বাত রোগ : চিকিৎসা বনাম অপঃচিকিৎসা
বাত রোগ : চিকিৎসা বনাম অপঃচিকিৎসা - ছবি : সংগ্রহ
বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞ একমত যে, অস্টিও আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসায় সিস্টেমিক বা মুখে খাবার স্টেরয়েডের কোনো স্থান নেই। এর কারণ হলো- অস্টিও আর্থ্রাইটিস কদাচিৎ তীব্র প্রদাহ ঘটায়। তীব্র প্রদাহের ক্ষেত্রে স্টেরয়েড ভালো কাজ করে। তবু কিছু চিকিৎসক বিশ্বাস করেন, মারাত্মক অস্টিও আর্থ্রাইটিসের ক্ষেত্রে ব্যথাপূর্ণ অস্থিসন্ধিতে বছরে তিনবার স্টেরয়েড ইনজেকশন দেয়া যেতে পারে, এসব ক্ষেত্রে অবশেষে অস্থিসন্ধি প্রতিস্থাপন করা লাগে।
প্রশ্ন : কখন দ্বিতীয় সারির ওষুধ ব্যবহৃত হয়?
উত্তর : নামের মধ্যেই এর উত্তর নিহিত রয়েছে। দ্বিতীয় সারির ওষুধ-গোল্ড, মেথোট্রিক্সেট এবং এরকম আরও- আপনার চিকিৎসায় যোগ হতে পারে যদি এনএসএআইডিগুলো আপনার উপসর্গ লাঘবে ঠিকমতো কাজ না করে। এসব ওষুধ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস ও অন্যান্য বাত রোগের চিকিৎসায় ভবিষ্যতের জন্য জমা রাখা হয়। এগুলো অস্ট্রিও আর্থ্রাইটিসের ক্ষেত্রে কদাচিৎ ব্যবহৃত হয়।
প্রশ্ন : প্রথম সারির ওষুধ থেকে দ্বিতীয় সারির ওষুধের পার্থক্যটা কী?
উত্তর : সব দ্বিতীয় সারির ওষুধ ধীরে কাজ করে। এদের কাজ করতে করতে কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাস লেগে যায়।
এগুলো এনএসএআইডি এবং স্টেরয়েডের মতো নয়, এসব ওষুধ আপনার রোগের অগ্রগমনকে মন্থর করে। এরা কখনো কখনো পূর্ণ বা আংশিক রোগমুক্তি ঘটায়। সত্যি বলতে কী, কিছু বৈজ্ঞানিক প্রমাণ রয়েছে যে, এসব ওষুধ রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের অগ্রগমনকে ধীরগতি সম্পন্ন করে দেয়। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস দেখা দেয়ার প্রথমেই এসব ওষুধ ব্যবহার করলে রোগের গতি কমে যায়, এটাও কিছু গবেষণায় দেখা গেছে।
ডাচ গবেষকরা এক গবেষণায় দেখেছেন যে, দ্বিতীয় সারির ওষুধগুলো অস্থিসন্ধির স্থায়ী ক্ষতি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এই গবেষণাটি বিখ্যাত ল্যানচেট পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। সেখানে দেখা যায়, আলসারেটিভ কোলাইটিসের চিকিৎসায় সচরাচর ব্যবহৃত ওষুধ সালফাস্যালাজিন প্রাথমিক রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের লোকদের অস্থিসন্ধির কার্টিলেজ ভেঙে যাওয়াকে প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, আগ্রাসী রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের রোগীরা ধীর ক্রিয়ার রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের রোগীদের চেয়ে দ্রুত ভালো হন। কারণ তাদেরকে দ্রুত দ্বিতীয় সারির ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা হয়।
এসব প্রমাণের কারণে বর্তমানে অনেক চিকিৎসক রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের ক্ষেত্রে পুরনো ধারণা ঝেড়ে ফেলে দ্রুত এসব ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অবশ্য দ্রুত দ্বিতীয় সারির ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করতে হয়ে। যদি এনএসএ আইডি সম্পৃক্ত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি থাকে, যেমন- আলসার থাকে তাহলে প্রথমেই দ্বিতীয় সারির ওষুধ দেয়া যেতে পারে।
প্রশ্ন : দ্বিতীয় সারির ওষুধের মধ্যে কী কী ওষুধ সবচেয়ে বেশি প্রেসক্রাইব করা হয়?
উত্তর : এসব ওষুধের মধ্যে রয়েছে গোল্ড সল্ট, ইনজেকশন কিংবা মুখে খাওয়ার; হাইড্রোক্সি ক্লোরোকুইন, এটি ম্যালারিয়ার চিকিৎসায়ও ব্যবহৃত হয়; পেনিসিলামাইন, বিখ্যাত অ্যান্টিবায়োটিকের সহোদর এবং মেথোটিক্সেট ও অন্যান্য ইমিউনো সাপ্রেসিভ ওষুধ যা ক্যান্সারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
প্রশ্ন : গোল্ড- তার মানে কি স্বর্ণ, যা আমরা অলঙ্কারে ব্যবহার করি? এটা কিভাবে আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসায় কাজ করে?
