ভারত মহাসাগরে চীনা রণতরী
ভারত মহাসাগরে চীনা রণতরী, নজর রাখছে ভারত - ছবি : সংগ্রহ
ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের সামরিক উপস্থিতি ক্রমেই বাড়ছে এবং এর উপর সতর্কতার সঙ্গে নজর রাখছে ভারতীয় নৌবাহিনী। ভারতের নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল করমবীর সিং বুধবার এ কথা বলেছেন।
দিল্লিতে রাইসিনা সংলাপের এক প্যানেল আলোচনায় তিনি বলেন যে পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) জাহাজ ভারতের এক্সক্লুসিভ ইকনমিক জোনে প্রবেশ করেছে বলে নজির রয়েছে। ভারতীয় নৌবাহিনী তাদেরকে ভারতের স্বার্থ খর্ব না করার জন্য বলেছে।
করমবীর সিং বলেন, আমরা আমাদের জাহাজ মিশন-ভিত্তিক মোতায়েন করেছি যাতে শুধু চীন নয়, অন্য সব দেশের তৎপরতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। তারা আমাদের জাতীয় স্বার্থ খর্ব করছে কিনা তার উপর লক্ষ্য রাখা হচ্ছে আমরা যেন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারি।
চীনের বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভ এবং চায়না-পাকিস্তান ইকনমিক করিডোর ভারতের সার্বভৌমত্বকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
প্যানেল আলোচনায় করমবীর ছাড়াও জাপানের সেল্ফ ডিফেন্স ফোর্সের জেনারেল কোজি ইয়ামাজাকি, অস্ট্রেলিয়ার উপ প্রতিরক্ষা বাহিনী প্রধান এডমিরার ডেভিড জনস্টোন, ফ্রান্সের সশস্ত্র বাহিনী মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপর মহাপরিচালক জেনারেল লাক ডি রানকোর্ট এবং যুক্তরাজ্যের নৌবাহিনী প্রধান টনি রাডাকিন অংশ নেন।
সূত্র : পিটিআই
শ্রীলঙ্কায় বাইরের প্রভাব মানা হবে না : চীন
এনডিটিভি
চীন সবসময় শ্রীলঙ্কার সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল তবে দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ‘বাইরের কোনো প্রভাব’ সেখানে মেনে নেয়া হবে না। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়া শি মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কা সফরে দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে ও তার ভাই এবং প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের সাথে বৈঠকের পর এমন কথা বলেছেন।
শ্রীলঙ্কার বর্তমান দুই নেতার সাথে পৃথকভাবে মঙ্গলবার সাক্ষাৎ করেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের কার্যালয় থেকে দেয়া বিবৃতি অনুযায়ী চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্টেট কাউন্সিলর ওয়াং শি বলেন, ‘কৌশলগত অংশীদার হিসেবে শ্রীলঙ্কার স্বার্থে কাজ করার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন হচ্ছে এবং হবে।’
শ্রীলঙ্কার কথা উল্লেখ করে ওয়াং শি আরো বলেন, ‘দেশটির সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং স্বাধীনতার পক্ষে দাঁড়িয়েছে চীন। আমরা দেশটিতে বাইরের যেকোনো প্রভাব মেনে নেবো না। মূলত শ্রীলঙ্কার যেসব অভ্যন্তরীণ বিষয়ে উদ্বেগ রয়েছে সে সম্পর্কিত বিষয়ে বাইরের কাউকে হস্তক্ষেপ করতে দেবো না।’
লঙ্কান প্রেসিডেন্ট ওয়াং শিকে বলেছেন, শ্রীলঙ্কা অনেক রাজনৈতিক সঙ্কটের মুখোমুখি এবং এই সঙ্কট থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হওয়া। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেন, ‘অর্থনৈতিক স্বাধীনতাই রাজনৈতিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করবে।’
রাজাপাকসে বলেছেন, শ্রীলঙ্কা-চীন সম্পর্কের উন্নয়ন, উভয় পক্ষের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং আঞ্চলিক শিপিং রুট ও লজিস্টিক হাব হিসেবে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ প্রকল্প বাস্তবায়নে যৌথভাবে কাজ করতে তার দেশ সবসময় প্রস্তুত।
প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে বলেছেন, বন্দর নগরী কলম্বো এবং হাম্বানটোটা বন্দরের মতো প্রধান প্রকল্পগুলোর উন্নয়নে শ্রীলঙ্কার সরকার সম্পূর্ণ সমর্থন দেবে। তিনি আরো উল্লেখ করেন, এসব প্রকল্প শুধু দেশের অর্থনীতিকে উন্নত করবে না একইসাথে মানুষের জীবনমানের উন্নয়নে কাজ করবে।
এর প্রতিক্রিয়ায় চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অতীতের মতো শ্রীলঙ্কার সমৃদ্ধি ও প্রবৃদ্ধিতে দীর্ঘদিনের মিত্র হবে চীন। তিনি উল্লেখ করেন, কলম্বো নিয়ে চীন তার নীতিতে সবসময় অটল। আর এর মাধ্যতে তার দেশ দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবে কাজ করে যাবে।
মাইথ্রিপালা সিরিসেনার সরকার ২০১৭ সালে হাম্বানটোটা বন্দর ৯৯ বছরের জন্য চীনকে ইজারা দিয়েছিল। গোতাবায়া এর আগে বলেন, ‘এই চুক্তি নিয়ে নতুন করে আলোচনা করতে হবে। বিনিয়োগের জন্য ক্ষুদ্র অঙ্কের ঋণের বদলে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক পোতাশ্রয় দেয়া গ্রহণযোগ্য নয়। এটা আমাদের নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত ছিল।’