তবুও আমার জন্মভূমি
তবুও আমার জন্মভূমি - ছবি : সংগ্রহ
এবার ওয়াশিংটন-ভিত্তিক ‘ইউএস নিউজ অ্যান্ড ওয়ার্ল্ড রিপোর্ট’-এর প্রণীত ‘বেস্ট কান্ট্রিজ ২০২০’-এর ৭৩টি দেশের তালিকায়ও বাংলাদেশের জায়গা হয়নি। আমেরিকা, এশিয়া, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার ৩৬টি দেশের ২০ হাজারেরও বেশি মানুষের মাঝে চালানো এই জরিপে বাংলাদেশ একটি সেরা দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেনি (নয়া দিগন্ত, ১৮ জানুয়ারি ২০২০)।
কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায় এই বাংলার রূপ-ঐশ্বর্যে বিমোহিত হয়ে গর্বভরে গেয়েছিলেন- ‘ধনধান্য পুষ্পভরা আমাদের এই বসুন্ধরা/তাহার মাঝে আছে দেশ এক সকল দেশের সেরা/ স্বপ্ন দিয়ে তৈরি সে দেশ স্মৃতি দিয়ে ঘেরা/এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি/ সকল দেশের রাণী সে যে, আমার জন্মভূমি।’ এটা কবির আবেগমথিত উক্তিই নয় ও আদতেও এটাই। এ দেশের সম্পদ ও রূপ-মাধুর্যের টানে কত জাতি ও ধর্মের লোক এ দেশে এসে বসতি স্থাপন করেছে। এ দেশকে জয় করে এর সম্পদ লুণ্ঠন করেছে। তার পরও যা অবশিষ্ট ছিল তাও আমরা নিজেরা হানাহানি করে কাজে লাগাতে পারিনি। নিজের ঢাক নিজেই পিটিয়ে, রবিঠাকুরের ভাষায়- ‘নিজেরে করিতে গৌরবদান, নিজেরে কেবলই করি অপমান।’ তাই বিশ্ববিবেচনায় একটি ‘সেরা দেশ’ বলে বাংলাদেশ গণ্য হতে পারল না।
বাংলাদেশ একটি শস্য শ্যামল সুন্দর দেশ। তবে এ দেশে সঙ্কট চলছে জন্মলগ্ন থেকেই। স্বাধীনতার পরপরও এ দেশে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। এরই মধ্যে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মুজিবুর রহমানকে ভারত থেকে আগত প্রায় এক কোটি উদ্বাস্তুকে স্বাধীন দেশে পুনর্বাসিত ও একটি প্রলয়ঙ্করী বন্যা মোকাবেলা করতে হয়। সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত দেশটির বিভিন্ন দলমতের মধ্যে সমন্বয় বিধানের দায়িত্বও তার ওপর বর্তায়। এ লক্ষ্যে একপর্যায়ে এমন পরিস্থিতির জন্ম নেয় যে, তাকে নিজের দীর্ঘদিনের লালিত বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিলোপ ঘটিয়ে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হয়। এর অল্প দিনের মধ্যেই তিনি সপরিবারে নিহত হন এবং তার দলের অন্যতম শীর্ষ নেতা খন্দকার মোশতাক আহমদ ক্ষমতাসীন হয়ে দেশে সামরিক আইন জারি করেন। শেখ মুজিবের কারাবন্দী চার কমরেডকে জেলে হত্যা করা হয় নভেম্বর মাসে।
এ সামরিক ব্যবস্থা কিছু দিন চলার পর প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পুনঃপ্রবর্তন করেন; যে ধারা দেশে অদ্যাবধি বহাল আছে। এরপর জিয়াও নিহত হন। এবার জেনারেল এরশাদের সামরিক শাসন এবং বহুদলীয় গণতন্ত্র চলে। এভাবে রাষ্ট্রপ্রধানদের ও স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতাদের হত্যার চাঞ্চল্যকর ঘটনা এবং এরশাদের বিতর্কিত উন্নয়ন প্রচেষ্টা ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলতে থাকে। এ দিকে, দেশের উন্নয়ন ধারা ক্রমাগত ব্যাহত হয়। এভাবে প্রায় দুই দশককাল বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে থাকে এবং দেশের দরিদ্র মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি যা ছিল স্বাধীনতা যুদ্ধের মূলমন্ত্র তা কণ্টকাকীর্ণই থেকে যায়। হত্যা, ক্যু ও উৎখাতের রাজনীতির পর আশা করা গিয়েছিল, ১৯৯১-এর ২৭ ফেব্র“য়ারির নিরপেক্ষ ও সংসদ নির্বাচনের পর দেশে গণতান্ত্রিক বাতাবরণে উন্নয়নের সুবাতাস বইবে এবং শান্তি-স্বস্তি ফিরে আসবে।
