যে কদিন বাঁচবো বাঘের মতো বাঁচবো বিড়ালের মতো এক দিনও বাঁচতে চাই না : ইশরাক
ইশরাক - ছবি : সংগৃহীত
যে কদিন বাঁচবো বাঘের মতো বাঁচবো বিড়ালের মতো এক দিনও বাঁচতে চাই না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন।
নির্বাচনী প্রচারণা ১৫ তম দিনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গেন্ডারিয়া মাঠে এক সংক্ষিপ্ত পথসভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। এসময় তার সাথে বিএনপি'র যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল উপস্থিত ছিলেন।
ইশরাক বলেন, আমার বাবা একজন গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তিনি বারবার এ দেশের জন্য রক্ত ঝরিয়েছেন'। আবার দেশ স্বাধীনের পর বার বার গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে নিজের তাজা রক্ত জড়িয়েছেন। প্রয়োজনে আমিও রাজপথে রক্ত ঝড়াবো, গুলি খাবো, মারা যাবো তারপরও ভয় পেয়ে পিছপা হবো না। তিনি বলেন, আমার বাবা বলতেন আল্লাহ ছাড়া কোন মানব সন্তানের কাছে মাথা নত করবো না। তাই আমি বলব আল্লাহ ছাড়া আমি আর কাউকে ভয় পাই না। কাউকে পরোয়া করি না। বাঁচতে হয় বাঘের মতো বাঁচবো বিড়ালের মত এক দিনও বাঁচতে চাই না।
বিএনপি'র এই মেয়র প্রার্থী বলেন, এদেশর স্বাধীনতার মূল মন্ত্র হলো জনগণ হবে রাষ্ট্রের মালিক। এই মূল মন্ত্র নিয়ে এদেশ স্বাধীন হয়েছিল। তাই আমি বলবো আপনারা সবাই সমান কেউ বড় ছোট নয়। কারো ক্ষমতা বেশি কম নয় সবার ক্ষমতা সমান। তাই কেউ কাউকে ভয় পাবেন না কাউকে পরোয়া করবেন না।
তিনি বলেন, এই সরকার উন্নয়নের কথা বলেন। পদ্মা সেতুর প্রতিটি পিলার উদ্বোধন হয়। এক টাকার জিনিস ১০০ টাকা দিয়ে কিনেছ, ২০০ টাকার বালিশ ২৭ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছেন। সব লুটপাট করে দেশের টাকা বিদেশে পাচার করেছেন আর দেশনেত্রীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে রেখেছেন। আপনাদের ক্ষমতায় থাকার কোন অধিকার নেই। খালেদা জিয়াকে আটকে রাখার কোন ক্ষমতা আপনাদের নেই। জনগন আপনাদের সেই ক্ষমতা দেয়নি।
এসময় ইশরাক আরো বলেন, আজকে আপনারা আমাকে যে ভালোবাসা দেখিয়েছেন তাতে আমরা আবেগে আপ্লুত। আমি বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোন অপশক্তিকে ভয় পাই না। আপনারাও ভয় পাবেন না। আপনারা আপনার পাশে থাকবেন। আমার বাবা যেরকম আপনাদের পাশে ছিলেন ঠিক আমিও সবসময় আপনাদের পাশে থাকবো।
ফরিদাবাদে ধানের শীষের প্রচারণায় খালেদা জিয়া!
রাজধানীর পুরান ঢাকার ফরিদাবাদ এলাকায় বিএনপি’র মনোনীত মেয়র প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগে অংশ নেন খালেদা জিয়া। শুক্রবার বেলা তিনটায় ফরিদাবাদ মাদরাসা থেকে গণসংযোগ শুরু হলে তাতে অংশ নেন তিনি। তবে তিনি কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নন। বিএনপি চেয়ারপারসনের সাজে গণসংযোগে অংশ নেয়া ছোট্ট একটি শিশু। তার নাম দিয়াফা আক্তার। সে বসুন্ধরা রিভারভিউ এলাকার বাসিন্দা ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী মোহাম্মদ ফারুকের ভাগ্নি।
নির্বাচনী প্রচারণার ১৫তম দিনে শুক্রবার জুমার নামাজের পর ফরিদাবাদ মাদরাসা থেকে গণসংযোগ শুরু করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। এ সময় গণসংযোগে অংশ নেওয়া সবার দৃষ্টি কাড়ে বেগম খালেদা জিয়ার সাজে সাজা দিয়াফা। উৎসুক মানুষকে দিয়াফার সাথে ছবি তুলতে দেখা যায়। এ সময় দিয়াফা কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মতো সবাইকে হাত নেড়ে অভিনন্দন জানায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দিয়াফার বাবা ইদ্রিস আলী বলেন, আত্মীয়-স্বজন সবাই বলছে দিয়াফা দেখতে নাকি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মতো। তাই মানুষকে ধানের শীষে ভোট দেয়ার জন্য আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে আজ দিয়াফাকে কারাবন্দি দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মতো সাজিয়ে গণসংযোগে নামানো হয়েছে।
দিয়াফার সাথে ছবি তোলার সময় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম বাদল বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে দীর্ঘদিন যাবৎ এই ফ্যাসিস্ট সরকার মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে বন্দি করে রেখেছে। সরকার চেয়েছিল দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে বন্দি রাখার মাধ্যমে জনগণ থেকে তাকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে। কিন্তু সরকারের সেই অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। মুক্ত খালেদা জিয়ার চেয়ে বন্দি খালেদা জিয়া হাজারগুণে বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। আর তা প্রমাণ করে ছোট শিশুটির আজকের এই সাজ। শিশু থেকে বৃদ্ধ, টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত এদেশের ১৬ কোটি মানুষ তাদের মনের গভীরে বেগম খালেদা জিয়াকে লালন করে। এর প্রমাণ আমরা অতীতেও পেয়েছি বর্তমানে পাচ্ছি এবং ভবিষ্যতেও পাব। হাজার ষড়যন্ত্র করেও কোনো অপশক্তি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না।
গণসংযোগে অংশ নেয়া দশম শ্রেণীর ছাত্রী ও দিয়াফার খালা আয়েশা সিদ্দিকা বলে, আমরা বেগম খালেদা জিয়াকে ভালোবাসি। তাই আমার ভাগ্নি দিয়াফাকে খালেদা জিয়ার সাজে সাজিয়ে ধানের শীষে ভোট চাইতে নেমেছি। আমরা যারা ছোট আছি তারা জনগণের কাছে আবেদন জানাই, বেগম খালেদা জিয়া একজন বৃদ্ধ নারী। তাকে মুক্ত করার জন্য আপনারা ধানের শীষে ভোট দিন।
গণসংযোগে অংশ নেয়া নবম শ্রেণির ছাত্রী ফারজানা আক্তার রেশমি বলে, বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে আছেন। তার ছোট ছেলে দেশের বাইরে মারা গেছেন। দীর্ঘদিন যাবৎ তিনি তার পরিবারের সাথে থাকতে পারেন না। এটা আমাদের কাছে খারাপ লাগে। তাই আমি আমাদের বোনদেরকে নিয়ে ধানের শীষে ভোট চাইতে নেমেছি।