আরব সাগরে চীন-পাকিস্তানের সাবমেরিন মোতায়েন
আরব সাগরে চীন-পাকিস্তানের সাবমেরিন মোতায়েন - ছবি : সংগৃহীত
চীন ও পাকিস্তানের নৌবাহিনী আরব সাগরে ৯ দিনের মহড়া শুরু করেছে। কৌশলগত অংশীদারিত্ব বাড়ানোর এই মহড়ায় প্রথমবারের মতো দুই সাবমেরিন মোতায়েন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে এই অঞ্চলে চীনা নৌবাহিনীর বড় ধরনের প্রদর্শনী ঘটছে, যা বিরল ঘটনা।
ভারতের জন্য আরব সাগর অঞ্চল কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। এখানে কান্দলা, ওখা, মুম্বাই, নব সেবা (নাবি মুম্বাই), মরমুগাও, নিউ ম্যাঙ্গালোর ও কোচির মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থান অবস্থিত।
উত্তর আরব সাগরে সোমবার পাকিস্তান ও চীনা নৌবাহিনীর মধ্যে মহড়া শুরু হয়েছে। চীনের জন্য এই অঞ্চলটি কৌশলগতভাবে তাৎপর্যপূর্ণ মনে করা হয়ে থাকে। সেখানে পাকিস্তানের গভীর পানির সমুদ্রবন্দর গোয়াদর উন্নয়নকাজ এখন চলছে।
গোয়াদরের সাথে যুক্ত চীন পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরটি (সিপিইসি) চীনের জিনজিয়াং পর্যন্ত গেছে। এতে ব্যয় হচ্ছে ৬০ বিলিয়ন ডলার। এই করিডোর দিয়ে চীন আরব সাগরের উষ্ণ পানিতে প্রবেশের সুযোগ পাবে। পাকিস্তান-পরিচালিত কাশ্মির দিয়ে যাওয়ায় সিপিইসি নিয়ে চীনের কাছে আপত্তি প্রকাশ করেছে ভারত।
গোয়াদর ইরানের চাবাহার বন্দরের কাছে অবস্থিত। এই বন্দরটির উন্নয়নে কাজ করছে ইরান, ভারত ও আফগানিস্তান। আফগানিস্তানে ভারতীয় রফতানি বাড়ানো এই প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্য।
আরব সাগর হলো ভারত মহাসাগরে প্রবেশের পথ। আর এই মহাসাগরের হর্ন অব আফ্রিকার জিবুতিতে একটি লজিস্টিক ঘাঁটি নির্মাণ করছে চীন।
এই মহড়ার পর দুই দেশ আরো কয়েকটি মহড়ার আয়োজন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উভয় দেশই এখন নৌবাহিনী, সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীর মধ্যে যৌথ মহড়ার কথা ভাবছে। পিএলএ (পিপলস লিবারেশন আর্মি) ডেইলি এ খবর প্রকাশ করেছে।
এতে বলা হয়, চলমান আঞ্চলিক পরিস্থিতির সাথে এই যৌথ মহড়ার কোনো সম্পর্ক নেই, এতে তৃতীয় কোনো পক্ষও জড়িত নয়।
এই মহড়ায় প্রথমবারের মতো সাবমেরিন মোতায়েন ছাড়াও সাবমেরিন উদ্ধার প্রশিক্ষণও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এতে উচ্চপর্যায়ের কৌশলগত পারস্পরিক আস্থার প্রতিফলন বলে চীনের রাষ্ট্রীয় গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে।
মহড়াটি শুরু হয় পাকিস্তানের করাচিতে। এটি ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে।
চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে এটি ষষ্ট নৌমহড়া। এর নাম দেয়া হয়েছে সি গার্ডিয়ান্স। এটি হতে পারে সিরিজ মহড়া। ওয়ারিয়র্স নামে স্থল বাহিনীর ও শাহিন নামে বিমানবাহিনীর সিরিজ মহড়া হয়ে থাকে।
পিএলএ নেভাল মিলিটারি স্টাডিজ রিসার্চের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ঝাং জুনশি গ্লোবাল টাইমসকে বলেন, মহড়ার সিরিজ করা হলে ও তা নিয়মিতভাবে আয়োজন করা হলে চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতা আরো ঘনিষ্ঠ হবে।
চীনা সৈন্যরা এসেছে মূলত সাউদার্ন থিয়েটার কমান্ড নেভি থেকৈ। এর মধ্যে রয়েছে গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রোয়ার ইয়িচুন, গাইডেড মিসাইল ফ্রিগেট ইয়াচেঙ, কম্প্রেহেনসিভ সাপ্লাই শিপ ওয়েশানহু, সাবমেরিন রেসকিউ শিপ লিয়াগুগদাও, জাহাজভিত্তিক দুটি হেলিকপ্টার ও প্রায় ৬০ চন চীনা মেরিন।
পাকিস্তান মোতায়েন করেছে দুটি ফ্রিগেট, দুটি মিসাইল বোট, একটি সাবমেরিনবিধ্বংসী বিমান, দুটি জাহাজভিত্তিক হেলিকপ্টার ও বিশেষ বাহিনীর ৬০ জন সদস্য।
পিটিআই