এক টুকরা মাছে ফুটফুটে তরুণ হয়ে গেল বৃদ্ধা!
এক টুকরা মাছে ফুটফুটে তরুণ হয়ে গেল বৃদ্ধা! - ছবি : সংগৃহীত
জাদুমন্ত্র নাকি! তিনি ছিলেন তরুণী। এক টুকরা মাছ খেয়ে রাতারাতি তিনিই হয়ে গেলেন বৃদ্ধা। ম্যাজিক নয়। তবে ম্যাজিক-এর মতোই ঘটনা। অলৌকিক মনে হলেও একেবারে সত্যি ঘটনা। গাঁজাখুড়ি কোনো গল্পও নয়। বাস্তবে ঠিক এমনই ঘটেছে এশিয়ার দেশ ভিয়েতনামে। মুখভর্তি ভাঁজ, ঝুলে পড়া চামড়া...। ২৩ বছরের ওই তরুণীকে এখন দেখলে মনে হবে যেন ৭৩ বছরের বৃদ্ধা! আর সেই তরুণীর দাবি, শুধুমাত্র এক পিস মাছ খেয়েই নাকি তার জীবনে এমন বিপর্যয় নেমে এসেছে।
মধ্যাহ্নভোজে মাছ খেয়েছিলেন গৃহবধূ থি ফুয়ং। তার পরই সারা শরীর চুলকোতে শুরু করেন তিনি। শরীরে শুরু হয় অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন। টাকা ছিল না। তাই সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে যেতে পারেননি তিনি। স্থানীয় একটি ওষুধের দোকান থেকে ওষুধ কিনে খান। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয় না। অ্যালার্জির জেরে ধীরে ধীরে বুড়িয়ে যেতে থাকেন তিনি। ২০০৮ সালের ঘটনা। তার পর থেকে গত ১২ বছরে রোগ সারেনি তার। ভিয়েতনামের মেকং ডেলটা অঞ্চলের বেন ট্রি এলাকার বাসিন্দা থি ফুয়ং এখন একেবারেই বুড়িয়ে গিয়েছেন। এখনো নিজের বিয়ের ছবি দেখলে কেঁদে ওঠেন তিনি।
তবে চিকিত্সকরা জানিয়েছেন, বিরল লাইপোডিসট্রফি অসুখে আক্রান্ত ফুয়ং। এই সিনড্রোম-এর চিকিৎসা নেই বললেই চলে। সারা বিশ্বে প্রায় দুহাজার মানুষ এই বিরল রোগে আক্রান্ত। এই অসুখে ত্বকের নিচে পুরু ফ্যাটি টিস্যুর স্তর তৈরি হয়। যার ফলে চামড়া ঝুলে যায়। রোগী বুড়িয়ে যেতে শুরু করে।
নীরব ঘাতক মেটাবলিক সিনড্রোম
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অব হেলথের মতে ১. মেদবহুল পেট, ২. ট্রাইগ্লিসেরাইডের (রক্তে একপ্রকার চর্বি) উচ্চমাত্রা, ৩. এইচডিলের (উপকারী কোলেস্টেরল) নিম্নমাত্রা, ৪. উচ্চ রক্তচাপ এবং ৫. হাই ফাস্টিং ব্লাড সুগার (একপ্রকার প্রি-ডায়াবেটিস) এই পাঁচটি রিস্ক ফ্যাক্টরের মধ্যে কমপক্ষে তিনটি রিস্ক ফ্যাক্টর (ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়) শরীরে বিদ্যমান থাকলে তাকে মেটাবলিক সিনড্রোম বলে।
আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব ফ্যামিলি ফিজিশিয়ানসের বোর্ড অব ডিরেক্টর্সের এক সদস্য বলেন, শরীরের ভাস্কুলার সিস্টেমের ওপর এসব রিস্ক ফ্যাক্টরের প্রত্যেকটির নিজস্ব প্রতিকূল প্রভাব রয়েছে। কারো দেহে এদের সমন্বয় ঘটলে তার হৃদরোগ কিম্বা ডায়াবেটিস হওয়ার প্রবল ঝুঁকি থাকবে। এমনকি তার স্বাস্থ্য আরো মারাত্মক অবস্থায়ও পড়ে যেতে পারে। তিনি আরো বলেন, নিম্নমানের ডায়েট এবং কায়িক শ্রমের অভাবের কারণে যে কারো শরীরে এই রিস্ক ফ্যাক্টরগুলো দেখা দিতে পারে।
তবে, মেটাবলিক সিনড্রোম সাময়িকভাবে থামানো কিম্বা সম্পূর্ণভাবে উপশম করার বেশ কয়েকটি উপায় আছে। এ জন্য প্রথম : স্বাস্থ্যসম্মত জীবনধারা মেনে চলতে এবং কায়িক শ্রম বাড়াতে হবে। সেই সাথে খেতে হবে স্বাস্থ্যসম্মত সুষম খাবার। খাবার খেতে হবে টাটকা এবং তা ধাতুপাত্রে (প্লাস্টিকের পাত্রে নয়) সংরক্ষিত খাবার। দ্বিতীয়ত : ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, রাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে এবং মেনটাল স্ট্রেস প্রশমনের জন্য প্রয়োজন মতো ইয়োগা (যোগ ব্যায়াম) ও মেডিটেশন করতে হবে। এ ছাড়া, মেটাবলিক সিনড্রোমের সাথে জড়িত রিস্ক ফ্যাক্টর যাদের দেহে আছে তাদের অবশ্যই ধূমপান পরিহার করতে হবে।
ইন্টারনেট।