উত্তর : বিশুদ্ধ ধাতু সক্রিয় রাসায়নিক গুণবর্জিত এবং তা ব্যবহার করা হয় না। কিন্তু সব ধাতু অ্যাসিডের সাথে মিশে যৌগ তৈরি করে যার নাম লবণ; এগুলো দ্রবণীয় এবং ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। গোল্ড সল্ট অলঙ্কারে ব্যবহৃত একই স্বর্ণের দ্রবণীয় ধরন এবং এটা ইনজেকশন বা মুখে দেয়া যেতে পারে। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের জন্য সবচেয়ে কার্যকর স্বর্ণ উপাদান হলো সেটা, যার অণুতে সালফার রয়েছে। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসায় ১৯২০ সাল থেকে গোল্ড ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
প্রশ্ন : গোল্ড কীভাবে দেয়া হয়?
উত্তর : গোল্ড ইনজেকশন সাধারণত প্রথম কয়েক মাস সপ্তাহে একবার দেয়া হয়, এরপর ধীরে ধীরে মাত্রা বাড়ানো হয়। এরপর মেইনটেন্যান্স ডোজ হিসেবে মাসে একটি করে দেয়া হয়।
ওরাল গোল্ড বা মুখে খাওয়ার গোল্ডের সুবিধা বেশি। কোনো ইনজেকশনের বালাই নেই! সাধারণত দৈনিক দুটি করে ক্যাপসুল খেতে হয়?
প্রশ্ন : গোল্ডে কী ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়?
উত্তর : সম্ভাব্য মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে- কিডনির ক্ষতি সাধন। কিডনি ক্ষতির প্রাথমিক চিহ্ন নিরূপণ করতে ওষুধ চলাকালীন বারবার প্রস্রাব পরীক্ষা করতে হয়।
অন্য সম্ভাব্য মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলো- বোনম্যারো বা অস্থিমজ্জা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া। এ ধরনের জটিলতা নিরূপণ করতে মাঝে মধ্যে রক্ত পরীক্ষা করাতে হয়।
আরেকটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে- ত্বকে চুলকানি ও ফুসকুড়ি হওয়া। সাধারণত ফুসকুড়ি কম হয় এবং শরীরের মাত্র কয়েক জায়গায় হয়। কিন্তু কখনো কখনো এটা তীব্র হতে পারে। গোল্ড বন্ধ করে দেবার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সাধারণত র্যাশ মিলিয়ে যায়।
কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জন্য প্রতি ১০ জন মানুষের মধ্যে প্রায় তিনজনের ইনজেকশন আকারের গোল্ড বন্ধ করে দেয়া হয়।
মুখে খাওয়ার গোল্ডে ওষুধটি বন্ধ করার প্রয়োজন হয় এমন মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম হয়, তবে ওষুধ চলাকালীন রোগীর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মনিটর করার প্রয়োজন হয়। গোল্ড ইনজেকশনের চেয়ে ওরাল গোল্ডে ডায়রিয়া বেশি হয়। যদিও গোল্ড ইনজেকশনের চেয়ে ওরাল গোল্ড কিছুটা নিরাপদ, তবে এর কার্যকারিতাও কিছুটা কম।
আপনি যে ধরনেরই গোল্ড ব্যবহার করুন না কেন, তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে আপনি পার্থক্যটা স্পষ্ট বুঝতে পারবেন। যা হোক, প্রতি ১০ জনের মধ্যে একজন বা দু’জন লোক গোল্ড ইনজেকশন থেকে কোনো সুবিধা পান না।
প্রশ্ন : আর পেনিসিলামাইন? কীভাবে এটা কাজ করে? গোল্ড থেকে এটার পার্থক্যটা কী?
