এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র সহসাই পাচ্ছে না ভারত
এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র - ছবি : সংগ্রহ
ভারতকে অত্যাধুনিক বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ বিমান প্রতিরক্ষা মিসাইল সিস্টেম সরবরাহের জন্য কমপক্ষে আরো দুই বছর অতিরিক্ত সময় নেবে রাশিয়া। ২০১৮ সালের ৫ অক্টোবর ৫.৪৩ বিলিয়ন ডলারের যে চুক্তি হয়, সেখানে পাঁচটি এস-৪০০ সিস্টেম ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৩ সালের এপ্রিলের মধ্যে সরবরাহ করার কথা ছিল রাশিয়ার। এখন মনে হচ্ছে, সময় লাগবে আরো বেশি। এই চুক্তি ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছিল। রাশিয়ার কাছ থেকে এই অস্ত্র কেনায় যুক্তরাষ্ট্রও ক্ষুব্ধ হয়েছিল।
রাশিয়া গত ১৭ ফেব্রুয়ারি জানিয়েছে যে সংশোধিত সময় অনুযায়ী সরবরাহের জন্য ২০২৫ সাল লেগে যাবে। নয়া দিল্লির রাশিয়ান দূতাবাস থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমরা চুক্তির ক্ষেত্রে ১৬ বিলিয়ন ডলারের সীমা পার হয়ে যাচ্ছি। উভয় পক্ষই সময়মতো সফলভাবে এটা বাস্তবায়নের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এর মধ্যে ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্বের সেরা বিমান প্রতিরক্ষা সিস্টেম এস-৪০০ সরবরাহের বিষয়টিও রয়েছে”।
২০১৯ সালের জুলাই মাসে ভারত সরকার পার্লামেন্টকে জানিয়েছিল যে, ২০২৩ সালের এপ্রিলের মধ্যে সরবরাহের কাজ শেষ হয়ে যাবে। প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী শ্রীপদ নায়েক লোকসভায় এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, “২০১৮ সালের ৫ অক্টোবর রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ সিস্টেম কেনার জন্য চুক্তি হয়েছে। ২০২৩ সালের এপ্রিলের মধ্যে এগুলো সরবরাহ শেষ হতে পারে”।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকির মধ্যেও ২০১৮ সালের ৫ অক্টোবর নয়া দিল্লিতে অনুষ্ঠিত ১৯তম ভারত-রাশিয়া বার্ষিক দ্বিপক্ষীয় সম্মেলনে এই এস-৪০০ সিস্টেম কেনার জন্য চুক্তি হয়। এই চুক্তি হলে কাউন্টারিং অ্যামেরিকা’স অ্যাডভার্সারিজ থ্রু স্যাঙ্কশান্স অ্যাক্টের (সিএএটিএসএ) আইনের ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু তবুও ভারত অনড় থেকে অস্ত্রটি কেনার চুক্তি করে।
সূত্র জানিয়েছে যে চুক্তির অঙ্কের প্রথম কিস্তিতে যে ১৫ শতাংশ অর্থ দেয়ার কথা, সেটা দেয়ার জন্য বেশ কয়েক মাস সময় লেগে যায়। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর জন্য পরিশোধের বিকল্প পন্থা খুঁজতে গিয়েই এই বিলম্ব হয়েছিল।
রাশিয়ানরা বারবার প্রকাশ্যে আশ্বাস দিয়ে এসেছে যে বিকল্প পরিশোধের উপায় খুঁজতে গিয়ে যে সময় নষ্ট হয়েছে, সেটি পুষিয়ে দেবে রাশিয়া এবং চুক্তির সময়ের মধ্যেই তারা এস-৪০০ সরবরাহের চেষ্টা করবে।
এই আশ্বাসের পর সরবরাহে বিলম্বের কথা যখন জানানো হলো, তখন সেটা বিস্ময় সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে ভারত যখন নির্ধারিত সময়ে সরবরাহের জন্য চাপ দিয়ে আসছে। ২০১৯ সালের নভেম্বরে ইন্ডিয়া-রাশিয়া কমিশন ফর মিলিটারি টেকনিক্যাল কোঅপারেশানের বৈঠকেও এ বিষয়টিতে জোর দেয়া হয়েছিল। ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেছিলেন নিজ নিজ দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীরা।
প্রথম কিস্তি পরিশোধের পর পরের কিস্তিগুলো চুক্তি ও সরবরাহের সময়সীমার ভিত্তিতে পরিশোধ করা হবে।
সূত্র : এসএএম