মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র : বিপুল মূল্য দিতে হবে ভারতকে
মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র : বিপুল মূল্য দিতে হবে ভারতকে - ছবি : সংগৃহীত
ভারতের জাতীয় রাজধানীকে সুরক্ষা দিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে নয়া দিল্লি যে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনতে চাচ্ছে তার ‘অতি উচ্চ মূল্য’ নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। নাইন-ইলেভেনের মতো শত্রুর বিমান, ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র বা ড্রোনের হামলা থেকে রাজধানী নয়া দিল্লিকে রক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার কথা ভাবা হয়েছিলো। কিন্তু তাতেই সৃষ্টি হয়েছে নতুন জটিলতা। কারণ ভারত যে হিসাব করেছিল, এখন দাম পড়বে তার প্রায় দ্বিগুণ।
আমেরিকান সরকার গত সপ্তাহে দিল্লির কাছে ১.৯ বিলিয়ন ডলারে ইনটিগ্রেটেড এয়ার ডিফেন্স উইপন সিস্টেম (আইএডিডব্লিউএস) বিক্রি অনুমোদন করে। এতে বিভিন্ন ধরনের রাডার ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা থাকবে। ভারতীয় বিমান বাহিনী এই ব্যবস্থার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ করেছিলো। ফরেন মিলিটারি সেল-এর আওতায় যুক্তরাষ্ট্র এই ব্যবস্থা বিক্রি করবে।
সরকারি সূত্রগুলো বলে, আমেরিকানরা যে প্রকল্প অনুমোদন করেছে তার মূল্য প্রায় ১.৯ বিলিয়ন ডলার। এই মূল্য আমরা যা ভেবেছিলাম তার প্রায় দ্বিগুণ। এই সংগ্রহের উচ্চমূল্য নিয়ে আমরা এখন চিন্তিত। তাই অন্য বিকল্পগুলোও দেখা হচ্ছে।
বর্তমানে দিল্লিতে রাশিয়ার তৈরি সুরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে। এর বদলে মার্কিন ব্যবস্থাটি মোতায়েন করতে চায় মোদি সরকার।
সূত্র জানায়, ২৪-২৫ ফেব্রুয়ারি ভারতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সফরকালে এই বিষয়ে আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ভারত বাণিজ্য চুক্তির পাশাপাশি প্রতিরক্ষা চুক্তির ওপরও জোর দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রও চাচ্ছে ভারতের সাথে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করতে।
সূত্র আরো জানায়, অন্যান্য প্রকল্পের ক্ষেত্রেও মার্কিন অস্ত্রের উচ্চমূল্য চিন্তার একটি বিষয়। এসব প্রকল্পের মধ্যে ৩০টি প্রিডেটর ড্রোনের দাম প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার।
আমেরিকা যে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অনুমোদন করেছে তাতে রয়েছে পাঁচটি এএন/এমপিকিউ-৬৪এফএল সেন্টিনেল রাডার সিস্টেম, ফায়ার ডিস্ট্রিবিউশন সেন্টার (এফডিসি), ইলেক্ট্রিক্যাল অপটিক্যাল/ইনফ্রারেড সেনসর সিস্টেম, ও মাল্টি সেক্টরার টারর্গেটিং সিস্টেম-মডেল এ (এমটিএস-এ)।
এতে আরো থাকবে ১১৮টি আমরাম এআইএম-১২০সি-৭/সি-৮ মিসাইল, তিনটি আমরাম গাইডেন্স সেকশন, চারটি আমরাম কন্ট্রোল সেকশন ও ১৩৪টি স্টিংগার এফআইএম-৯২এল মিসাইল। পাশাপাশি থাকবে ডুয়েল মাউন্ট স্টিংগার এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ও ভেহিকেল মাউন্টেড স্টিংগার রেপিড রেঞ্জার এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, ক্যানিস্টার ল্যান্সার ও হাই মবিলিটি ল্যান্সার।
২০১৮ সালে ভারতীয় দল যখন ওয়াশিংটন সফরে যায় তখন তাদেরকে এনএএসএএমএস নামে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কার্যকারীরা দেখার সুযোগ দেয়া হয়নি। কারণ এটা একটি আমেরিকান ঘাঁটিতে মধ্যে মোতায়েন করা ছিলো।
এখন দুই সরকারের মধ্যে চুক্তি আলোচনার সময় এই মূল্যের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।
উল্লেখ্য, চীন ও পাকিস্তানকে মাথায় রেখে ভারত অস্ত্র সংগ্রহ করছে। আর যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য চীনকে সংযত করতে ভারতকে কৌশলগত মিত্র হিসেবে পাওয়া।