সেই পেঁয়াজ এখন ভারতের গলার ফাঁস
পেঁয়াজ - ছবি : সংগৃহীত
সেই পেঁয়াজ এখন ভারতের গলার ফাঁস হয়ে পড়েছে। আর এতেই রাতের ঘুম উঠে গেছে কেন্দ্রের। কারণ গুদামে মজুত থাকা পেঁয়াজ দ্রুত শেষ না করলে তা পচে নষ্ট হবে।
খোলা বাজারে পেঁয়াজের দাম কমাতে তুরস্ক, মিসর ও আফগানিস্তান থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু রাজ্যগুলো সেই পেঁয়াজ কিনতে গরজ না দেখানোয় বিপাকে পড়েছে সরকার। এ দিকে মুম্বইয়ের জওহরলাল নেহরু বন্দরে পড়ে থাকতে থাকতে আমদানিকরা পেঁয়াজে পচন ধরার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যগুলোকে মাত্র ১০ রুপি কিলো দরে পেঁয়াজ বিক্রিতে উদ্যোগী হয়েছে সরকার।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, বিদেশ থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ প্রথমে 'না লাভ না ক্ষতি' এই শর্তে ৪৮-৫৪ রুপি কিলো দরে রাজ্যগুলোকে বিক্রি শুরু করেছিল কেন্দ্র। কিন্তু রাজ্যগুলো সেই পেঁয়াজ কিনতে রাজি হচ্ছে না। বিদেশ থেকে এখন যে পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে তার মাত্র ৮ শতাংশই বিক্রি করা গেছে। যে কারণে এখন সেই পেঁয়াজ গড়ে ১০ টাকা থেকে ২৫ রুপি কিলো দরে বিক্রির জন্য রাজ্যগুলোকে কেন্দ্রের তরফে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বিদেশ থেকে আমদানি করা যে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ গুদামে পড়ে আছে তা বিক্রি না হলে কেন্দ্রীয় সরকারের ২০০ কোটি রুপি লোকসান হবে বলে আশঙ্কা।
এ দিকে, সম্প্রতি কেন্দ্রের থেকে ১,১০০ কুইন্টাল পেঁয়াজ কিনে নিয়ে গিয়েও পরে তা ফেরৎ পাঠায় হরিয়ানা। কেন্দ্রের তরফে যে পেঁয়াজ পাঠানো হয়েছিল তা রাজ্যে পৌঁছনোর আগেই পচে গিয়েছিল বলে হরিয়ানার তরফে কেন্দ্রকে জানিয়ে দেয়া হয়।
প্রশ্ন উঠছে কেন রাজ্যগুলো কেন্দ্রের থেকে বিদেশি পেঁয়াজ কিনতে রাজি হচ্ছে না। তার আসল কারণ হলো আমদানি করা এই পেঁয়াজে নেই ঝাঁজ আর গন্ধ। আর ঝাঁজ ছাড়া পেঁয়াজ কিনতে রাজি হচ্ছেন না সারাধণ ক্রেতারা। তাই সরকারের আমদানি করা পেঁয়াজ কিনেও তা বিক্রি করতে সমস্যায় পড়েছেন বিক্রেতারা। সেই কারণেই দেশের বিভিন্ন রাজ্যের বাজারে বাজারে কেন্দ্রের আমদানি করা পেঁয়াজ থাকলেও, তার কাটতি তেমন একটা নেই বলেই দাবি বিক্রেতাদের।
আর এতেই রাতের ঘুম উঠে গেছে কেন্দ্রের। কারণ গুদামে মজুত থাকা পেঁয়াজ দ্রুত শেষ না করলে তা পচে নষ্ট হবে। কিন্তু প্রশ্ন তাতেও কী বিক্রি হবে ঝাঁজ ছাড়া পেঁয়াজ। যার জেরে কেন্দ্রের তরফে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল এবং মালদ্বীপে রফতানি শুরু করা হয়েছে তুরস্ক, মিসর থেকে আনা গন্ধহীন পেঁয়াজ। শুধু গন্ধের জন্য নয়, একইসঙ্গে তুরস্কের পেঁয়াজ আয়তনে দেশি পেঁয়াজের থেকে দ্বিগুণ। সেই কারণেও অনেকে প্রথমে পেঁয়াজ কিনলেও পরে তা ক্রয় করা বন্ধ করে দেয় বলে বিক্রেতাদের দাবি।
সূত্র : এই সময়