদ্ধি অনুর্বর হয়ে পড়ে।
আপনি যদি চাঁদের দেশের এবং পৃথিবীর প্রকৃতি ও পরিবেশের উল্লিখিত তুলনামূলক পর্যালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের হালআমলের রাজনীতির প্রকৃতি-পরিবেশ এবং তাপ-চাপ মূল্যায়ন করেন তবে দেখতে পাবেন যে, বর্তমান জমানার রাজনীতিতে অদ্ভূত এক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বর্তমানে যারা ক্ষমতায় রয়েছে তারা এক ধরনের বিশ্বাস-অবিশ্বাস ও সন্দেহের দোলাচলে নিজেরা নিজেরা এক ধরনের অদৃশ্য চাপ অনুভব করছেন। কিন্তু রাজনীতির চিরায়ত কোনো চাপ বা তাপ তাদের স্পর্শ করছে না। অর্থাৎ তারা প্রকৃতির স্বাভাবিক চাপের মধ্যে নেই, কিন্তু সর্বদা নিজেদের কর্মজাত, মনঃস্তাত্ত্বিক এবং চিন্তাপ্রসূত অলীক এবং অদৃশ্য চাপের মধ্যে রয়েছে। ফলে তাদের সব রাজনৈতিক এবং প্রাত্যহিক কর্মকা- অনেকটা চাঁদের দেশের মতো আবহ সৃষ্টি করছে।
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দল-মত এবং প্রতিবেশ ও পরিবেশের ওপর সূর্যের অভ্যন্তরে প্রবহমান লু হাওয়ার মতো বাতাস দিচ্ছে এবং নিজেদের লোকের ওপর মঙ্গলগ্রহের বাতাসের মতো হাওয়া লাগিয়ে দিচ্ছে। ফলে জনারণ্যে নিদারুণ এক পরস্পরবিরোধী উল্টো স্রোত চালু হয়ে গেছে। কেউ দৌড়াচ্ছে পশ্চিমে তো প্রতিপক্ষরা দৌড়াচ্ছে পূর্বে। কেউ কবরের কথা ভাবছে, আবার কেউ চাঁদ-তারা-মহাকাশ আরো কত কি যে ভাবছে তার কোনো ইয়ত্তা নেই। বিরোধী দলগুলোর ওপর এমনভাবে একপেশে চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে, যার ফলে সবাই জমিনে চিৎপটাং হয়ে পড়েছে। অব্যাহত চাপের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা তাদের পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় চিৎপটাং হয়ে যতটুকু আহার-নিদ্রা এবং বর্জ্য ত্যাগ সম্ভব, ততটুকু করেই তারা ভবলীলা সাঙ্গ করার চিন্তা করছে। তাদের মেরুদ-, কণ্ঠনালী, ঘাড় এবং দৃষ্টিশক্তির ওপর রাজনৈতিক চাপ এতটাই প্রভাব বিস্তার করেছে যে, তারা বুঝতে পারছে না- সরকার কাকে বলে, গণতন্ত্র জিনিসটা আসলে কী এবং তাদের বাড়িঘর কোথায়।
বিরোধী দলের উল্লিখিত অবস্থা দেখে ক্ষমতাসীনদের আনন্দের সীমা-পরিসীমা নেই। তারা খুশিতে সেসব কথা বলছেন, যা কি না জুলিয়াস সিজার বলেছিলেন। অর্থাৎ ভিনি ভিডি ভিসি যার অর্থ এলাম-দেখলাম-জয় করলাম। তারা আনন্দে আত্মহারা হয়ে তেমনটি করছেন যেমনটি করেছিলেন চন্দ্রবিজেতা নীল আর্মস্টং। তারা বিরোধীদের ওপর নতুন কোনো চাপ প্রয়োগের স্থান-কাল ও পাত্র না পেয়ে উত্তর আফ্রিকা বিজয়ী মুসা বিন নুসায়েরের মতো আফসোস করে বলছেন- আহ! বিজয় লাভ করার জন্য, আর তো জায়গা নেই।
আমরা আজকের আলোচনার একদম প্রান্তসীমায় চলে এসেছি। এবার বিদায় নেয়ার পালা। বিদায়ের কালে সম্মানিত পাঠকদের কানে কানে বলে যাই- আমাদের রাজনীতি কিন্তু চাঁদের দেশের মতো হয়ে পড়েছে, যা কিন্তু আমাদের সবার জন্যই ১০ নম্বর মহাবিপদ সঙ্কেত সৃষ্টি করে ফেলেছে।
লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য