গ্যাঁড়াকলে ভারতের সাবমেরিন প্রকল্প
গ্যাঁড়াকলে ভারতের সাবমেরিন প্রকল্প - ছবি : সংগৃহীত
ভারতের সবচেয়ে বড় ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্প নিয়ে নৌবাহিনী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জোর দিয়ে বলেছে যে, ক্রয় নীতিমালা অনুযায়ী এই প্রকল্পের ক্ষেত্রে নৌবাহিনীর সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করা উচিত। কিন্তু নৌবাহিনী এ ধরনের যৌথ প্রচেষ্টায় যোগ দেয়া থেকে বিরত থেকেছে।
বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে নৌবাহিনীর ৪৫,০০০ কোটি রুপির সাবমেরিন কর্মসূচি – যেটা পি ৭৫১ নামে পরিচিত। এতে জয়ী ভারতীয় প্রতিষ্ঠান বিদেশী প্রযুক্তি অংশীদারের সহায়তায় দেশের মধ্যেই ছয়টি সাবমেরিন তৈরি করবে। ‘স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ মডেলের’ অধীনে এই চুক্তিটির প্রক্রিয়াকরণ করা হচ্ছে।
সূত্র ইটিকে জানিয়েছে যে, চুড়ান্ত রেকর্ড ও উৎপাদন সুযোগ সুবিধাগুলো বিবেচনার পর নৌবাহিনীর সমর্থিত কমিটি দুটো ভারতীয় প্রতিষ্ঠানকে বাছাই করেছে যারা এই প্রকল্পগুলোর জন্য উপযুক্ত। এ দুটি প্রতিষ্ঠান হলো রাষ্ট্রায়ত্ব মাজাগাও ডকস লিমিটেড এবং প্রাইভেট খাতের প্রতিষ্ঠান লারসেন অ্যান্ড টুবরো। দুটি প্রতিষ্ঠানেরই জাহাজ নির্মাণের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অভিজ্ঞতা রয়েছে।
অন্যদিকে, বিদেশের যে পাঁচটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আবেদন জানিয়েছিল, তাদের সবাইকেই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে।
তবে, তৃতীয় একটি আবেদন – যেটা আদানি ডিফেন্স ও রাষ্ট্রায়ত্ব হিন্দুস্তান শিপইয়ার্ড লিমিটেড (এইচএসএল) যৌথভাবে করেছিল – সেটাকে ছাড়পত্র দেয়া হয়নি এই যুক্তিতে যে, যৌথ প্রচেষ্টার জন্য প্রশাসনিক অনুমতি নেই।
এই বিষয়টি ডিপার্টমেন্ট অব ডিফেন্স প্রডাকশানের সাথে বিতর্কের সূত্রপাত করেছে, যেটার অধীনে এইচএসএল কাজ করে। তারা নৌবাহিনীকে বলেছে যাতে এইচএসএল-আদানির আবেদনটিকেও বিবেচনা করা হয়। উৎপাদন নীতিমালা অনুযায়ী এই সুপারিশ করেছে তারা, যেখানে এটা বলা আছে যে, সরকারী ও বেসরকারী সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টাকে বিবেচনায় নিতে হবে।
একই সাথে দফতর এটাও নিশ্চিত করেছে যে, এইচএসএল এবং আদানির যৌথ প্রচেষ্টার প্রস্তাবনা তারা পেয়েছে এবং মন্ত্রণালয় সেটা বিবেচনা করছে। এইচএসএল-আদানি এই বিষয়টি উত্থাপনের পর নৌবাহিনীকে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এই দ্বন্দ্বে মন্ত্রণালয় একটা কঠিন জায়গায় পড়ে গেছে। একদিকে, ক্রয় নীতিমালা এবং অতীতের উদাহরণ থেকে দেখা যাচ্ছে যে, যখনই সম্ভব প্রতিযোগিতায় যত বেশি সম্ভব প্রতিযোগিদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে সবচেয়ে প্রতিযোগিতাপূর্ণ মূল্য পাওয়া যায়। অন্যদিকে, ভারতীয় কোম্পানিগুলোর তালিকা করেছে যে কমিটি, তারা এমন একটি টেকনিক্যাল পয়েন্টের কথা বলছে, যেটা দরপত্রে উল্লেখ ছিল।
বিষয়টি এখন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ক্রয় সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কমিটিতে যাবে। চলতি সপ্তাহের শেষে এই কমিটির বৈঠকের কথা রয়েছে।