১৯৯১-এর ২৭ ফেব্র“য়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বরাবরের মতোই আশা করেছিল, তারা জিতবেন এবং সরকার গঠন করবেন। সেটা যখন হলো না তারা কার্যত পার্লামেন্টে বহুদলীয় গণতন্ত্রকে অকার্যকর করার প্রয়াস চালালেন। এই নির্বাচনে বিজয়ী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে (বিএনপি) দেশের উন্নয়নে সহযোগিতার হাত বাড়ানো হলো না। উপর্যুপরি পার্লামেন্ট বয়কট ও হরতালের মধ্য দিয়ে দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করা হলো। এর পরেরবার ১৯৯৬ সালে যখন আওয়ামী লীগ নির্বাচনের পথে ক্ষমতায় এলো, তখন বিএনপিও অনুরূপ আচরণ করেছে। পালাক্রমে, ২০০১ সালে যখন বিএনপি ক্ষমতায় এলো আবার, আওয়ামী লীগ বিএনপিকে সহযোগিতা করল না এবারো। অথচ এ ক’টি নির্বাচন নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীন গ্রহণযোগ্য পরিচ্ছন্নভাবে হয়েছিল।
২০০৯ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ লগি-বৈঠার রক্তাক্ত আন্দোলনের পথ ধরে এবং ২০০৮ সালে ক্ষমতায় এসে পরবর্তী একাধিক দলীয় নির্বাচনের অধীন বিএনপিকে ছলে-বলে কলে-কৌশলে পার্লামেন্টের বাইরে রেখে দেয়। এসব প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন দেশে-বিদেশে প্রত্যাখ্যাত এবং দেশের ভাবমর্যাদা দেশে-বিদেশে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। ফলে বিশ্বসমাজ বাংলাদেশকে একটি সেরা দেশ বলে স্বীকৃতি দিতে কুণ্ঠিত। বিশ্বসমাজে এটা বাংলাদেশের জন্য একটি মারাত্মক ইমেজ সঙ্কট। এ দিকে ভারত বাংলাদেশকে তেমন কিছু দেয়া ব্যতিরেকেই অনেক কিছু আদায় করে নিয়েছে। দেশের ভেতরে রাজনৈতিক হানাহানি ও অনৈক্য বাইরের শক্তিকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নিজ নিজ দেশের কালচার ও সংস্কৃতি ঢুকিয়ে দেয়ার চেষ্টা করতে উদ্বুদ্ধ করছে। অসম বাণিজ্য চুক্তিতে আবদ্ধ করার চেষ্টা করছে কোনো কোনো দেশে।
রাজনৈতিক সঙ্কট দেশের অর্থনীতিকে একটি অসম উন্নয়নের পথে ঠেলে দিচ্ছে। একটি গোষ্ঠীকে বিপুল সম্পদের মালিক বানিয়ে দেশের বিপুল জনগোষ্ঠীকে দরিদ্র জীবনযাপনে বাধ্য করছে। ব্যাংক লুটের টাকা থেকে শুরু করে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি এবং ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে প্রভাবশালী কিছু লোক ফুলে-ফেঁপে উঠছে। দেশের সম্পদ তারাই লুটছে এবং বিদেশে কোটি কোটি টাকা পাচার করছে। দেখে মনে হয় তারা এ দেশের কেউ নয়- এরা যেন ‘ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’র লোক। সরকারি ভাষ্য মতে, দেশে উন্নয়নের মহোৎসব চলছে। বিদেশী গাড়ি কিনে সহজে চলাচলের জন্য এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও ফ্লাইওভার এবং মেট্রোরেলের মতো আরো অনেক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলছে তো চলছেই, এটা যেন আর শেষ হয় না। এসব প্রকল্পের ব্যয় ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। এই মহাদুর্নীতির কোনো জবাবদিহিতা নেই কেন? একই সাথে উন্নয়ন ও ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণও নেই।
