অসময়ে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ : 'জম্মের মতো মাছ' পাচ্ছে জেলেরা
অসময়ে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ : 'জম্মের মতো মাছ' পাচ্ছে জেলেরা - ছবি : সংগ্রহ
বরগুনার পায়রা, বলেশ্বর ও বিষখালী নদীতে ভরা মৌসুমে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ ধরা না পড়লেও শীতের এ অসময়ে ধরা পড়ছে প্রচুর পরিমাণ ইলিশ মাছ। ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ মাছ ধরা পড়ায় জেলেরাও উৎসাহিত হয়ে পড়েছেন। ঠাণ্ডা-শীতকেও উপেক্ষা করে রাত-দিন ইলিশ মাছ ধরতে ব্যস্ত বরগুনার উপকূলীয় জেলেরা। নদীতে জাল ফেলে কোনো জেলেই খালি হাতে ফিরছেন না। মধ্যরাত পর্যন্ত কেনা-বেচায় মাছ ঘাটগুলো হয়ে উঠেছে সরগরম। দেখে মনে হবে এ যেন ইলিশের মৌসুম। এমনটাই বলছে মৎস্য বিভাগ। তারাও এখন খুশি।
পাথরঘাটার জেলে আলামিন বলেন, সাগরে মাছ অনেক, এহন জম্মের মতো মাছ পাওয়া যায়। আল্লায় দিলে আরো মাছ পামু। দ্যাহেন না ভাই, মাছ উডাইয়া আউগাইতে পারি না’। শীতের মৌসুমে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ ধরা পড়ায় খুশি।
আলামিনের মতো অনেকের মনেই এখন আনন্দ বইছে। অসময়ে সাগরে ইলিশ পাওয়ায় আনন্দ বইছে জেলে পাড়ায়। শীতের মৌসুমে সাগর ও উপকূলে সাধারণত ইলিশ মাছ তেমন পাওয়া যায় না, প্রচলিত এই ধারণা দীর্ঘদিনের। তবে এবার তার ব্যতিক্রম ঘটিয়ে বাজারে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে।
পাথরঘাটার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, অসময়ে বিএফডিসি ঘাটে উল্লেখযোগ্য ট্রলার। প্রতিটি ট্রলারেই কম-বেশি ইলিশ রয়েছে। দুইদিন আগেও একটি ট্রলারে ১৭ হাজার মাছ ধরা পড়ে। যার দাম ছিল ১২ লাখ টাকা। একই দিন প্রায় ২০টি ট্রলারে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ নিয়ে ঘাটে এসেছিল। মাছ বিক্রি করে আবারো ওই ট্রলার মাছ ধরার জন্য সাগরে গেছে। ইলিশের সরবরাহ থাকায় পাইকারি বাজার ছাড়াও শহরের স্থানীয় খুচরা বাজারগুলোতেও ইলিশ মিলছে মোটামুটি সহনীয় দামেই। ফলে ক্রেতারাও এই অসময়ের ইলিশে মুগ্ধ।
সাগর থেকে মাছ নিয়ে আসা ট্রলার জেলে ইউসুফ মাঝি বলেন, শীতের সময়ে সাধারণত মাছ কম পাওয়া যায়, কিন্তু এবার শীতের মৌসুমে প্রচুর মাছ পাচ্ছি আমরা। গেল ১৫ বছরের তুলনায় এ বছর শীতে সব থেকে বেশি মাছ পেয়েছি। সাগরের গভীর পানি থেকে কম পানিতে মাছ চলাচল বেশি হওয়ায় জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে।
মৎস্য আড়ৎদার মো. হিরু বলেন, এখন ৯০০ থেকে এক কেজি ওজনের প্রতি মণ ১১-১২ হাজার টাকায় বিক্রি হবে।
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, শীতের সময় ইলিশ আমাদের সৌভাগ্য। আমি মনে করি মা ইলিশের নিষেধাজ্ঞার সময় বাংলাদেশী জেলেরা মাছ ধরা থেকে বিরত থাকার কারণেই এখন মাছ পাওয়া যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন,তবে ভারতীয় জেলেরা এ সময় বাংলাদেশী পানিসীমায় মাছ ধরা থেকে বিরত থাকলে আরো বেশি মাছ পাওয়া যেত, যার ধারাবাহিতা অব্যহত থাকত।