অস্ত্র ব্যবসায় কে এগিয়ে কে পিছিয়ে?
অস্ত্র ব্যবসায় কে এগিয়ে কে পিছিয়ে? - ছবি : সংগ্রহ
বাড়ছে অস্ত্র ব্যবসা৷বিশ্বজুড়েই তা বাড়ছে। আর সবার উপরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷ পিছিয়ে নেই ইউরোপ ও রাশিয়াও৷ এই হারে অস্ত্র তৈরি বাড়তে থাকলে, ভবিষ্যতে অশান্তির আশঙ্কা ভয়াবহ রকমের বাড়বে বলেই অভিমত বিশেষজ্ঞদের৷
বিশিষ্টজন থেকে রাষ্ট্রনেতা, বিশ্ব জুড়ে শান্তির কথা বলছেন সকলেই৷ কিন্তু বাস্তবে কি তার কোনো প্রভাব পড়ছে? সম্প্রতি একটি সংস্থার প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, ২০১৭ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে পৃথিবীময় অস্ত্র ব্যবসা বেড়েছে ৪.৬ শতাংশ৷
স্টকহোমের আন্তর্জাতিক শান্তি গবেষণা কেন্দ্র কিছু দিন আগে তাদের রিপোর্ট প্রকাশ করেছে৷ সেখানে দেখা যাচ্ছে ২০০২ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে গোটা পৃথিবীতে অস্ত্র ব্যবসার পরিমাণ বেড়েছে ৪৭ শতাংশ৷ ২০১৮ সালে বিশ্বের প্রধান ১০০ টি অস্ত্র প্রস্তুতকারী সংস্থা ৪২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ব্যবসা করেছে৷ ২০১৭ সালের তুলনায় যা অনেকটাই বেশি৷ শুধু তাই নয়, সংস্থাটি জানিয়েছে, তথ্য না পাওয়ার কারণে এই রিপোর্টে চীনের অস্ত্র প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির উল্লেখ করা হয়নি৷ সেই সংখ্যাটি যোগ করলে শতাংশের হিসেব আরও অনেকটাই বেড়ে যাবে বলে বিশেষজ্ঞদের দাবি৷
রিপোর্টে বলা হয়েছে অস্ত্র ব্যবসা সব চেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে আমেরিকায়৷ সেখানে প্রথম পাঁচটি অস্ত্র প্রস্তুতকারী সংস্থা গত এক বছরে সর্বাধিক ব্যবসা করেছে৷ ইউরোপের সংস্থাগুলোর ব্যবসা গত বছরের তুলনায় বাড়েনি, বরং শতাংশের হিসেবে সামান্য কমেছে৷ রাশিয়ার সংস্থাগুলিরও ব্যবসা পড়েছে ০.৪ শতাংশ৷
তবে ইউরোপ ও রাশিয়াকে বহু পিছনে ফেলে দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম ৫টি অস্ত্র প্রস্তুতকারী সংস্থা গত এক বছরে ব্যবসা বাড়িয়েছে ৫.৮ শতাংশ৷ বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এর কারণ, ২০১৮ সালে মার্কিন সংস্থা সরকারকে বিপুল পরিমাণ এফ ৩৫ যুদ্ধ বিমান বিক্রি করেছে৷ সে কারণেই তাদের ব্যবসা এত বেশি৷
রিপোর্টটিতে আরো একটি জরুরি কথা উল্লেখ করা হয়েছে৷ আগামী কয়েক বছরের মধ্যে মার্কিন অস্ত্র ব্যবসায় মন্দা আসার কোনো আশঙ্কা নেই৷ কারণ, অ্যামেরিকা সামরিক ক্ষেত্রে রাশিয়া ও চীনকে সব চেয়ে বড় প্রতিযোগী বলে মনে করে৷ ট্রাম্প সরকারের লক্ষ্যই হল সামরিক খাতে দেশকে আরো শক্তিশালী করে তোলা৷ ফলে মার্কিন সরকার অস্ত্র কেনা কমাবে না৷
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বিশ্ব নেতারা হাজির হয়ে শান্তির কথা বলেন৷ অস্ত্র নয়, মানুষের মুখে খাবার তুলে দেয়ার কথা বলেন৷ কিন্তু তাদের কথায় ও কাজে যে বিস্তর ফারাক, আন্তর্জাতিক শান্তি সংস্থাটির রিপোর্ট তা চোখে আঙুল দেখিয়ে দিলো৷ তাদের রিপোর্টে যার উল্লেখ নেই, ভারতীয় উপমহাদেশের কোনো কোনো রিপোর্টে সে সত্যও এত দিনে স্পষ্ট হয়েছে৷ কেবল পশ্চিম দুনিয়া নয়, পাল্লা দিয়ে সামরিক শক্তি বাড়িয়ে চলেছে উপমহাদেশের দেশগুলো৷ গত কয়েক বছরে সামরিক খাতে তাদের বরাদ্দও বেড়েছে চোখে পড়ার মতো৷
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এ ভাবে অস্ত্র ব্যবসা বাড়তে থাকলে ভবিষ্যতে আরও বড় অশান্তির আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না৷
সূত্র : ডয়চে ভেলে