ভারতের সেই আগ্রাসনের জবাব দিতে চেয়েছিল জুনিয়র টাইগাররা
ভারতের সেই আগ্রাসনের জবাব দিতে চেয়েছিল জুনিয়র টাইগাররা - ছবি : সংগৃহীত
যুব বিশ্বকাপে রোমাঞ্চকার ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়া বাংলাদেশ দলের উদযাপন ছিল ভিন্ন মাত্রার। এই প্রথম কোনো বিশ্বকাপ জয় করে বাংলাদেশ। আরো অনেক কারণেই এই জয় ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তবে যে উদযাপন থেকে পরে তৈরি হয় হাতাহাতির পরিস্থিতি। শাস্তি পান দুদলের পাঁচ ক্রিকেটার। বাংলাদেশের পেসার শরিফুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান এই উদযাপনের প্রেক্ষাপট তৈরি হয় দুই বছর আগেই। ভারতের আগ্রাসী উদযাপন ভারতকে ফিরিয়ে দিতেই এদিন বুকে তেতে উঠার বারুদ নিয়ে নেমেছিলেন তারা।
সাল ২০১৮। যুব এশিয়া কাপের সেমিফাইনাল। মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ভারতের কাছে ২ রানে হেরে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ঠিক এক বছর পর আবার যুব এশিয়া কাপে হৃদয় ভাঙার গল্প। এবার কলম্বোয় ফাইনালে ভারতের কাছে ৫ রানে হেরেছিলেন আকবর আলিরা। দুবারই রোমাঞ্চকর জয়ের পর ভারতীয় খেলোয়াড়রা আগ্রাসী মেজাজেই করেন উদযাপন।
ওই দুই ঘটনা থেকেই শরিফুলরা পণ করেন কোন এক ফাইনাল জিতে ভারতকে ফিরিয়ে দেবেন একই উদযাপন। বাঁহাতি পেসার শরিফুল দেশে ফেরার আগে মঙ্গলবার জোহেন্সবার্গ থেকে দ্য ডেইলি স্টারকে জানান তাদের বাঁধভাঙা উল্লাসের পেছনের কথা, ‘ওদের সঙ্গে আমরা দুইবার কাছে গিয়ে হেরেছি । একটা এশিয়া কাপের সেমিফাইনাল এবং ফাইনাল। তখন কেমন লেগেছে বলে বোঝানো যাবে না। এবার এই ম্যাচে নামার আগে শুধু অতীতের কথা মনে পড়ছিল যে ওরা আমাদের সঙ্গে কেমন করেছিল জেতার পর, আমাদের কেমন লেগেছিল হারার পরে। আমরা আর চাইনি আগের মতো হোক, মনে মনে বলেছিলাম এবার সেরাটা দিয়ে শেষ বল পর্যন্ত সব উজাড় করে দিব।’
এবার বিশ্বকাপ জিতে যাওয়ার পর ভারতীয় ক্রিকেটারদের মুখের সামনে গিয়ে উদযাপন করতে দেখা যায় বাংলাদেশের কয়েকজন ক্রিকেটারকে। যার প্রেক্ষিতে তৈরি হয়েছিল উত্তপ্ত পরিস্থিতি। শরিফুল জানান এশিয়া কাপে জেতার পরও ভারতও করেছিল এমন, এবার যা তারা ফিরিয়ে দেওয়ার তাড়না নিয়ে নেমেছিলেন ‘আমাদের দেশে, ঢাকাতে ওদের কাছে আমরা হেরেছিলাম বোধহয় ১ রানে (আসলে ২ রানে)। আমাদের সামনে এসে ওরা এমন উদযাপন করেছে আমরা কিছু বলতে পারিনি। আমরা হেরে গেছি, আমাদের বলার কিছু ছিল না।’
‘আমরা অপেক্ষা করছিলাম এমন দিনের যেখানে ফাইনালে ওদের হারিয়ে আমরাও এমন উদযাপন করব। আমি চেয়েছিলাম সর্বোচ্চ দিয়ে ফাইনাল জিতব, তারপর ওদের সামনে গিয়ে ওদের মতো উদযাপন করব।’
এদিন অবশ্য ম্যাচের শুরু থেকেই বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের শরীরী ভাষা ছিল ঝাঁজালো। প্রথম ওভারেই ভারতের ওপেনার যশস্বী জওসওয়ালকে বার কয়েক পরাস্ত করে স্লেজিং করতে দেখা যায় শরিফুলকে। তানজিম হাসান সাকিবকেও দেখা গেছে আগ্রাসী মেজাজে। বিশ্বকাপ ফাইনালে দারুণ বোলিং আর ক্ষিপ্র ফিল্ডিং করা শরিফুলের মতে ব্যাটসম্যানকে ঘাবড়ে দিতে এই কৌশল নেওয়া ছিল সেরা উপায়, আর ভারতের সঙ্গে প্রতিশোধের ব্যাপার থাকায় আগ্রাসনটা বেরিয়েছেও তীব্রভাবে, ‘আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতে হলে এমন কিছু করতে হয়। ব্যাটসম্যানকে রাগান্বিত করা বা তার ভেতরে এমন কিছু দিতে হয় যাতে সে আমাকে মারতে আসে। তখন যাতে উইকেটটা যায়। আর ভারতের সঙ্গে খেলতে আলাদা একটা ঝাঁজ থাকে। । ওদের সঙ্গে প্রতিশোধের একটা ব্যাপার থাকে।’
রোববারের ফাইনালে ভারতকে ডি/এল মেথডে ৩ উইকেটে হারিয়ে জেতে বাংলাদেশ। তাতে শরিফুলের অবদান অনেক বড়। ১০ ওভার বল করে ৩১ রানে ২ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি, এছাড়া নিজের বলে ফিল্ডিং করে করেন এক রান আউট। নেন দারুণ দুই ক্যাচও।
সূত্র : ওয়েবসাইট