তৃতীয় বিমানবাহী রণতরী নিয়ে কী হচ্ছে ভারতে!
তৃতীয় বিমানবাহী রণতরী - ছবি : সংগ্রহ
প্রতিরক্ষা খাতে বেশ বড় ধরনের পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ভারত। কয়েক দশকের বিচার বিবেচনার পর, ভারত শেষ পর্যন্ত উচ্চ পর্যায়ের একজন চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী গত বছরের আগস্টে স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতায় এই পদ সৃষ্টি ও কাউকে নিয়োগ করার কথা ঘোষণা করেছিলেন। এই পদটি দেয়া হয়েছে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াতকে। প্রথম সিডিএস হিসেবে রাওয়াতের দায়িত্ব হলো তিন বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় এবং ক্রয় প্রক্রিয়াকে আরো মসৃণ করা।
এই চলতি মাসের শুরুর দিকে, রাওয়াত ভারতীয় প্রকাশনা নিউজ১৮-এর সাথে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কথা বলেছেন। ভারতীয় নৌবাহিনীর তিনটি রণতরী পরিচালনার বিষয়টি নিয়ে তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, যার মধ্যে দুটি নিজস্বভাবে তৈরী। ভারতীয় নৌবাহিনীর এ মুহূর্তে একটি বিমানবাহী রণতরী রয়েছে: আইএনএস বিক্রমাদিত্য। এটা মূলত সোভিয়েত আমলের কিয়েভ শ্রেণীর জাহাজের রূপান্তরিত রূপ। বর্তমানে নিজস্বভাবে ৪৪,০০০ টন ওজনের জাহাজ আইএনএস বিক্রান্ত তৈরির কাজ চলছে। কোচিন শিপইয়ার্ডে এই জাহাজটি নির্মিত হচ্ছে। অন্যদিকে নৌবাহিনীর বহরের বহুল আলোচিত আইএনএস বিশাল – যেটা হবে ভারতের নিজস্বভাবে তৈরি দ্বিতীয় রণতরী – সেটা এখনো ধারণা পর্যায়ে রয়েছে এবং নির্মাণকাজ শুরু হয়নি এটার।
আইএনএস বিশালটি কনভেনশনাল জ্বালানি চালিত জাহাজ। এটা হবে সম্ভবত প্রথম ভারতীয় জাহাজ যেটাতে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক এয়ারক্র্যাফট লঞ্চ সিস্টেমের (ইএমএএলএস) মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সংযোজন করা হবে। এই প্রযুক্তির ফলে জাহাজের বিমান নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা বাড়বে এবং কনভেনশনাল সিস্টেমের তুলনায় বিমান উড্ডয়নের চাপ কমে যাবে।
আইএনএস বিশাল তৈরির সময়ের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলো রাওয়াত সতর্কতার সাথে এ ব্যাপারে কোন প্রতিশ্রুতি দেননি। তার বদলে তিনি প্রত্যাশা বাড়ানোর কথা বলেছেন। নৌবাহিনীতে রণতরী সংযুক্ত করার সময় সমন্বয় করার কথা বলেছেন। তিনি বলেন, “একটি বিমানবাহী রণতরী আগামী বছরে সাগরে নামবে। এখন দেখতে হবে কখন আপনার তৃতীয় জাহাজটি প্রয়োজন। যদি তৃতীয়টি আপনি পান, তাহলে সেটা তৈরিতে কত বছর লাগবে? আপনি যদি ২০২২ বা ২০২৩ সালের লক্ষ্যমাত্রাও ঠিক করেন, সেটা ২০৩৩ সালের আগে হবে না। তাছাড়া বিমানবাহী রণতরী শুধু একটি জাহাজ নয়, এর সাথে সাথে বিমানও আনতে হবে। বিমানগুলো কোত্থেকে আসবে? এগুলোর সাথে বিমানগুলোর জন্য আমাদের সুরক্ষার ব্যবস্থা লাগবে। রাতারাতি এটা হবে না। প্রয়োজন হলে এটা কেনা হবে… কিন্তু ১০ বছরের মধ্যে পরিস্থিতি কী হবে, সেটা অনুমান করার উপায় নেই। আমরা জানি না কী হবে”।
বহুল আলোচনার পর ভারতের নতুন সিডিএস যদি নৌবাহিনীর তৃতীয় বিমানবাহী রণতরী নিয়ে এভাবে কথা বলেন, তাহলে খুব সম্ভবত বিশের দশকের পুরোটা না হলেও অধিকাংশ সময় নৌবাহিনীর বহরে দুটি বিমানবাহী রণতরীই থাকবে।
সূত্র : এসএএম