জঙ্গিবিমান সঙ্কটে ভারত!

জঙ্গিবিমান সঙ্কটে ভারত! - ছবি : সংগৃহীত
শক্তি হ্রাস পাওয়ার প্রেক্ষাপটে ভারতীয় বিমান বাহিনী নতুন ২০০টি জঙ্গি বিমান সংগ্রহের পরিকল্পনা করছে। অথচ তাদের চোখের সামনে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সিতারামন বর্তমান অর্থ বছরের জন্য সংশোধিত বাজেটে ক্যাপিটাল ফান্ড বরাদ্দ কমিয়ে দিয়েছেন।
সিতারামন ২০১৯ সালের জুলাই মাসে শেষ বাজেটে ভারতীয় বিমান বাহিনীর ক্যাপিটাল এক্সপেন্ডিটাচার হিসেবে বরাদ্দ করেছিলেন ৩৯,৩০২.৬৪ কোটি রুপি। ২০১৯-২০ সময়কালের সংশোধিত হিসাবে তা বাড়িয়ে করা হয়েছিল ৪৪,৮৬৯.১৪ কোটি রুপি।
শনিবার একসময়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী সিতারামন ২০২০-২১ সময়কালের জন্য বরাদ্দ করেন ৪৩,২৮১.৯১ কোটি রুপি। যা সংশোধিত হিসাব থেকে ৩.৫ ভাগ কম।
অথচ ভারতীয় বিমান বাহিনী বেশ সমস্যা আছে এখন। বাজেট যখন বর্ধিত ছিল, তখনই তারা আগের অর্ডারের মূল্য পরিশোধ করতে পারেনি। প্রতিরক্ষা সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে দি প্রিন্টকে।
আবার ভারতীয় বিমান বাহিনীর কর্মকর্তারা আশা করেছিলেন যে ২০২০-২১ সময়কালে তাদের জন্য বরাদ্দ বাড়বে। কিন্তু বাস্তবে তা হ্রাস পাওয়ায় তারা বেশ হতাশই হয়েছে।
বিমান বাহিনীর চেয়ে ভারতের সেনা ও নৌবাহিনী কিছুটা ভাগ্যবান। তাদের বরাদ্দ কিছুটা হলেও বেড়েছে।
সংশোধিত হিসাবে সেনাবাহিনীর জন্য চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ করা হয়েছিল ২৯,৬৬৬.৯০ কোটি রুপি। এখন তা ৮.৪ ভাগ বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩২,৩৯২.৩৮ কোটি রুপি।
মারাত্মক অর্থ সঙ্কটে থাকা নৌবাহিনীর বাজেটও সামান্য বেড়েছে। ২০২০-২১ সময়কালে তাদের বরাদ্দ ২৬,৬৮৮.২৮ রুপি। তা তাদের ২৬,১৫৬,৪৩ কোটি রুপি বরাদ্দের চেয়ে ২ ভাগ বেশি।
২০০ বিমান কেনা হবে
গত মাসে প্রতিরক্ষাসচিব অজয় কুমার বলেছেন, ভারতীয় বিমানবাহিনীর বিমান সংখ্যা বেশ কমে যাওয়ায় শূন্য স্থান পূরণের জন্য প্রায় ২০০ জঙ্গি বিমান ক্রয় করার পরিকল্পনা করছে।
তিনি বলেন, প্রায় ২০০ বিমান কেনার প্রক্রিয়া চলছে। আমরা ৮৩টি লাইট কমব্যাট এয়ারক্রাফট (এলসিএ) মার্ক ১এ কেনার প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছি। এসব বিমান ভারতের জরুরি প্রয়োজন পূরণ করবে।
ভারতীয় বিমান বাহিন ১১৪টি নতুন জঙ্গি বিমান কেনার জন্য দরপত্র আহ্বান করার প্রক্রিয়ায় আছে বলেও জানা গেছে।
ভারতীয় বিমান বাহিনীর প্রয়োজন ৪২ স্কয়াড্রন জঙ্গিবিমান। তারা তা কমিয়ে করছে ২৮ স্কয়াড্রন বিমান। ভারতীয় বিমান হরে থাকা ১০ স্কয়াড্রন মিগ-২১ বাইসন বদলানো দরকার। এগুলো পুরনো হয়ে অবসরের বয়সে চলে গেছে অনেক আগেই।
বাজেট সংশোধনীটি ঘটল পাকিস্তানের সাথে আকাশযুদ্ধে বেশ ভালোমতো পর্যুদস্ত হওয়ার প্রেক্ষাপটে। ২০১৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ওই আকাশযুদ্ধটি হয় ভারতীয় বিমানবাহিনী পাকিস্তানের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে বালাকোটে গোলাবর্ষণ করার প্রেক্ষাপটে।
কারিগরি দিক থেকে পাকিস্তানের চেয়ে ভারতীয় বিমান বাহিনী অনেক এগিয়ে আছে। ভারতের বিমানগুলো উন্নতমানের। এগুলোতে অনেক ভালো মানের ক্ষেপণাস্ত্র, সতর্কব্যবস্থা ও নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা রয়েছে।
ভারতীয় বিমান বাহিনী আরো আধুনিক মধ্য আকাশে রিফুয়েলিং বিমান চাচ্ছে। এছাড়া পরিবহন বিমানগুলোও বদলাতে চাচ্ছে। এসব বিমানও বেশ পুরনো হয়ে গেছে। কিন্তু তহবিলের অভাবে বদল করা যাচ্ছে না।
দি প্রিন্ট