ন্যাটোর নাটক

ড. আবদুল লতিফ মাসুম | Dec 18, 2019 02:49 pm
ন্যাটোর নাটক

ন্যাটোর নাটক - ছবি : সংগ্রহ

 

পৃথিবীর সর্ববৃহত্তম এবং সবচেয়ে শক্তিধর সামরিক জোট ‘ন্যাটো’-এর শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো লন্ডনে ৩-৪ ডিসেম্বর ২০১৯। উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থার এই শীর্ষ সম্মেলনে ২৯টি সদস্য রাষ্ট্রের প্রায় সব রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধানরা যোগদান করেন। ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোর পরিবর্তনের আবহে, ব্রেক্সিট এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ন্যাটো সম্পর্কিত ব্যয় কমানোর পরিপ্রেক্ষিতে সম্মেলনটি ছিল গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কিছু নাটকীয় ঘটনা শীর্ষ সম্মেলনকে সফল হতে দেয়নি। নিউ ইয়র্ক টাইমসের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ন্যাটোর ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। সম্মেলন শেষ হওয়ার খানিকটা আগে বেরিয়ে যান মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

এতে একটি ভয় তৈরি হয়েছে- যুক্তরাষ্ট্র এই জোট নিয়ে বিভ্রান্ত এবং তার অবস্থান থেকে সরে গেছে। পশ্চিমা বিশ্বের ওই জোট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে বলে মন্তব্য পর্যবেক্ষকদের। এ ছাড়া ন্যাটো জোটের দেশগুলোর মধ্যে এক ধরনের বিভেদ দেখা দিয়েছে। জোটের সদস্য রাষ্ট্র তুরস্কের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে নতুন করে ভাবনার সৃষ্টি হয়েছে- যুক্তরাষ্ট্র ব্যতিরেকে তারা স্বকীয়ভাবে প্রতিরক্ষায় সক্ষম কি না। ট্রাম্প ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে ন্যাটো জোটের প্রতি তার অনীহা এই প্রশ্নের সহায়ক হয়েছে। জোটের ব্যয় নিয়ে বরাবরই প্রশ্ন তুলেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। অন্য দেশগুলোর ব্যয়ের হিস্যা বাড়ানোরও দাবি করেছেন তিনি। স্মরণ করা যেতে পারে, ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণায় ন্যাটোকে অর্থ সাহায্য না দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এ অবস্থায় কয়েক সপ্তাহ আগে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ ইকোনমিস্টে প্রকাশিত এক নিবন্ধে ন্যাটোর ভবিষ্যৎ সম্পর্কে হতাশা ব্যক্ত করেন। তিনি লিখেছেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি ন্যাটো মরে গেছে।’ ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর অনেক বিশেষজ্ঞ ম্যাক্রোঁর মন্তব্যের সাথে একমত। তাদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র এই জোটকে ঠিকঠাক সাহায্য করছে না। কৌশলগত শক্তি জোগাচ্ছে না। অথচ এই জোটকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ^পরাক্রম বজায় রাখার খুঁটি হিসেবে ব্যবহার করছে। এসব মন্তব্যের জন্য ক্ষিপ্ত হয়েছেন ট্রাম্প। এসব নীতিগত বিষয়ের বাইরে ট্রাম্পকে নিয়ে নাটকীয়তা-হাসি-মশকারা হয়েছে বাকিংহাম প্যালেসে।

বেফাঁস মন্তব্যের জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্প বিখ্যাত। তার অনেক কর্মকাণ্ডও অনেকের কাছে উদ্ভট। তাই তাকে নিয়ে গোটা বিশ্বের সাধারণ মানুষের হাসি-মশকারা খুব অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু যখন অতি উচ্চ মার্গের মর্যাদাপূর্ণ রাষ্ট্রনায়করা এ রকম মন্তব্য করেন তা অস্বাভাবিকই বটে। ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনের পূর্বাহ্ণে একরকম অনির্ধারিতভাবে দীর্ঘ সময় ধরে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। সেটি নিয়ে রাষ্ট্রপ্রধানরা হাসাহাসি করছিলেন। এ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প যুক্তরাজ্যের নির্বাচন সম্পর্কে মন্তব্য না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েও বরিস জনসনের পক্ষে কথা বলেন। তিনি কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে আক্রমণ করেন। ন্যাটো যখন পূর্বেকার সোভিয়েত ইউনিয়নকে ৭০ বছর ধরে মোকাবেলার পর নতুন করে রুশ-চীন দ্বৈতশক্তির মোকাবেলায় নতুন করে শক্তি সঞ্চয়ের প্রয়োজন অনুভব করছে, ঠিক তখনই ন্যাটোর এই দ্বৈধতা আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক মহলের কাছে অনাকাক্সিক্ষত মনে হয়েছে। ন্যাটো জোটের আমলারা অবশ্য তাদের নীতিগত কর্মসূচির ব্যাপারে পিছিয়ে নেই। বর্তমানে সাইবার ও বিকৃত তথ্যের হুমকি থেকে ন্যাটোকে বাঁচাতে কৌশল নির্ধারণে দাফতরিক কাজ অব্যাহত রয়েছে।

উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থা বা নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গাজানাইজেশন ‘ন্যাটো’ নামে সমধিক পরিচিত। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পরবর্তীকালে ১৯৪৯ সালে এর জন্ম। এর উদ্দেশ্য ছিল ক্রমবর্ধমান শক্তির অধিকারী সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত ইউনিয়ন পূর্ব ইউরোপ ঘিরে যে সম্প্রসারণবাদী নীতি গ্রহণ করেছে তার মোকাবেলা করা। এমনিতেই পশ্চিম ইউরোপের পুঁজিবাদী বিশ^ অভ্যন্তরীণ সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের ভয়ে তটস্থ ছিল। অপর দিকে সীমান্তের কাছেই পরাক্রমশালী সোভিয়েত ইউনিয়নের ক্রমবর্ধমান সামরিক শক্তি তাদের রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের ধ্বংস ও বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই তারা আরেক যুদ্ধের ভয়ে আত্মরক্ষার উপায় খুঁজছিল।

ইউরোপের তখন শোচনীয় অবস্থা। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ অস্তায়মান। ফরাসি সাম্রাজ্য বিপর্যস্ত। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে একচ্ছত্র নেতৃত্ব ও বিপুল সম্পদের অধিকারী হওয়ার কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রধান পুঁজিবাদী রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। যুদ্ধ আমেরিকায় তেমন কোনো আঘাত হানেনি। এক দিকে আটলান্টিক, অপর দিকে প্যাসিফিক মহাসাগর আমেরিকার জন্য নিরাপদ দূরত্ব নিশ্চিত করেছে। তাই যুদ্ধের পরপরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার বিপুল সম্পদ ও সমৃদ্ধি নিয়ে ইউরোপ পুনর্গঠনে এগিয়ে আসে। পুঁজিবাদ তথা সাম্রাজ্যবাদী একক নেতৃত্বের দায়ও তার ওপর বর্তায়। ১৯৪৭ সালে কংগ্রেসের যৌথ সভায় তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রুমেন ইউরোপ পুনর্গঠন ও সমাজতান্ত্রিক আধিপত্য থেকে গণতান্ত্রিক বিশ^কে রক্ষার স্ব-আরোপিত দায়-দায়িত্বের কথা ঘোষণা করেন। এটি ‘ট্রুমেন ডকট্রিন’ নামে খ্যাতি অর্জন করে। একই বছর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জর্জ সি মার্শাল ইউরোপ পুনর্গঠনে ২৯ বিলিয়ন ডলারের অর্থ পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। এটি ‘মার্শাল প্লান’ নামে পরিচিত। এ দু’টি ঘোষণাকে ন্যাটো গঠনের পটভূমি বলে বিবেচনা করা হয়।

প্রাথমিকভাবে ১৯৪৮ সালে ব্রিটেন, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস এবং লুক্সেমবার্গকে নিয়ে সামরিক জোট গঠিত হয়। এটি ব্রাসেলস ট্রিটি নামে খ্যাতি অর্জন করে। ১৯৪৯ সালে এই জোট সম্মিলিতভাবে ‘বার্লিন ব্লকেড’ সঙ্কট মোকাবেলা করে। পরবর্তীকালে এই জোটে শামিল হয় কানাডা, ইতালি, ডেনমার্ক, আইসল্যান্ড, নরওয়ে ও পর্তুগাল। ১৯৫২ সালে তুরস্ক ও গ্রিস এই জোটে যোগদান করে। ১৯৫৫ সালে ফেডারেল রিপাবলিক অব জার্মানি বা পশ্চিম জার্মানি অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৮২ সালে স্পেন যোগদান করে। ১৯৪৫-১৯৮৯ সাল এই দীর্ঘ স্নায়ুযুদ্ধকালে ন্যাটো জোট সোভিয়েত নেতৃত্বে পূর্ব ইউরোপে গঠিত ওয়ারশ জোটের মোকাবেলা করে।

