ভারতের হাসপাতাল থেকে যেভাবে বিদেশীদের কিডনি কেটে নিচ্ছে

অন্য দিগন্ত ডেস্ক | Jan 24, 2020 10:00 am
ভারতের হাসপাতাল থেকে যেভাবে বিদেশীদের কিডনি কেটে নিচ্ছে

ভারতের হাসপাতাল থেকে যেভাবে বিদেশীদের কিডনি কেটে নিচ্ছে - ছবি : সংগৃহীত

 

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ইএম বাইপাস সংলগ্ন হাইল্যান্ড পার্কের একটি বেসরকারি হাসপাতালে রমরমিয়ে চলছে আন্তর্জাতিক কিডনি পাচার চক্র। চাকরির খোঁজে এসে এই চক্রের দালালদের খপ্পরে পড়ে নেপাল থেকে ভারতে গিযে হাজার হাজার বেকার যুবক সর্বস্বান্ত হচ্ছেন। চক্রটির সঙ্গে ওই বেসরকারি হাসপাতালের একদল অসাধু চিকিৎসক, প্যারামেডিক্যাল স্টাফ, দালাল, তাদের মহিলা সহযোগীসহ কলকাতা শহরের কয়েকজন আইনজীবীও জড়িত রয়েছেন বলে অভিযোগ। পশ্চিমবঙ্গভিত্তিক বর্তমান পত্রিকায় এই চাঞ্চল্যকর খবর প্রকাশিত হয়েছে।

২০১৯ সালের জুলাই মাসের গোড়ার দিকের ঘটনা। আচমকাই একদিন সোর্স মারফত হাইল্যান্ড পার্কের আন্তর্জাতিক কিডনি পাচার চক্রের কথা কানে আসে লালবাজারের। গোয়েন্দা বিভাগের এক শীর্ষকর্তার নির্দেশে অত্যন্ত গোপনে খোঁজখবর শুরু হয়। প্রাথমিক অবস্থায়, গোয়েন্দারা এই চক্রের কয়েকজন সদস্যের উপর গোপনে নজরদারি চালাতে শুরু করেন। প্রায় মাস তিন-চার ধরে টানা নজরদারি চালিয়ে শহরের বুকে এই কিডনি পাচার চক্রের কুশীলবদের নাম-পরিচয় হাতে পান তাঁরা। জানা গিয়েছে, ওই বেসরকারি হাসপাতালকে কেন্দ্র করে অন্তত আট থেকে দশজনের একটি চক্র সক্রিয়। গোয়েন্দাদের হাতে কিছু তথ্য-প্রমাণও উঠে আসে।

কলকাতায় বসে কীভাবে কাজ করছে আন্তর্জাতিক চক্র? প্রাথমিকভাবে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, এই চক্রের জাল কলকাতা থেকে নেপাল পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। চক্রের মূল এজেন্টরা নেপালে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। মূলত, নেপালের গরিব ও বেকার যুবকদের ভারতে চাকরির টোপ দিয়ে ইন্দো-নেপাল সীমান্ত পেরিয়ে শিলিগুড়ি হয়ে কলকাতায় আনা হচ্ছে। অভিযোগ, এরপর ‘ব্ল্যাকমেল’ করে ওই যুবকদের কাছ থেকে জোর করে কিডনি কেটে নেয়া হচ্ছে। এজন্য প্রয়োজনে নেপালের সচিত্র পরিচয়পত্রসহ অন্য নথিও জাল করছে এই চক্রের সদস্যরা।

স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসছে, কলকাতা পুলিশের নাকের ডগায় শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে এমন কিডনি পাচার চক্রের রমরমা সত্ত্বেও নিষ্ক্রিয় কেন লালবাজার? পুলিসের দাবি, ১৯৯৪ সালের ট্রান্সপ্লান্টেশন অব হিউম্যান অর্গান আইনে পুলিস কার্যত অসহায়। এই আইনে পুলিসকে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরুর ক্ষমতাই দেয়া হয়নি। এই নয়া আইনে, প্রতারিত কেউ পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করলে তখন পুলিশ মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করতে পারবে। আবার, নোডাল এজেন্সি অর্থাৎ স্বাস্থ্য দপ্তর পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করতে পারবে।

হাইল্যান্ড পার্কের এই আন্তর্জাতিক কিডনি পাচার চক্র নিয়ে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান মুরলীধর শর্মাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আইন অনুসারে এই চক্রের বিরুদ্ধে যারা ব্যবস্থা নিতে পারে, ইতিমধ্যেই আমরা বিষয়টি তাদের জানিয়ে দিয়েছি।

রাজ্যের কিডনি বোর্ডের সদস্য তথা প্রতিস্থাপন বিষয়ক নোডাল অফিসার তমালকান্তি ঘোষকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, পুলিস এমন অভিযোগ পাঠালে আমরা বরাবর বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখি। এবারও দেখা হবে। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা (শিক্ষা) দেবাশিস ভট্টাচার্য এনিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
সূত্র : বর্তমান

 


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us