আফগানিস্তানের সৈন্য চীনের বিরুদ্ধে মোতায়েন করবে যুক্তরাষ্ট্র!
আফগানিস্তানের সৈন্য চীনের বিরুদ্ধে মোতায়েন করবে যুক্তরাষ্ট্র! - ছবি : সংগৃহীত
হোয়াইট হাউস শিগগিরই আফগানিস্তান থেকে সৈন্য হ্রাসের ঘোষণা দেবে বলে প্রত্যাশার মধ্যেই মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি চীনকে মোকাবিলা করার জন্য এসব সৈন্যকে ইন্দো-প্যাসিফিকে পুনঃমোতায়েন করতে চান।
আফগানিস্তানে বর্তমানে ১৩ হাজার মার্কিন সৈন্য মোতায়েন রয়েছে। সোমবার কাবুল সফরকালে সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম আর-এস.সি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শিগগিরই আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্য হ্রাস করার ঘোষণা দিতে পারেন। সংখ্যাটি ৮,৬০০ হতে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন।
আর সোমবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এস্পার সাংবাদিকদের বলেছেন, তিনি এখনো আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহারের কোনো নির্দেশ জারি করেননি। তবে তিনি জানান, তালেবানের সাথে শান্তিচুক্তি হতে কিংবা না হলেও সৈন্য প্রত্যাহারের সম্ভাবনা রয়েছে।
এস্পার বলেন, সৈন্য হ্রাস করার পক্ষেই আমি। কারণ আমি চাই, তারা দেশে ফিরে ফিট হয়ে নতুন কোনো মিশনের জন্য তৈরী হবে কিংবা চীনের বিরুদ্ধে আমাদের পরাশক্তির প্রতিযোগিতায় আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ইন্দো-প্যাসিফিকে নতুন করে মোতায়েন হবে। এস্পার বলেন, তিনি এই কারণে সৈন্য হ্রাস করার ধারণায় বিশ্বাস করেন যে আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর কমান্ডার জেনারেল অস্টিন মিলার বলেছেন যে তিনি আরো কম সৈনিক দিয়েই আফগানিস্তানে সন্ত্রাসদমন ও পরামর্শ প্রদানের কাজটি করতে পারবেন।
এস্পার বলেন, এ ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে তার কথা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
ক্যাপিটল হিলের আইনপ্রণেতারা ১১ ডিসেম্বর সিরিয়াবিষয়ক হাউস আর্মড সার্ভিসেস কমিটির শুনানির সময় বলেছেন যে ডিওডির নজর ইরানের ওপর এবং ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের দিকে নজর দিচ্ছে।
রিপাবলিকান সদস্য মাইকেল গ্যালাঘের শুনানিকালে এস্পারকে বলেন যে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত হবে ইউএস ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ডকে অগ্রাধিকার দেয়া। এর জবাবে এস্পার জানান, ন্যাশনাল ডিফেন্স স্ট্র্যাটেজি অনুযায়ী চীন হলো পেন্টাগনের প্রথম অগ্রাধিকার। তবে বিশ্লেষক ও জাতীয় নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা মধ্যপ্রাচ্যের জটিলতা থেকে নিজেকে বের করে নিতে পেন্টাগনের অক্ষমতার তীব্র সমালোচনা করেন।
যুক্তরাষ্ট্র এখন আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের বিষয়টি বিবেচনা করলেও তারা আগামী ছয় মাসের জন্য মধ্যপ্রাচ্যে ১৪ হাজার সৈন্য মোতায়েন করতে চায় ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার জন্য।
এস্পার ইঙ্গিত দিয়েছেন যে ইরাকে আমেরিকার ঘাঁটিতে রকেট হামলা চালানো এবং পারস্য উপসাগরে বাণিজ্যি জাহাজে হামলায় তেহরানের জড়িত থাকার সন্দেহ থাকার প্রেক্ষাপটে ইরানকে ভয় দেখানোর জন্য পেন্টাগন আরো সৈন্য পাঠানোর বিষয়টি বিবেচনা করছে।
যুক্তরাষ্ট্র আরো বলছে যে দুটি সৌদি তেলক্ষেত্রে গত সেপ্টেম্বরে যে হামলা চালানো হয়েছিল, সেজন্যও ইরান দায়ী।
আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের রেসিডেন্ট ফেলো মাকেঞ্জি বলেন, চীনের দিকে আরো নজর দেয়ার কাজ থেকে বিরত থাকবে না পেন্টাগন।
ট্রাম্প দীর্ঘ দিন ধরেই আফগানিস্তান থেকে আমেরিকান সৈন্য প্রত্যাহারের পক্ষে। আফগানিস্তানের বাগরাম বিমান ঘাঁটিতে থ্যাঙ্কস গিভিঙ ডেতে আকস্মিক সফরকালে ট্রাম্প আইএসআইএসের বিরুদ্ধে অভিযানে সাফল্যের কথা জানিয়ে বলেন, তালেবানের সাথে শান্তি আলোচনা আবার শুরু হতে যাচ্ছে। তালেবানের সাথে শান্তি আলোচনা নতুন করে শুরু হয়েছে ৭ ডিসেম্বর। সেপেম্বর থেকে তা স্থগিত ছিল।
এদিকে ১৮ বছর ধরে চলা আফগানিস্তান যুদ্ধ বন্ধ করার প্রয়াসের মধ্যেই দেশটিতে এ যাবতকালের সর্বাধিক বোমা নিক্ষেপ করছে যুক্তরাষ্ট্র। নভেম্বর পর্যন্ত ৬,৭২৭ বার মার্কিন বিমানগুলো হামলা চালিয়েছে বলে জানা গেছে।
আর আফসেন্টের মতে, ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র মোট বোমা ফেলেছিল প্রায় ৭,৪০০ বার।
মিলিটারি টাইমস