উল্লেখ্য, ন্যাটো জোটের মোকাবেলায় ১৯৫৫ সালে ওয়ারশ জোট গঠিত হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে সোভিয়েত ইউনিয়ন ওয়ারশ জোট বা পৃথিবীর অন্যত্র সম্পাদিত এ ধরনের জোট গঠন বা চুক্তিকে সামরিক বলতে বরাবর অস্বীকৃতি জানিয়েছে। সব সময় তারা একে বলেছে, ‘শান্তি, মৈত্রী ও সহযোগিতা চুক্তি’। এই চুক্তি বলে সোভিয়েত ইউনিয়ন পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোর ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দেশে সেনা পাঠিয়েছে। সে আরেক কাহিনী। যা হোক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফলভাবেই সোভিয়েত ভীতিকে পুঁজি করতে সক্ষম হয়। ১৯৮৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ওয়ারশ প্যাক্ট এমনিতেই অকার্যকর হয়ে পড়ে। ১৯৯১ সালে ওয়ারশ প্যাক্টের আনুষ্ঠানিক অবলুপ্তি ঘোষণা করা হয়। পরাশক্তি হিসেবে সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের পর ন্যাটো জোটের প্রয়োজনীয়তা কমে যায়।

অনেকেই ভেবেছিলেন, ন্যাটো জোটের স্বাভাবিক মৃত্যু ঘটবে। কিন্তু পরবর্তীকালে রুশ ফেডারেশন এবং সার্বিয়ার কার্যকলাপ অনেক দেশ ও রাষ্ট্রকে ভীত করে তোলে। শুরু হয় ন্যাটো জোটের দ্বিতীয় অধ্যায়। ১৯৯৯ সালে পোল্যান্ড, চেক প্রজাতন্ত্র এবং হাঙ্গেরি রীতিমতো দেনদরবার করে ন্যাটো জোটে নাম লেখায়। ২০০৪ সালে আরো সাতটি সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন অন্তর্ভুক্ত দেশ- বুলগেরিয়া, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, লিথুনিয়া, রোমানিয়া, স্লোভাকিয়া ও স্লোভেনিয়া ন্যাটো জোটের নিরাপত্তার ছায়ায় চলে আসে।

এভাবে ১২টি পশ্চিম ইউরোপীয় দেশ নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও সমগ্র ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকা নিয়ে এখন এর সদস্য সংখ্যা ২৯। পরিবর্তিত বিশ্ব বাস্তবতায় নতুন করে ন্যাটোর প্রয়োজনীয়তা আবার অনুভূত হচ্ছে। বিশেষ করে পুতিনের আধিপত্যবাদী ভূমিকা- ক্রিমিয়া দখল, ইউক্রেনকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা ও পুরনো সোভিয়েতভুক্ত দেশগুলোকে নানা কায়দায় ও কারসাজিতে নতুন করে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা পাশের দেশগুলোর জন্য ভীতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুতিনের সিরিয়া অভিযান আরেকটি নগ্ন হস্তক্ষেপের উদাহরণ। তা ছাড়া, সমগ্র পৃথিবীতে পরাশক্তির পরিবর্তে আঞ্চলিক শক্তির অভ্যুদয় আরেকটি নতুন ক্ষেত্র বা সমীকরণ সৃষ্টি করেছে। ইউরোপের মতাদর্শগত বিভক্তি সত্ত্বেও একক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় তাদের প্রচেষ্টা ও কৌশলগত অবস্থান ক্রমেই স্পষ্টতর হচ্ছে। এমনকি তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাধান্য বা অনুগ্রহ থেকে ভিন্নতর অবস্থান নিশ্চিত করতে চাইছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর মন্তব্যে তা প্রমাণিত হলো।