উত্তর : পেনিসিলামাইন বিভিন্ন নামে ওষুধের দোকানে পাওয়া যায়। এটি শরীর থেকে কপার বা তামা অপসারণ করে। উইলসন’স ডিজিজে এটি আদর্শ চিকিৎসা, এ রোগে শরীরে প্রাণনাশক মাত্রায় কপার তৈরি হয়। কিন্তু পেনিসিলামাইন কী করে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের ব্যথা ও প্রদাহের বিরুদ্ধে কাজ করে তা জানা যায়নি। তবে কপার অপসারণে ওষুধটির ভূমিকা অনস্বীকার্য। ধারণ করা হয়, পেনিসিলামাইন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করে। মজার ব্যাপার হলো- এটি রিউমাটয়েড ফ্যাক্টর ওমসকে লক্ষ্যণীয় মাত্রায় কমাতে সাহায্য করে।
গবেষণায় দেখা গেছে, পেনিসিলামাইন গোল্ডের মতো কাজ করে, যদি রোগী সেটা সহ্য করতে পারে।
ওষুধটির কিছু বিখ্যাত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে- এ কিডনি সমস্যা ত্বকে ফুসকুড়ি ওঠা, মাংসপেশি দুর্বল হওয়া, অস্থিমজ্জার দমন এবং যেসব লোকের পেনিসিলিনে অ্যালার্জি রয়েছে তাদের মারাত্মক অ্যালার্জিগত প্রতিক্রিয়া। আগে রিউম্যাটোলজিস্টরা এটি সেসব রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতেন, যাদের ক্ষেত্রে গোল্ড ইনজেকশন ব্যর্থ হতো বা যারা গোল্ড সহ্য করতে পারতেন না। যদিও এটা বাতের ওষুধের তালিকায় রয়েছে, তবু তীব্র পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে এটার বদলে ইমিউনো সাপ্রেসিভ ওষুধ মেথোট্রিক্সেট দেয়া হয়।
প্রশ্ন : যদি ক্লোরোকুইনের কারণে আপনার চোখের ক্ষতি হয় তাহলে সেটা কীভাবে বুঝবেন?
উত্তর : কর্নিয়ার ক্ষতি হলে দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসে এবং আলো অসহনীয় লাগে। আলোর চারধারে রংধনু দেখা যায়। সুখের কথা হলো- কর্নিয়ার ক্ষতি সম্পূর্ণ পুনরুদ্ধার হয়, ওষুধ বন্ধ করলে আপনাআপনি চোখে সব স্পষ্ট হয়। কিন্তু রেটিনার ক্ষেত্রে এ কথা খাটে না। রেটিনায় মারাত্মক ক্ষতি হয় চোখ পুরোপুরি অন্ধ হয়ে যায়।
প্রশ্ন : এবার ইমিউনোসাপ্রেসিভা ড্রাগের কথা বলুন- এরা কী করে?
উত্তর : এসব ওষুধ আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে কিছুটা কমিয়ে দেয়। সুতরাং রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের ক্ষেত্রে দলত্যাগী ইমিউন কোষগুলো যা আপনার অস্থিসন্ধিতে ঠোকরাতে থাকে, কিছুটা থেমে যায়। দুঃখজনক ব্যাপার হলো- এসব ওষুধ আপনার পুরো রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে আক্রান্ত করে, আপনার মারাত্মক ইনফেকশনের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এ ছাড়া এসব ওষুধের আরো অনেক জীবনের জন্য হুমকি স্বরূপ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে।
প্রশ্ন : আর ম্যালেরিয়ার ওষুধ? এটিও আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
উত্তর : এটি ক্লোরোকুইন, হাইড্রোক্সি ক্লোরোকুইন সালফেট দিয়ে গঠিত। এটি বিভিন্ন নামে বাজারে পাওয়া যায়। গোল্ডের মতো কেউ প্রকৃত জানেন না যে, এটি কিভাবে কাজ করে। গোল্ডের মতোই এটিও ব্যথা এবং প্রদাহ সারাতে তিন থেকে ছয় মাস সময় নেয়। এটি গোল্ডের মতো কার্যকর না হলেও কিছু চিকিৎসক গোল্ড প্রেসক্রাইব করার আগে এই ওষুধটি দিয়ে চেষ্টা করেন। কারণ যদি এটি কাজ করে তাহলে রোগীকে এটি অনেকদিন দেয়া যায়। এর মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও কম। এটি একটি নিরাপদ দ্বিতীয় সারির বাতের ওষুধ।
প্রশ্ন : ক্লোরোকুইন কী ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ঘটায়?
উত্তর : দুশ্চিন্তার বিষয় হলো এটি চোখকে আক্রান্ত করে। তবে চিকিৎসকরা এখন এটি স্বল্পমাত্রায় ব্যবহার করেন যার কারণে এর কার্যকারিতাও কমে যায়।
প্রশ্ন : চোখে কী ঘটে?
