পাকিস্তানে হিন্দু সংখ্যা কত
পাকিস্তানে হিন্দু সংখ্যা কত - ছবি : সংগৃহীত
পাকিস্তানে হিন্দু জনসংখ্যা কত জন? ভারতে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাস করার সময় দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যে দাবি করেছেন, তার সাথে পাকিস্তান যে দাবি করছে তার মধ্যে আকাশ-পাতাল ফারাক আছে।
পার্লামেন্টে নতুন আইনটি উপস্থাপনের সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আইনটি প্রণয়নের যুক্তি হিসেবে প্রতিবেশী মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের কথা বলেন। তিনি বিশেষ করে পাকিস্তানের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ বিভক্তির সময় হিন্দুদের সংখ্যা ছিল ২৩ ভাগ। কিন্তু এখন তা নেমে এসেছে ৩.৭ ভাগ। তিনি বলেন, হয় এই লোকদেরকে জোর করে ইসলামে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে কিংবা তাদেরকে নির্মূল করা হয়েছে।
কিন্তু পাকিস্তানি আদমশুমারিতে দেখা যাচ্ছে, পাকিস্তানে সংখ্যালঘুরা কখনোই ২৩ ভাগ ছিল না। ১৯৬১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, অমুসলিম জনসংখ্যা ছিল ২.৮৩ ভাগ। এক দশক পর ১৯৭২ সালে অমুসলিম জনসংখ্যা দেখানো হয় মোট জনসংখ্যার ৩.২৫ ভাগ।
অর্থাৎ সেখানে জনসংখ্যা বেড়েছে ০.৪২ ভাগ। ১৯৮১ সালে অমুসলিম জনসংখ্যঅ ছিল ৩.৩ ভাগ। ১৯৯৮ সালের পরবর্তী আদমশুমারিতে মোট জনসংখ্যার মধ্যে অমুসলিমেরা ছিল ৩.৭ ভাগ। পাকিস্তান হিন্দু কাউন্সিলের নেতা রাজা মাঙ্গলানি বিশ্বাস করেন, ২১ কোটি লোকের মধ্যে হিন্দুরা ৪ ভাগ।
আসামের এনআরসি বাস্তবায়ন করতে ব্যয় হয়েছে ২২৪ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ১৬ বিলিয়ন রুপি)। এতে নিয়োজিত ছিল ৫২ হাজার লোক। অ্যাকাউট্যান্ট রাহুল পান্ডের মতে, ১.৩ বিলিয়ন লোকের জন্য প্রশাসনিক ব্যয়ই হেব ৭ বিলিয়ন ডলার (৫০০ বিলিয়ন রুপি)। তিনি বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন, অন্যান্য ব্যয় আরো বাড়তে পারে।
আবার নতুন আইন নিয়ে আরো কিছু সমস্যাও আছে। দলটির নেতারা দাবি করেছিল যে এই অঞ্চলে কোটি কোটি বাংলাদেশী নাগরিক অনুপ্রবেশ করে বিভিন্ন জেলায় হিন্দুদের সংখ্যালঘু করে ফেলছে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের তদারকিতে পরিচালিত এনআরসিতে ৩ কোটি ৯৯ লাখ লোকের মধ্যে নথিপত্র না থাকায় ১৯ লাখ লোককে সন্দেহজনক নাগরিক হিসেবে ঘোষণা করে। এদের মধ্যে ১১ লাখ হিন্দু, আর মুসলিম সংখ্যা মাত্র আট লাখ। কোনো কোনো হিসাবে এই সংখ্যা আরো কম দেখানো হয়েছে।
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, ভারতের মুসলিম জনসংখ্যা ১৭ কোটি ২২ লাখ। তারা ভারতের মোট জনসংখ্যার ১৪.২ ভাগ। তিনি বলেন, কোনো হিন্দু যদি নথিপত্র দেখাতে না পারে, তবে তাকে নতুন আইনে বিবেচনা করা হবে। কিন্তু মুসলিমেরা রাষ্ট্রহীন হয়ে যাবে।
আসামে প্রকল্পটি কাঙ্ক্ষিত ফলাফল দিতে ব্যর্থ হওয়ার প্রেক্ষাপটে বিজেপি নেতা হিমান্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশী ভারতের অন্যান্য অংশে অভিবাসন করায় আসামে খুব বেশি বিদেশী পাওয়া যায়নি। অন্য কথায় বলা যায়, সারা ভারতে তাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে।
তিনি মনে করেন, ‘অনুপ্রবেশকারীদের’ খুঁজে বের করার জন্য দেশব্যাপী এনআরসি করা প্রয়োজনীয় বিষয়।
একইভাবে দক্ষিণ অঞ্চলে বসবাসরত নেপালের ভারতীয় বংশোদ্ভূত মদেশী হিন্দু লোকজনকে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। শ্রীলঙ্কার তামিলদেরও এই আইনে ভারতীয় নাগরিক করার সুযোগ রাখা হয়নি। অথচ তারা হিন্দু এবং শ্রীলঙ্কায় তারা বৌদ্ধদের হাতে নির্যাতিত হয়ে থাকেন।