ফাঁস জালে ১২১ মেইদ মাছ : ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকায় ভাগ্য ফিরল গাজীর
ফাঁস জালে ১২১ মেইদ মাছ -
সুন্দরবনে মাছ শিকারে গিয়ে ভাগ্য খুলেছে জেলে মঞ্জু গাজীর। ১২১টি মূল্যবান মেইদ মাছ বিক্রি করেছেন পাঁচ লাখ ৭০ হাজার টাকায়। মূল্যবান এ মাছ একত্রে ধরা পড়াকে বিস্ময়কর বলছেন অন্য জেলেরা।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের হরিনগর গ্রামের ইমান আলী গাজীর ছেলে মঞ্জু গাজী বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে কয়েকদিন আগে মাছ ধরতে সুন্দরবনে প্রবেশ করেন। সুন্দরবনের নদীতে মাছ ধরতে দু’টি ফাঁস জাল ফেলেন তিনি। এতেই ধরা পড়ে ১২১টি মূল্যবান মেইদ মাছ।
মঞ্জু গাজী আরোও জানান, দু’টি ফাঁস জালের মধ্যে একটিতে ১২১টি মেইদ মাছ ধরা পড়ে। রোববার সন্ধ্যায় হরিনগর বাজারে বিক্রি করে দিয়েছি। পাইকারি এক ক্রেতা পাঁচ লাখ ৭০ হাজার টাকায় মাছগুলো ক্রয় করেছেন। তিনি আরো বলেন, অন্য জালে প্রচুর মেইদ মাছ আটকা পড়ে কিন্তু জালটি আর পাইনি। ধারণা করছি, বেশি মাছ একত্রে বাঁধার কারণে জালটি টেনে নিয়ে গেছে মাছেরা। এই মাছ বেশি পাওয়া যায় না। ঝাঁক নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। একটি জালে অল্পসংখ্যক ১২১টি ধরা পড়ার কারণে এগুলো ধরতে সক্ষম হয়েছি।
মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মোড়ল বলেন, সুন্দরবনের চুনকুড়ি নদীতে বর্তমানে মূল্যবান মেইদ মাছ ধরা পড়ছে। প্রতিদিনই জেলেরা দুই-তিন লাখ টাকার মাছ এক সাথে বিক্রি করছে। অনেককে আবার মাছ ধরতে গিয়ে খালি হাতেও ফিরতে হচ্ছে।
সেন্টমার্টিনে ধরা পড়ল ১০ লাখ টাকা দামের মাছ
গোলাম আজম খান,কক্সবাজার(দক্ষিণ)
টেকনাফের সেন্টমার্টিন দ্বীপে ১টি মাছ ১০ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয় ১০ লাখ টাকায় কিনে তিনি এর দাম হাঁকছেন ১৫ লাখ টাকা।
সামুদ্রিক এ মাছটি মঙ্গলবার ভোর রাতে আবদুল গণির জালে ধরা পড়ে। মাছটির ওজন ৩৪ কেজি। আবদুল গণি ৮ লাখ টাকায় সেটি বিক্রি করে দেন। কিন্তু একবার হাত বদল হয়েই মাছটির দাম উঠেছে ১৩ লাখ টাকা পর্যন্ত। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত মাছটির মুল্য গিয়ে ঠেকেছে ১৩ লাখে। মাছটি এক নজর দেখার জন্য দ্বীপে রীতিমত হুলস্থল চলছে। তাছাড়া মাছটি দেখার জন্য কক্সবাজার থেকে সরকারী ও ব্যবসায়ীদের দুটি টিম স্পীডবোটে সন্ধ্যায় দ্বীপে পৌঁছেছেন বলে জানা গেছে।
সেন্টমার্টিন দ্বীপ ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমদ জানান, ‘সেন্টমার্টি দ্বীপ পশ্চিমপাড়া ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত সুলতান আহমদের পুত্র আবদুল গণি প্রতিদিনের মতো দ্বীপের দক্ষিণে গভীর বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে গেলে মঙ্গলবার ভোর রাতের দিকে মাছটি তার জালে ধরা পড়ে। দুপুরের দিকে দ্বীপে ফিরে আবদুল গণি মাছটি বিক্রি করেন ৮ লাখ টাকায় দামে। মাছটি কেনেন একই ওয়ার্ডের বাসিন্দা ওমর মিয়ার পুত্র ফজল করিম। তিনি মাছটি ৮ লাখ টাকায় কিনে টেকনাফের এক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেন ১০ লাখ টাকায়। স্বল্প সময়ে হাত বদল করে মাছটি বিক্রি করে ফজল করিমের ২ লাখ টাকা মুনাফা করেছে।
নুর আহমদ আরো বলেন, সামুদ্রিক এ মাছটির নাম লাল পোপা। স্থানীয়ভাবে জেলেরা বলেন সোনালী পোয়া। ৩৪ কেজি ওজনের মাছটি ধরা পড়ার খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে কক্সবাজারের এক ব্যবসায়ী ১৩ লাখ টাকায় কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন; কিন্ত টেকনাফের ওই ব্যবসায়ী ১৫ লাখের কমে বিক্রি করতে আগ্রহী নন বলে জানা গেছে।
৩৪ কেজি ওজনের একটি মাছ এত বেশী দামে বেচা-কেনার কারণ জানতে চাইলে সেন্টমার্টিনদ্বীপ ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, ‘আসলে মাছের দাম এত বেশী নয়। দামী হচ্ছে মাছটির ফুসফুস। জেলেদের ভাষায় যাকে বলা হয় পদনা বা পেসসা। যার প্রতি কেজির মুল্য কমপক্ষে ৯০ লক্ষ টাকা। মাছের এ পদনা বিদেশে রপ্তানী হয়। বিদেশে খুবই চাহিদা বড় মাছের ফুসফুসের। তা দিয়ে ওষুধ, অপারেশনের সুতাসহ দুর্লভ চিকিৎসা সামগ্রী তৈরী হয়’।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে টেকনাফের সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘মাছটি পোপা জাতের। সাধারণত এত বড় পোপা বিরল। এর থাকে গভীর সমুদ্রে। সচরাচর এ জাতের এত বড় মাছ জেলেদের জালে ধরা পড়েনা। হয়ত ভাগ্যক্রমে ধরা পড়েছে।