এই সম্মেলনে আলোচ্য বিষয় ছিল কিভাবে রুশ আক্রমণ প্রতিহত করা যায়, হামলা হলে সদস্য দেশগুলো একে অপরকে সাহায্য করতে পারে, কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ভূমিকা সব কিছু অনিশ্চিত করে দেয়। নির্বাচন পর্ব থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ন্যাটোর অনুকূলে ট্রাম্পের মন্তব্য নেই। অথচ এখন ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে মোকাবেলা করার জন্য তিনি এখন ন্যাটোর পক্ষে জোর বক্তব্য দিচ্ছেন। সেও আরেক নাটকীয়তা। লন্ডন সম্মেলনের পূর্বাহ্ণে দেয়া বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, ন্যাটো মহান উদ্দেশ্য নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। তিনি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টকে অভিযুক্ত করে বলেন, তার বক্তব্য ‘খুবই অসম্মানজনক’। ফ্রান্সকে জোট থেকে বাদ দেয়া উচিত- এমন ইঙ্গিত করে ট্রাম্প বলেন, এটা সত্যিই খুব জঘন্য মন্তব্য। ট্রাম্প তাদেরকে পছন্দ করেন না, তাদের ব্যাপারে বিষয়টি ‘ব্যক্তিগত নাকি রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ’ তার তোয়াক্কা করেন না। ফ্রান্সের ব্যাপারে তিনি বলেন, দেশটি অর্থনৈতিকভাবে ভালো নেই। এ রকম অবস্থায় এ রকম শিষ্টাচারহীন মন্তব্য করা কঠিন।

ম্যাক্রোঁকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘ন্যাটোর মতো জোটের সদস্য হিসেবে আপনি এ মন্তব্য করতে পারেন না। ন্যাটোতে কাউকে আর ফ্রান্সের প্রয়োজন নেই।’ ন্যাটো বর্তমানে এর আরেক গুরুত্বপূর্ণ সদস্য তুরস্ককে নিয়েও সমস্যায় পড়েছে। সম্মেলন শুরুর আগে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান বলেন, কুর্দিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তুরস্ককে সমর্থন না করলে তার দেশ বাল্টিক অঞ্চলের দেশগুলোর প্রতিরক্ষার বিষয়ে ন্যাটোর পরিকল্পনাকে সমর্থন করবে না। তবে বাল্টিক দেশগুলোর নিরাপত্তা বিষয়ে ন্যাটো মহাসিচব স্টোলটেন বার্গ বলেছেন, পোল্যান্ড ও বাল্টিক দেশগুলোয় রাশিয়া হামলা চালালে কঠোর জবাব দেবে ন্যাটো। ন্যাটোর সেনা উপস্থিতির মাধ্যমে সেটা করা হবে।

তবে এসব বিরোধের মধ্যেও ঐক্য ধরে রাখার জোর চেষ্টা আছে। ঐক্যের সুরে বড় কথা বলছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তিনি সম্ভবত ব্রেক্সিটের মাধ্যমে ইউরোপ থেকে ব্রিটেনের ভবিষ্যৎ বিচ্ছিন্নতা কমাতে চাইছেন। তিনি বলেন, ইউরো-আটলান্টিক অঞ্চলের কোটি কোটি মানুষের নিরাপত্তার বিষয়টিকে সবার আগে প্রাধান্য দিয়ে জোটের অংশীদাররা যেন সব বিভাজন ভুল যান। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁও অবশেষে ঐক্যের সুরে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘ন্যাটো সামরিক জোটের আওতায় থেকেই ইউরোপের সদস্য রাষ্ট্রগুলো ন্যাটোতে বৃহত্তর ভূমিকা পালন করতে পারে।’ আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মন্তব্য ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে যাই বলুন না কেন, কার্যত ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যের স্বার্থে’ ইউরোপের সাথে এক ও অভিন্ন ভূমিকা পালন করবেন। কারণ মার্কিন সামরিক করপোরেট সামরিক শিল্প স্বার্থের বিরোধিতা তার অস্তিত্বের জন্য হুমকি স্বরূপ। মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির মূলশক্তি শুধু আমলাতন্ত্রেই নিহিত নয়, বরং পেন্টাগনের স্বার্থ-সুবিধাই মুখ্য। সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই জোট হয়তো মরবে না। কিন্তু এই জোটকে প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ, নতুন শত্রু, নতুন অস্ত্র ও নতুন বৈশি^ক সমীকরণকে মোকাবেলা করতে হবে।

লেখক : অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
Mal55ju@yahoo.com


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us