গ্রামের মানুষ এবং গ্রাম থেকে শহরে আসা ক্রমবর্ধমান বিপুলসংখ্যক উদ্বাস্তু লোকের কথা সরকার কমই ভাবে বোধ হয়। কারণ, বিগত তিনটি নির্বাচনে ক্ষমতায় আসতে তাদের ভোটের প্রয়োজন হয়নি। এ সরকারের কথাবার্তা ও আচরণ দেখে মনে হয়, ভবিষ্যতেও ক্ষমতায় আসতে ভোটের দরকার হবে না। এমনই একটি ভোগবাদী অভিজাততন্ত্রের উত্থান এ দেশে ঘটছে। এরা নিজেদের বিরোধীদের ‘দেশের স্বাধীনতাবিরোধী’ আখ্যায়িত করে ঘোষণা দিচ্ছে, ‘স্বাধীনতা বিরোধীদের’ আর ক্ষমতায় আসতে দেয়া হবে না। এমন একটি অগণতান্ত্রিক দরিদ্র দেশের সঙ্কীর্ণ বাজারে যেখানে সরকারদলীয় লোকদের কমিশন ও চাঁদা দেয়া ছাড়া বিনিয়োগ করা যায় না, সেখানে দেশীয় ও বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেতে পারে না। ফলে দেশটি স্বাধীনতার পর ৪৮ বছরেও দারিদ্র্যমুক্ত হতে পারল না।
অপর দিকে, সামাজিক ও নাগরিক জীবনযাপনের ক্ষেত্রে চলছে চরম নৈরাজ্য। খুন, জখম, গুম, চাঁদাবাজি, ব্যভিচার, অনাচার, অবিচার ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। বিচারহীনতার অপসংস্কৃতি এমন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, যে কারণে এসব বেড়েই চলেছে। এ ব্যাপারগুলো নিয়ে দেশের কর্ণধারদের কোনো মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে রাজনীতিকদের মধ্যে যেহেতু প্রতিহিংসার রাজনীতি ব্যাপক, সামাজিক জীবনেও এর ছায়াপাত ঘটেছে। কারো জানমালই নিরাপদ নয় এবং যেকোনো সময় যে কেউ অপমান-অপদস্থ ও আক্রান্ত হয়ে যেতে পারে। বিবেকহীনতার অপরাজনীতি সমাজকে কলুষিত করে ফেলেছে। প্রায় সবাই আজ দলীয় বিবেচনায় মূল্যায়িত হচ্ছে। প্রবীণদের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা তলানিতে এসে ঠেকেছে। রাজনৈতিক কারণে ভাইয়ে-ভাইয়ে, সহপাঠী-সহপাঠীতে, পিতা-পুত্রে প্রভৃতি নিকটজনের মধ্যে বিভেদের বীজ রোপিত হচ্ছে।
সমাজে এমন একটি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে যে, কে কোন দল করছে এর দ্বারা নির্ধারিত হচ্ছে- কে কেমন বিচার পাবে। ভিন্নমতাবলম্বীদের প্রতি সমাজে অসহিষ্ণুতা চরম পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। ঐতিহ্যগতভাবে সুসভ্য এ দেশটিকে বিদেশীরা আজ আর ‘সেরা’ বলে না। এ দেশের সমাজে আজ বিবেকের বাণী নীরবে-নিভৃতে হাহাকার করে। একটা সময় ছিল যখন দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের নাম প্রতিবেশী ও দেশের লোক জানত এবং সমাজে তাদের কদর ছিল। আজ রাজনৈতিক দলের দুর্বৃত্তদের নাম সবাই জানে এবং সমাজে তাদের কদরই বেশি। এক সময় পাড়ার বখাটে ছেলেদের সবাই ঘৃণার চোখে দেখত। এখন তাদের সবাই দেখে ভয়ের চোখে। তাদের অপকর্ম থেকে নিস্তার পাওয়ার জন্য পিঠে হাত বুলিয়ে দেয়। একজন বিপদে পড়লে দশজন এগিয়ে আসত। এখন একে বিপদে পড়লে দশে ভয়ে পালায়। আজ সব কিছুই রাজনৈতিক স্বার্থের ভালো-মন্দের বিবেচনায় বিবেচ্য। অপরাধী শাস্তি পাবে কি না, গুণীজন সম্মান পাবে কি না সবই রাজনৈতিক বিবেচনায় নির্ধারিত হয়।
শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির ক্ষেত্রে চলছে চরম বন্ধ্যত্ব। সৃষ্টিশীলতা নেই বললেই চলে। চলছে পাশ্চাত্যের বস্তুবাদী সভ্যতার অন্ধ অনুকরণ। দেশের শ্রমিক কৃষক সাধারণ জনগণ যাদের নিরন্তর পরিশ্রমে দেশ বেঁচে আছে এবং যারা দেশের উন্নয়নের চাকা সচল রাখছে, তাদের নিত্যদিনের অভাব-অভিযোগ, সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনার চিত্র এ দেশের সংস্কৃতিসেবীদের কর্মে উপেক্ষিত। ব্যতিক্রম ছিলেন এস এম সুলতান, যার চিত্রকর্মে দেশের উন্নয়নে শ্রমজীবী মানুষের বলিষ্ঠ অবদান ফুটে উঠেছে। কৃষক কঠোর পরিশ্রমে উৎপাদিত ফসলের মূল্য পায় না। শ্রমিক কঠোর পরিশ্রম করেও ন্যায্য মজুরি পায় না- এসব বাস্তবতা দেশের শিল্প-সাহিত্যে তেমন একটা স্থান পায় না। শহুরে সচ্ছল শ্রেণী কী কৌশলে গ্রামগুলোকে শোষণ করছে তার বিবরণও শিল্প-সাহিত্যে নেই। নদীভাঙনে প্রাকৃতিক দুর্যোগে পর্যুদস্ত হয়ে লাখ লাখ ছিন্নমূল মানুষ গ্রাম ছেড়ে শহরের ঘিঞ্জি বস্তিতে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাদের জীবনচিত্র কেউ আঁকে না, লেখে না। শহরে এসে তারা যেমনই হোক একটা কাজ পায়, কিন্তু গ্রামের লোকের অবস্থা আরো করুণ। অথচ এসব কথা বলার লোকের আজ বড়ই অভাব। সস্তা প্রেমের গল্প-উপন্যাস এবং মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ে বানোয়াট গল্প-উপন্যাসে বাজার সয়লাব। তরুণ প্রজন্ম আজ ব্যস্ত ফেসবুক, ইন্টারনেট ও বিদেশী কিসসা নিয়ে। ফলে আজকের প্রজন্ম স্বদেশের প্রতি উদাসীন একটি ভোগবাদী প্রজন্ম হিসেবে গড়ে উঠছে। প্রায় সবারই দৃষ্টি বিজাতীয় সংস্কৃতির দিকে।
এককালে এ দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর বেশ নামডাক ছিল। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের এবং শিক্ষার্থীদের দেশে-বিদেশে সুনাম ও কদর ছিল। শিক্ষাজীবন পেরিয়ে তারা দেশে-বিদেশে ভালো কর্মস্থানের সুযোগও পেয়ে যেত। আজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পরিণত হয়েছে রাজনৈতিক আখড়ায়। সেখানে জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা থাকে না। তাই সেখানে গণতন্ত্র, উন্নয়ন, মানবাধিকার, নৈতিকতা, সুখ-শান্তি কিছুই থাকতে পারে না।
এসব প্রতিষ্ঠান থেকে বেরিয়ে এখন আর তারা কাজ পায় না, ‘বেকার বাহিনী’তে যোগ দেয়। স্বল্প যে ক’জন কাজ পাওয়ার সৌভাগ্য লাভ করে তাও প্রায় দলীয় রাজনৈতিক বিবেচনায়। যে যেভাবে পারছে, দেশ ছেড়ে যেন পালাচ্ছে। এ প্রক্রিয়ায় হাজার হাজার যুবক বিদেশে পাড়ি দিতে গিয়ে সলিল সমাধি বরণ করছে, বিদেশে গিয়ে কারাবন্দী হচ্ছে, আশাহত ও নির্যাতিত হয়ে সর্বস্ব খুইয়ে দেশে ফিরছে। এটা সম্ভব হচ্ছে রাজনৈতিক কিছু অসাধু দালাল চক্রের বদৌলতে, যাদের কখনো অপরাধে বিচারের সম্মুখীন হতে হয় না। দেশীয় শিল্পকারখানায় বিদেশী শিক্ষিত ও দক্ষ লোকবল উচ্চ পারিশ্রমিকে নিয়োগপ্রাপ্ত হচ্ছে এবং দিন দিন ওদের চাহিদা বাড়ছে। এমন একটি দেশকে বাইরের কেউ ‘সেরা’ বলবে- সেটি আশা করা দুরাশা মাত্র। তবুও আমার জন্মভূমি আমার চোখে সেরা।
লেখক : অর্থনীতির অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও ভাইস প্রিন্সিপাল, কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজ