ইরান না সৌদি আরব : দু'কূলই হারাল ভারত?

অন্য দিগন্ত ডেস্ক | Dec 30, 2019 08:53 am
প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ও নরেন্দ্র মোদি

প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ও নরেন্দ্র মোদি - ছবি : সংগৃহীত

 

ভারত কি দু'কূলই হারাল? ইরানের সাথে সম্পর্ক খুবই ঘনিষ্ঠ ছিল ভারতের। কিন্তু বেশি লাভের আশায় আর যুক্তরাষ্ট্রের কথা শুনে মোদি সরকার সৌদি আরবের দিকে ঝুঁকেছিল। কিন্তু এখন পাকিস্তানের দিকে হাত বাড়িয়েছে সৌদি আরব। এমন অবস্থায় দু'কূলই ভারত হারাল কিনা সে প্রশ্ন ওঠেছে।

কাশ্মির প্রশ্নে আগামী এপ্রিলে ওআইসির সম্মেলন আহ্বান জানিয়েছে সৌদি আরব। ভারত এতে কষ্ট পাবে জেনেও সৌদি আরব এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সৌদিরা এখন মনে করেছে, ভারতের চপলতার চেয়ে পাকিস্তানকেই বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে সৌদি আরব।

সন্দেহাতীতভাবেই বলা যায়, এই ঘটনা ভারতীয় কূটনীতি ও মোদি সরকারের পারস্য উপসাগরীয় কৌশলের জন্য একটি বড় বিপর্যয় হিসেবেই দেখা দিয়েছে। সৌদি আরামকোর ৭০ বিলিয়ন ডলারের মেগা পেট্রোক্যামিক্যাল প্লান্টের (প্রথমে রত্নগিরিতে স্থাপনের কথা ছিল) ভবিষ্যত নিয়েও প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
স্পষ্টভাবেই বোঝা যাচ্ছে, সিএএর পর ভারতের বর্তমান অবস্থা তাকে মুসলিমবিরোধী হিসেবেই তুলে ধরছে। এর ফলে ভারতের সাথে সম্পর্ক মন্থর করবে সৌদিরা। সর্বোপরি, এর ফলে যে কাশ্মির প্রশ্নের সৌদিরা যে ভারতকে সমর্থন করবে না, তা বলাই বাহুল্য।

এদিকে, সৌদি-ইরান প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পক্ষ নিয়েও মারাত্মক ভুল করেছে মোদি করার। সৌদি আরবের (ও সংযুক্ত আরব আমিরাত) সাথে সম্পর্ক উষ্ণ রাখার বোকামি সিদ্ধান্তের ফলে ইরানের সাথে সম্পর্ক শীতল হয়েছে, তেহরানের সাথে কৌশলগত অংশীদারিত্বকে পেছনে ঠেলে দিয়েছে মোদি সরকার।
এখন সৌদিরা ইউ-টার্ন করায় ভারতকে অবশ্যই ভুল স্বীকারের মনোভাব নিয়ে ইরানের কাছে ছুটতে হবে। কী ভয়াবহ অবস্থা!
এটি দিল্লির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে এই নির্বিজতা ও বুদ্ধিবৃত্তিক দেউলিয়াত্বের কথাই প্রকাশ করছে কেবল।
সৌদি আরব ও ইরান- উভয়ের সঙ্গে একইসাথে কিভাবে সম্পর্ক রক্ষা করে চলেছে রাশিয়া, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া বা মালয়েশিয়া? কোনো দেশই অন্য দেশের সাথে সম্পর্ক নষ্ট করে সৌদি আরব বা ইরানের সাথে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করছে না।

সৌদি আরব ঐতিহাসিক পরিবর্তনের পথে রয়েছে। সৌদি আরব কর্তৃপক্ষকে বাস্তব অবস্থার মুখোমুখি করিয়ে দিয়েছে কেএল শীর্ষ সম্মেলন। কেএল শীর্ষ সম্মেলন থেকে যে বার্তাটি এসেছে তা হলো, সৌদি আরব কেবল ইসলামি বিশ্বের নেতৃত্ব দিতে ব্যর্থই হয়নি, সেইসাথে মুসলিম বিশ্ব যখন প্রচণ্ড চাপে রয়েছে, তখন তাদের নেতৃত্ব মানসম্পন্ন হচ্ছে না।

এখানেই প্রধান মুসলিম দেশ পাকিস্তান গুরুত্বপূর্ণ মিত্রে পরিণত হয়েছে। সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সাথে ইমরান খানের উষ্ণ ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে। প্রিন্স মোহাম্মদ এই সম্পর্ক বজায় রাখতে চান। কাশ্মির ইস্যুতে ভারতের দিকে সৌদি আরব ঝুঁকলেও সৌদি উদ্বেগ উপলব্ধি করে ইমরান খান কেএল সম্মেলন থেকে সরে আসেন ইমরান খান। পাকিস্তান এখনো সৌদি আরবের সাথে তার ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়।
ইসলামাবাদের প্রতি ফয়সালের মিশন কাশ্মির ইস্যুতে পাকিস্তান নেতৃত্বের প্রতি সৌদ সমর্থনই নতুন করে দেয়া হয়েছে। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) মুসলিমবিশ্বের সাথে ভারতরে সম্পর্কই কেবল জটিল করেছে। মুসলিম বিশ্বের সাথে তার দহরম-মহরম শেষ হতে চলল সম্ভবত।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us