উত্তর : ক্লোরোকুইন রেটিনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে- রেটিনা হলো চোখের একেবারে ভেতরের স্তরের নাম। ক্লোরোকুইন কর্নিয়াতেও অস্বচ্ছতা তৈরি করতে পারে- চোখের সামনের যে অংশ স্বচ্ছ তার নাম কর্নিয়া। তাই যদি আপনি এই ওষুধ গ্রহণ করতে থাকেন, আপনি প্রতি চার থেকে ছয় মাস অন্তর চোখ পরীক্ষা করাবেন। চোখের সমস্যা দেখা দেবার আগে সাধারণত ক্লোরোকুইনের মাত্রা প্রায় ১০০ গ্রাম ছাড়িয়ে যায় (যার মানে এটি ২০০ মিলিগ্রামের ৫০০ ট্যাবলেটের বেশি)। এক বছর চিকিৎসার কম সময়ে রেটিনা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঘটনা (রেটিনোপ্যাথি) বিরল।
দুঃখজনক ব্যাপার হলো, ক্লোরোকুইন বন্ধ করে দেয়ার পরও তা শরীরে বছরের পর বছর থেকে যায় এবং চিকিৎসা গ্রহণের কয়েক বছর পর রেটিনোপ্যাথি ঘটতে দেখা যায়।
এসব ওষুধের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ওষুধটি হলো মেথোট্রিক্সেট। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসায় এটি প্রথম ১৯৫১ সালে পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু শুধু এখন পর্যন্ত নয়, অনেক বছর গবেষণার পর, রিউমাটোলজিস্টরা প্রায় সচরাচর মেথোট্রিক্সেট ব্যবহার করেন।
ইমিউনোসাপ্রেসিভ ওষুধগুলো প্রথম ব্যাপক মাত্রায় ব্যবহৃত হয় ক্যান্সারের চিকিৎসায়। এসব ওষুধ অবশ্য প্রতিস্থাপিত অঙ্গের প্রত্যাখ্যান প্রতিরোধ করতে এবং অনিয়ন্ত্রিত পুনঃপুন ঘটনাশীল চর্মরোগ সোরিয়াসিসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
প্রশ্ন : রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসায় কখন গোল্ড বা অ্যান্টি ম্যালেরিয়া ওষুধের পরিবর্তে মেথোট্রিক্সেট ব্যবহার করা হয়?
উত্তর : গোল্ড বা অ্যান্টি ম্যালেরিয়া ওষুধে উন্নতি না হলে কিছু চিকিৎসক রোগীকে মেথোট্রিক্সেট দিয়ে চেষ্টা করেন। অন্য চিকিৎসকদের মতে, রোগীকে প্রথমে মেথোট্রিক্সেট বা গোল্ড ইনজেকশনের সম্পূর্ণ ঝুঁকি ও সুবিধা ব্যাখ্যা করার পর রোগীকে সিদ্ধান্ত নিতে বলবেন। একসময় এসব ওষুধ ব্যবহারে খুব কড়াকড়ি নিয়ম মানা হতো, কিন্তু বর্তমানে চিকিৎসকরা এ ব্যাপারে উদার। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসার শুরুতে কোনো চিকিৎসক ইমিউনোসাপ্রেসিভ ওষুধ প্রেসক্রাইব করলে তাকে অবশ্যই রোগীর কাছে ওষুধের ঝুঁকির বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করতে হবে। একই সাথে দ্বিতীয় সারির অন্য ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করতে গেলেও রোগীর মতামত নেয়া প্রয়োজন।
প্রশ্ন : গোল্ড ইনজেকনশনের সাথে তুলনা করে দেখলে মেথেট্রিক্সেটের ঝুঁকি ও লাভগুলো কী কী?
উত্তর : এই দুটো ওষুধই মারাত্মক- এমনকি প্রাণসংশয়ী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ঘটায়। তাই রোগীর সতর্ক মনিটরিং প্রয়োজন। উদাহরণ-স্বরূপ গোল্ড ইনজেকশন কিংবা অল্প পেনিসিলিন সমৃদ্ধ পেনিসিলামাইন পর্যন্ত মারাত্মক অ্যালার্জিগত প্রতিক্রিয়া ঘটায়, যাকে অ্যানাফাইল্যাকটিক শক বলে। মেথোট্রিক্সেট আকস্মিক তীব্র ও মাঝে মধ্যে প্রাণনাশক অস্থিমজ্জার দমন ও পাকস্থলি-অন্ত্রে বিষক্রিয়া ঘটায়, সাধারণত সেসব লোকের যারা একই সময়ে স্টেরয়েড ওষুধ গ্রহণ করছেন।
গোল্ড খুব সম্ভব মেথোট্রিক্সেটের চেয়ে বেশি কিডনির ক্ষতি করে; আর মেথোট্রিক্সেট গোল্ডের চেয়ে বেশি লিভারের ক্ষতি করে।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, অর্থোপেডিকস ও ট্রমা বিভাগ, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল।
চেম্বার-১ : পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিঃ, ২, ইংলিশ রোড, ঢাকা। ফোন: ০৯৬১৩৭৮৭৮০২
চেম্বার-২ : আজগর আলী হসপিটাল, ১১১/১/এ ডিস্টিলারি রোড, গেন্ডারিয়া, ঢাকা।
ফোন : ০১৭৮৭৬৮৩৩৩৩, ১০৬০২